শতানীক রায়-এর গুচ্ছ কবিতা
আজব গল্পকথা
১
আজব সে দেশ: বনের দানো ঘুরছে ধারে কাছে,
মীনকুমারী গাছের ডালে দেখবে বসে আছে।
—আলেকজান্ডার পুশকিন
সেই যে দেখেছি নগরী। মানুষ মানুষীর খেলা। ঘরবাড়ি।
আর স্বচ্ছ নদী। আজ— আমিই সেই দেশ থেকে
উঠে আসা শরীর। আমি কল্পনা করতে পারি না। স্বয়ং কল্পনাগাছই আমাকে কল্পনা করে। সেই
যে কল্পতরু গাছটি তারই নীচে আমি বসেছি কতদিন। এভাবে যখন জেনেছি নদীতর আরও গভীর
আছে। মানুষ বেঁচে থাকে আরও কোথাও। শরীরহীন। অথচ সেই নদী দেখা। গিরিখাতে না তাকিয়ে
গিরিখাত জেনে যাওয়া। এও একরকম কল্পনা। কল্পনাও একরকম আমি।
২
তুমি। অন্য কোথাও থেকে আস্তে করে চলে আসতে পারো
এখানে। তোমার বদলে এতদিন একটি নদী কেবল বড়ো হয়েছে। আমি ভেবেছি নদী জীবন পায়
স্পর্শে। আর স্পর্শের পর স্পর্শে মানুষের ভেতর গড়ে ওঠে জীবন। কোথাও এই প্রবেশ করা।
মুছে যাওয়া। ঘুমের সঙ্গে তোমার অদলবদল। অথবা তোমার বদলে সেই যে নদী এরও নাম হয়তো
কল্পনা।
৩
সেই যোগাযোগ দিয়ে নিপুণ করতে পারো এই জীবন? আস্তে আস্তে দৃশ্যে এসে পড়া জীবনও স্বাভাবিক মেপে নেয়।
যেভাবে শিশু আর মা। আদানপ্রদানের শৃঙ্খল। গাছ থেকে বেরিয়ে যাওয়াও তো সবকিছু।
তোমারই ভেতর রক্ষা করো প্রভু। যেদিন চাঁদ উঠবে আকাশে সমুদ্র বইয়ে অন্যখাতে। জলের
পাশে বনস্পতি হবে। কোথাও খুব নিবিড় ছায়া হবে। অথবা এই যোগাযোগ আর নিপুণ শব্দ নিয়ে
কেউই আর সেভাবে কাজ করবে না হয়তো। তুমি ভুলে যেতে পারো আমার নদী সমুদ্র গাছের
শৃঙ্খলা। সব রেখে তুমি আমি এক অদ্ভুত কৌশলে যাই সূর্যের দেশে।
৪
যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল...
"কোন সে দেশের কোন সাগরের পারে
সবুজ বরণ কল্পতরু, সোনার শিকল তাতে।"
যেখানে যেমন ফুরিয়ে আসি। তারপর নৌকা ছাড়ে বহুদূর
দুটো নদীর মিলন দেখে ফিরি। এই নদীর ইতিহাস। এই সংগম। অনেক হওয়ার বোধ। অনেক মানুষের
ভেতর কীভাবে যে একত্র।
আর... আমাদের এখানে অনেক অনেক বছর আগে সরু একটি নদী ছিল। আমার শিশুবেলা কেটেছে তার বাঁকে বাঁকে...
৫
দিন হল। সব বর্ণনা শস্য হবে। তুমি কথা বলবে এসো।
শরীরের যে-সব স্থানে এখনও ছিটেফোঁটা সত্য লুকিয়ে আছে। আর এভাবেই কবিতা থেকে
অনেকদূরে... যেখানে অজস্র পানকৌড়ি ঝাঁকের তির সাজিয়ে ওড়ে। সেখানে সকাল কাটে গল্পের
ছলে। সেই ভূমিতে আজও 'বলাই' নামের বালকের গল্প কথিত হয়... গাছ বড়ো হয়...
অসাধারণ লেখা
ReplyDeleteভীষণ সুন্দর
ReplyDelete