লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Monday, September 28, 2020

সৌমাল্য গরাই অষ্টম সংখ্যা

সৌমাল্য গরাই-এর কবিতা

 

পত্রকথা

 

একটা চিঠির জন্য আমাকে হারিয়ে যেতে হয়। যে অক্ষর বন্দি থাকে তাকে ঘরে পৌঁছে দিই। অক্ষরগুলো নাম পায়, এমন একটা নাম যে নামে অনেকেই আছে কোথাও না কোথাও। প্রকৃত নামেরা হারায় অথচ তাহাদের সর্বনাম এক। কী করে তাদের দিই নামা-বলি? এর চেয়ে থাক সেসব চিঠিরা নিজের মতন।


মুছে যাক নাম দিয়ে লিখে রাখা চিঠিদের ঘর। মনে মনে বলি
উহাদের ঠিকানা হউক কেবল স্পন্দন...

 

চিঠিদেরও মন থাকে। একলা দুপুরে

তাদের হারাতে ইচ্ছে করে। স্কুলফেরত চিঠিটির দেখা করতে ইচ্ছে হয়, কোকিলপুরের কিশোরীর সাথে। কোনও কোনও চিঠির তাঁতিহারের মেঘ হতে ভালো লাগে, আকাশের বৃষ্টিটিকিট ঝেঁপে ভাবে নৌকা ভাসাবে ঘন দুরযোগে।

শস্যের যৌবন হবে ভাবে যে চিঠি সে প্রকান্ড একটা মাঠের শরীর  বুকে ধরে সম্পূর্ণ গ্রামের ঠিকানা হতে চায়। কোনও চিঠি ভাবে বাঁশি হয়ে ভুল সুরে বাজবে, যাতে তার রাধা কখনো দুঃখ না পায়। মধুকূপী ঘাসে ফুল হয়ে ফুটবে, এমন চিঠিরা অপেক্ষা করে কিন্তু কে তাকে পৌঁছে দেবে এমন ঠিকানায়? পিনকোড জানে না কেউ।

কোনও কোনও চিঠি থাকে তারা অর্ডিনারি। তাদের কিছুই হতে ইচ্ছে করে না। হয়তো কিছু না হওয়াটাই তাদের একমাত্র ইচ্ছে। অন্ধকার মর্মরের স্তূপ হয়ে তারা ক্লান্ত ও বিষণ্ণ হবার স্বপ্ন দ্যাখে  

যে চিঠি নিরুদ্দেশে যায়— তারা সব কোথায় ওড়ে। বায়ুবাহিত ঝরাপাতা তারাও তো গাছেদের চিঠি, কুড়িয়ে রেখেছ, তাকে কেউ? দিয়েছে ঠিকানা পৌঁছাবার?

 

মৃতদের ঠিকানায় চিঠি আসে। চন্দ্রাভিমানে বসে থাকে তারা। চাঁদের গন্ধকে গায়ে চন্দনের মতো লেপে। অপেক্ষা করে চিঠির জন্য। জ্যোৎস্না পাঠিয়ে বলে-'এইখানে দাও'। আমাদের কাছে জ্যোৎস্নামূলক কোনও ডাকটিকিট নেই। এই অক্ষমতা নিয়ে চিঠি পাঠাব কীভাবে?

2 comments: