লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, January 25, 2022

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়ের দুটি কবিতা

 

১. কেন্দুকলাই

 

দেবদাসী ভেবে যার নূপুররটনা করে লোকে,

তার সত্য জানা প্রাণ জগৎ মাতৃকা ভেবে কাঁদে।

নদ ব্রহ্মপুত্র বেয়ে বয়ে যাওয়া কোটি পরমাদে

কেবল নারীটি ধ্রুবপূজার্চনাশোকেবীতশোকে

 

জাগরূক। কামাখ্যার মল বাজে ঘোরা মধ্যযামে।

মন্দিরে চিন্ময়ী নৃত্য। সংসার মায়াবী বোধ হয়।

মৃত খোকা বুকে নিয়ে যে-রমণী কান্নায়প্রণামে

পেয়েছে সন্তান ফিরেতার ভাগ্যে দেবী বরাভয়

 

ছুঁয়ে দিয়ে হাসিমুখে লীন হয়ে গেছে চিদাকাশে।

দেবদাসী ভ্রমে যার মধুনৃত্য রটনায় ওড়ে,

তাকে যে প্রকৃত জানেতার সিদ্ধি যায় কালান্তরে।

তাকেই রচনা রোজগর্ভকক্ষে দিগম্বরী হাসে।

 

অথচ রাজার চক্ষুকৌতূহলীগূঢ় দৃশ্য দেখে

ধ্বংস আনে। ভগবতী পুত্রখাগীঅক্ষমা তামসী।

চিন্ময়ী নর্তনদৃশ্যে কামার্ত পুরুষ রন্ধ্রে রেখে

পাপাতুর মাথা ছিন্ন। রক্ত চাটে কালান্তক অসি।

 

মেনেছি যথার্থ শাস্তি। শিরশ্ছেদে ত্রাণ পেল দেহ।

হত্যাকারিণীর কোলে সসম্ভ্রমেশোয় কাটা মাথা;

বীভৎসা কোমল হবে। সে-ই খুনিসে-ই পরিত্রাতা।

পুত্র-লয় পার করে নেমে আসে গাঢ় পুত্র-স্নেহ।

 

কামাখ্যা-কৃপায় ধৌত জগতে দেবীমাহাত্ম্য এঁকে

আকুল নৈবেদ্যঝরে কেন্দুকলাইয়ের চোখ থেকে...

 

 

২. ইড

 

যেন একটি বাবা এসে ফল কেটে নিয়ে যাবে, ও মা তোকে ভালবাসি যদি...

স্টেপমম পর্নে কিন্তু আলতা দেখানো হয় না; দেখালে কী হত?

এই যে আমরা বিষমবাহু ত্রিভুজে কী সুন্দর এঁটে আছি,

ক্রমশ কত কৌতুক ছিটকে গেল।

 

স্বপ্নের ভেতর, ও মা, রাজকীয় পথ দ্যাখ; দোর খুলে অচেতন ডাকে।

প্লেজা়র, প্লেজা়র... কত ছবি হল, গান হল। তারপর চোখ

জেগে যায়।

 

সামান্যই ঘা ছিল, চেপে রেখে এত বড়, ইদানীং মাথা খেতে আসে।

 

ঘুমের কুয়োয় কত খুন, বমি, রতি, জল। শিশুকাল ডাঙায় অতল...

তবুও ভক্তির জন্ম। বালিঘড়ি ঘুরে গেল। পিতাপ্রেমে পাশাপাশি শুই।

 

আমার খোকাটি আজ কুয়োর তলায় গেছে...

সারারাত কচি গলা শুনি

 

যেন একটি বাবা এসে ফল কেটে নিয়ে যাবে, ও মা তোকে ভালবাসি যদি...

1 comment: