লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, October 5, 2021

শঙ্খজিৎ দে, শারদীয়া সংখ্যা

শঙ্খজিৎ দে-র গুচ্ছ কবিতা

 

উদ্বায়ী জ্যোৎস্না এবং গাঢ়লিপি

১.

শিশিরের ভিতর এত শব্দ

অথচ হাত ছেয়ে গেছে-মৈথুনের অভ্যেস।

মৃত কবিতার পিণ্ডদানের মন্ত্র

নির্জনে অন্ধকারে খেলা করছে হয়তো...

 

আমি তাকে দেখেছি,

বৃষ্টিতে কুঞ্চিত গা

হিরণ্যগর্ভ মেঘের সামনে

বিস্তৃত হাত

চোখ থেকে নানা রঙের ইঙ্গিত

বজ্রের মতো ধাক্কা দিচ্ছে ক্রমাগত

 

এক পাতা কবিতা নামাতে পারিনি

বলে

সেদিন তাকিয়ে ছিলাম কার্ণিশে ঝুলে থাকা তারতার দিকে।

 

ভেজা জানালার সামনে

খাতা ভর্তি মেলে ধরেছে নগ্নদেহ

কর্পদকশূন্য পাথুরে শরীর থেকে

উষ্ণপ্রস্রবণের স্রোত...

 

এতদিন জানতাম না,

আজ অব্ধি লেখা প্রতিটি কবিতাই

আসলে রক্তমাংসের নারীদেহ!

 

২.

নদীর দুপার থেকে বিস্ফোরণরত শব্দের আওয়াজ আসছে।

এই যুদ্ধের রক্ত-সাফল্য-অজস্র অপত্য বীজের

নিঃশব্দ মৃত্যু!

গুহামানবের শরীরজাত প্রবৃত্তি,

এখনও জিভ বার করে

নারীদেহ খাচ্ছে...

 

৩.

পুঁজি, একটা পুরানো হিংসাত্মক শব্দ।

মানুষের বদলে যা উদ্বায়ী ফসিলের চাষ করে

এসেছে এতকাল।

মেরুভাল্লুকের মতো নখওয়ালা একদল মানুষ,

মানুষের মাংস পুড়িয়ে রোস্ট করে খায়।

পুঁজি, একটা মাংসাসী রেস্টুরেন্ট...

 

৪.

যৌনতা, সবুজ একটি আখর

যার ভিতর দিয়ে অসময়ের ফল্গু

ক্লান্তিহীন গতিতে

বুকের পাথর কে ঠেলে

মাটি করে।

 

৫.

কয়েকটি ভিত্তিহীন গুজব ছাড়া

কবিতা লেখার মতো সমাজব্যবস্থা নেই।

কবিতা, সুইসাইডের মতো ধারালো আফিম...

 

৬.

আত্মহত্যা, পুরানো একটি অজুহাত

মাংসাসী পিঁপড়ের মতো যার আয়ুরেখা,

সূর্যগোধূলিতে মগ্ন হয়ে যায় একা একা।

 

৭.

ক্রীতদাস জীবনের মতো বড় পঙ্গুত্ব

সভ্যতায় কোথাও নেই

অথর্ব শরীরের

গুচ্ছ গুচ্ছ কষ বীজ

অশ্বক্ষুরাকৃতি যোনি ভেদ করে।

 

৮.

যাও বিবর্ণ শোক যাও,

নির্বিবাদে গন্ধরাজ চাষ করো

ক্ষত চৈতন্যের গায়ে, বীর্যঘন জ্যোৎস্নায়...

No comments:

Post a Comment