লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Saturday, October 17, 2020

নাসিম বুলবুল, দশম সংখ্যা

নাসিম বুলবুল-এর কবিতা


আত্মদ্রোহ ও কৃষ্ণকলি সংবেদন

 

৪.

কৃষ্ণকলি আদ্যন্তই একটা অপার রহস্য

গোপন আবর্তনে তার সবকিছু পড়ে ফেললে

একটা তত্ত্বাবধায়ক আবরক বাঁক টেনে টেনে

সচরাচর অনবহিত রহস্যে পরম্পরা মুছে নিয়ে যায়...

 

নিঃশ্বাসটুকু কেবল আশ্রয় হয়ে

অথবা আশ্রয়টুকুকেই একমাত্র ভেতর বার বলে

গল্পের ছলের মতো দয়িত ইঙ্গিত দেয়

 

আমরা এই মধ্যবর্তী সংবাদকে স্থির বলে ধরি

নিঃশ্বাসটুকুকেই আপাত আশ্রয় বলে বাঁচি...

 

৫.

নশ্বর থেকে হারিয়ে যাওয়া বহিত লাশের মতো

জলভারে আর্তনাদকে বলা হয় অনেক সহজ

অথচ যারা মাটিতে মিশতে না পেরে

কফিন কিংবা মমিতে আটকে যাচ্ছে

 

তাদেরকে কি বলবে?

শান্তিতে কবরে থাকো বলতে পারবে?

 

মরার পরও নির্দেশ মতো মধ্যস্থতাকারী আসে

কেবল অল্প সংখ্যকই পারে ইল্লিয়নে যেতে

বাকিরা লহুতে মিশে নেয় অনন্ত আগুন!

 

৬.

মায়াবী ছায়ার পরাদৃশ্যের কাছে আমরা

চিরকাল গ্যাট হয়ে পড়ে থাকতে ভালোবাসি,

ভ্রষ্ট ভুলে একটু ছায়া পেতে চাইব্যস্ এটুকু'

 

বিষাদ এসে যদি কাঠঠোকরার মতো

ভিতরটুকু খেতে চেয়ে তীক্ষ্ম ঠোকরও দেয়,

জানব বিষাদদেরও নিজস্ব স্বরলিপি থাকে

 

খেই না হারালেঅবিরত সংকেত পেতে থাকি...

 

৭.

মুহূর্ত সুখে নক্ষত্রমণ্ডলী জলছবি আঁকে

কৃষ্ণকলি যখন আসার অপেক্ষায় থেকে থেকে

বেখেয়ালে আপন মনে হেসে ওঠে,

আমি তুমি পাতলা বাঁকা চাঁদ হতে চেয়ে

মায়াজন্মের লনে দাঁড়িয়ে থাকি

 

উদাসীন হাসি নিয়ে

অসুন্দর অলসদুপুর বিচারের কাছে বসে থাকি

 

চাঁদ কতটা জল টানে, মাপব বলে!

 

৮.

রাষ্ট্রীয় ডাকে অযথা প্রেম ঢেউ খেলে যায়

আর ঠোঁট আওড়ে মিউমিউ করে উঠি

 

একটা গভীর ঘুম যেমন

পড়শি রাত্রিকে ঢেকে দিতে পারে না,

ঠিক একই শূন্যতায় দীর্ঘ আলাপও বোঝা যায় না,

 

আমরা সে লিপিবদ্ধ জীবনকে

দৃষ্টান্তের রহস্যের স্তরে স্তরে

ভাবী মহাকালের আয়না দেখিয়ে চলি...

 

অতল সুরের কাছে ভাগ্যলিপিরা দৃশ্যতই দিশেহারা!

 

৯.

আত্মদ্রোহ আসলে ধূর্ত শিয়ালের মতোই

বুদ্ধির তারিফে তাকে মানতেই হয়

গ্রন্থি গ্রন্থি জুড়ে যে রশ্মি মহাশূন্য গড়ে

সে মায়াবী জলসা পুরোপুরিই রহস্যময়।

 

হতে পারে এ ইশকের আগুন ভুল

তবুও ভুলে গেলে চলে না

অন্ধকারের ব্যথা কিন্তু অন্ধজনই জানে।

 

১০.

কৃষ্ণকলিকে গভীর রাতে দেখতে চেয়ে

সময়ে অসময়ে অতীতকাতর মন কেঁদে ওঠে,

নিবিড় অন্ধকারের ভিতর থেকে যে

প্রতিবার একাক্ষরে বেঁচে ফেরা যায় না,

হাজার হলেও তা মন মানতে চায় না।

 

আলোর ভিতর যে অন্ধকার জীবন বন্দি হয়

তাকে কিন্তু মৃত্যু স্পর্শ করে না,

 

তাতে শুধু আকাঙ্ক্ষার বিষ ঢেলে দেয়।

 

১১.

ধমনীর নীচে শুয়ে থাকে ইচ্ছেসুখেরা

তাদের দুটো মুখ

একটা গোপন এবং নিশ্চল

অন্যটা খোলামেলা কিন্তু পরিস্থিতি বিচক্ষণ

 

কলবের খাঁচা থেকে পাখি উড়ে গেলে

হাজার হোক বা অযুত হোক

সে কিন্তু আর ঘরে ফিরে আসে না!

No comments:

Post a Comment