লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, September 29, 2020

অনিন্দ্য রায় অষ্টম সংখ্যা

অনিন্দ্য রায়-এর কবিতা

 পুরাণভূম

 

জল আর বসন্তের গ্রহ

শৃগাল সম্রাট আর ধোপাদের নীলের গামলাকে রাষ্ট্র বলা হয়

 

পতাকার জন্য যিনি নিজের চামড়া উৎসর্গ করেছেন

তিনি সন্ত নেউল


প্যাঁচার চোখ না-জ্বেলে বিবাহের মন্ত্র পড়তে কাছিম পারে না


জল আর বসন্তের গ্রহ

এখানে বেড়াতে এসে আমরা হাড়াম-বুড়ি  

                        দু-লক্ষ বছর রয়ে গেছি 

 

কুয়াশার এগারোটি নদী, ওপাশে আগুন, মধ্যে শূন্যের গর্ত

আদিপ্রাণ আর একটি গাই ক্রমাগত বরফ চাটছে

 

জমাট শৈত্য থেকে ক্রমে চুল, মাথা; ক্রমে সম্পূর্ণ শরীর 

বিবাহ, সন্তান

 

শুধু হত্যা নিয়ে পরিকল্পনা সফল করা যায়   

এবং হত্যাও হয়

 

ঠাকুর্দার মাংস ছাড়া ব্রহ্মাণ্ডের মাটি তবে বানানো যেত না  

দাঁত আর হাড়ের পাহাড়, ঘাম-রক্তের সিন্ধু

 

আমরা যে আকাশ দেখি— করোটির ভেতরের দিক    

আর ছেঁড়া-ছেঁড়া মেঘ— ঘিলুর টুকরো

                         চিন্তায় ঘুরপাক খায়   

 

প্রথম হাসির থেকে তৈরি হল আলো

দ্বিতীয় হাসির থেকে জল

পৃথিবী পরের হাসিতে

তারপর ভাগ্য

বিচার

সময়

 

শেষবার হাসলেন তিনি

কেমন করে যে কান্না হয়ে গেল

আর তা থেকে জন্ম নিল

আত্মা

 

মাটি অশক্ত আর ভঙ্গুর

বৃষ্টিতে গলে যায়

 

কাঠের বুদ্ধি নেই

মুখে সুখ-দুঃখের কোনও ভাঁজও পড়ে না   

 

নতুন কিছু খুঁজতে চারদিকের দরজা খুলে গেল 

 

বনবেড়াল, নেকড়ে, টিয়া আর কাক 

      এসে সন্ধান দিল আশ্চর্য ফসলের 

 যব

তার গুঁড়ো দিয়ে শরীর

তার গুঁড়ো দিয়ে খাবার

 

তার গুঁড়ো দিয়ে

শুরু হল দানাশস্যের সভ্যতা

 

আদিস্তম্ভ। ঘিরে উলটোমুখে ঘুরতে ঘুরতে     

দেখা হল

 

: “কী সুন্দর তুমি, হে পুরুষ

 তোমাকে দেখে বুঝি অসম্পূর্ণ আমার শরীর!”   

 

: “নারী, তুমি কী সুন্দর

 আমার শরীরে আছে অতিরিক্ত কিছু!” 

 

:: “এসো, ঘাটতি ও বেশি মিলিয়ে আমরা সমান হই”

 

অথচ সন্তান হাড়গোড়হীন, সমুদ্রে ভেসে যায়

কোথাও জাগে না দ্বীপ

 

ভুল কোথায় তাহলে? 

 

কথা-বলার অধিকারও প্রথমে পুরুষের!

3 comments:

  1. ৩ আর ৫ ভোলবার না।

    অন্যগুলির আড়ালে অনেক গল্প আছে, গল্প মানে রেফারেন্স আমার সেভাবে জানা নেই।

    ReplyDelete
  2. খুব সুন্দর কাজ।বাংলা সাহিত্যে এরকম কাজ গুরুত্বপূর্ণ

    ReplyDelete
  3. দারুণ কবিতাগুলি। ২ এবং ৩ পড়ে মুগ্ধ হলাম।

    ReplyDelete