বিশ্বজিৎ দাস-এর কবিতা
মাঠপুকুরের
কাটামুণ্ডুরহস্য
১.
স্বীকার
করেছে ওরা, চারজন ছিল
শিকারের পদ্ধতিও ছিল ব্যতিক্রমী
জুয়ার আসরে
বসে ঠিক হত প্ল্যান
ঘোরের ভিতরে
এইসব করে,
হাসত
হেসেই চোখের কোণে শেয়ালের লোল
একদিন
এভাবেই আসে ফাঁকা ঘরে
একা পূর্ণিমার ঘুমের শরীরে হাত
মুখ চেপে
ঝাঁপিয়ে পড়েছে একজন
সে রাতে যোনিতে হায়নার থাবা আর
রক্তের
সূত্রেই পড়ে ধরা বাপি ডন!
২.
পাড়ার ভিতরে
তার ত্রাসের আকাশ
কসাইয়ের
মতো পুষেছে পিশাচ খুন
তিনসঙ্গী আরও ভয়ঙ্কর, ধর্ষণের
পরে, ওরা মাংস কেটে ছড়িয়েছে
ভাটার পুকুরে
তারপর আবার
মদের আসর।
হঠাৎ হাওয়া!
যে বস্তায়
পুরে কাটামাথা ফেলেছিল
জলে, তার খোঁজ মেলে পচা'কে ধরার পরে
৩.
তিনমাস
লুকিয়ে বাড়িতে ফেরা হলে
পাগলের ছদ্মবেশে গোয়েন্দা অমিয়
মাঠপুকুরের
আশেপাশে ঘুরে জানে
পচা বাড়ি ফিরেছে গভীর রাতে
আর,
শোর্ডের
উপরে শুয়ে আছে আশঙ্কায়
এই ধরা পড়ে!
পুলিশের জালে সত্যি
জড়িয়ে পড়েছে, তার
একঘন্টা ঘুম
ভেঙে দিল;
হাত ও পা
৪.
পচার
সূত্রেই রবি।
বাপির
দ্বিতীয় অস্তিত্বের চাবিকাঠি
হাতকাটা রবির অবশ্য
টাকাপয়সার
দিকেই লোভ ছিল বেশি
উপরি
মহিলাদের পেলে আর কোনো
দাবী নেই, বাপির কথামতোই তার
পিস্তল
চালাতে পারদর্শী। আঘাতের
ছুরিটিও যে, সে চালিয়েছে
এমন প্রমাণ
মিলেছে হাতের ছাপে
৫.
অথচ পচার
বাড়ি শোর্ড, রবি ছুরি
বাপির বাড়িতে কিছু নেই!
আর ভিকি?
ভাটার গুদাম
থেকে তাকে বের করে
থার্ডডিগ্রি
দিলে বাধ্য হয় বলতে, খুন
তারা চারজনই করেছে। খুনের পর
নিজেদের ওই
পোশাক গুদামে রাখে
পোশাকে
রক্তের দাগ চিনিয়েছে ডন
এবার জেরার
পালা,
আর খেলা শেষ!
৬.
ক্ষমতার
কাছে মানুষ ঘুমালে তার
অবশিষ্ট
থাকে না। এই যে আকাশের
দিকে চেয়ে
চেয়ে এখন স্নায়ুর শোক
আদতে খুনির ছাপ রাখে চোখেমুখে
বাপিসহ
তিনজন সেই পথে হাঁটে
মাঠপুকুরের
পাড়ায় ওরাও ডাকে
বাঘের গর্জন। মদ মাংস আর জুয়া
সঙ্গে
লুটপাট তোলাবাজি চলে
এসব কখন যেন
তাদের ভোলায়
ক্ষমতার কাছাকাছি চাঁদ ডুবে যায়...
৭.
কী ভীষণ
আর্তনাদ
স্বামীহারা মহিলার এবং শরীর
কুঁকড়ে
যাওয়া ভয়, ছাড়েনি তাকেই ওরা
লালসার
দাঁতে তখন পরম গন্ধ
গন্তব্য
হারিয়ে তাকে প্রথমে শোয়ায়
সেও চিৎকার
করে,
নখের চেষ্টায়
পারেনি আটকাতে; শুধু ব্যর্থ প্রতিরোধ
তখনই
শোর্ডের কোপ। এক কোপে ধড়
মাথা থেকে
বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তারপর
মাথাহীন শরীরে ধর্ষণ নারকীয়...
৮.
জল্লাদের
মতো শরীরের অংশগুলি
পিস পিস করে
কেটে বস্তায় ভরেই
ভাটার পুকুরে ফেলে। মাথাটি আলাদা
বিলের জমিতে
পুঁতে রেখে উধাও যে!
ভাটার অফিসে
থাকা ছোট্ট গুদামের
ভিতরে
রেখেছে রক্তমাখা সব জামা
এবং পরিকল্পনা মতো সব হাওয়া
বাপি ডন
খোঁজ রাখে, পাড়ার ছেলেরা
ভেঙেছে
তাদের ঠেক। উন্মত্ত জনতা
দেখে পুলিশের কোনো উপস্থিতি নেই
৯.
জেরার এসেছে
উঠে এইসব তথ্য
পূর্ণিমা, বিধবা পুত্রহারা সদ্যশোক
আধমরা করে রেখেছিল তাঁকে, ওই
তাঁর
পাঁচকাটা জমির দিকেই ঝোঁক
বাপির লোভের
মুখে ওরা তিনজন
আগুনে ঘিয়ের
মতো উস্কানি দিয়েছে
সেইমতো বাপি
ছক কষে
মদ-জুয়া হয়ে আসে
পূর্ণিমার বাড়ি।
গোপনে ঘরের মধ্যে
ঢুকে তাক
করে ধরার,
মাছের গায়ে
যেমন বর্শার
কোপ তেমনই জাপটেই
শরীরের শাড়িসহ ছিঁড়ে ফেলে তাঁর
কোঁকানো কান্নার শব্দ হারায় উল্লাসে...
১০.
বাড়ি
হাতানোর লোভ ছিল বলে ওরা
প্রথম থেকেই
ভাবে খুন করা হবে
মস্তিষ্কের
কাছে জেনেছে উপায় এর
জুয়ার আসরে
ওরা মতলব আঁটে
গোয়েন্দা
অমিয় জানে কী করে এসব
বার করতে হয়, পোশাকের রক্ত দিয়ে
নমুনা
পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে
কী হবে এবার?
স্বীকারোক্তির
ভিতরে কেঁদে ওঠে
পুলিশভ্যান
ওদের তুলে নিয়ে যায়
কাটামুণ্ডু
স্বপ্নে হাসে, ঘামের কপালে...
অসাধারণ👍
ReplyDeleteঅনেক ধন্যবাদ আপনাকে
Deleteভালো লাগলো
ReplyDeleteভালোলাগা দিদি
Deleteভালো লাগল, বিশ্বজিৎ
ReplyDeleteপ্রাপ্তি
Deleteভালো লাগল দাদা
ReplyDeleteভালোবাসা নিয়ো
Delete