সীতা হেমব্রমের কবিতা
বল্লরী সেন
কৃষ্ণা রজকিনী
পাতাঝরা
বাতাস কাঁকই
দুপুর
তাতানো এই হাঁড়ি, ভীমদহ পেরোলে দেবদাসী
দু’বেণীতে ঝালর লাগানো, ওলাবিবির থানে একদিন
লম্বাপাড়
নোয়ান ফেলেছি কত। যতবার বুকের মাঝখান
দিয়ে গেছে
ছুঁচের
ডগার চোখে নাবাল পূর্ণিমা, জোয়ান মরদ রইবে এক। অক্ষত
যতক্ষণ
অনন্তনাগ, ততক্ষণ দোলাই চেপে আছি ঘুম গায়ে
বুঝে
নিই কামড় পেতে রাখা এই টইটুপুর ষড়যন্ত্র নাভি, ধ্বস নামে
যতবার
অম্বুরি তামাক ফিরে আসে, ব্যামো সেরে আবার গজাবে এই
মাত্লা শরীর, হ্যাজাকের মন্ত্র পড়া ছায়ার গেরাস
প্রতিদিন
স্বরবর্ণে হাত রাখি
ভুলে
যাই পুরুষাঙ্গ কিলবিলে কাপড়ে চোপড়ে
বিকেল
পালিয়ে আসি পুরনো তহবিল, জানুকবলিত সুখ
উল্টে
নিই সোঁদা গন্ধ, পাখসাট, ঘামচুর
ধুয়ে
ধুয়ে তুলে ফেলি বাবুদের চামড়ার অসমাপ্তরেখা
পান্তা
লগনতুক
কাপাস বনের গোসা হয়েছে বলে আজ অরন্ধন। এখন গন্তব্য খতম
করে আমি ও সেই মেয়েটি ভুট্টার বাগানে নেমেছি। ওর কাঁধের হাড় ঠিক ঘুড়ির লাটাইয়ে টান মেরে বাপের সাদা পাতের
স্মৃতি ফেরাবেই, অস্তরুটির মতো তেকোণা খামচ-লাগা ওর কপালের পাশ, গালের হনু। আর ঠা ঠা কপালে ফাটা বরাতের দাগ, শেষবর্ষার
পর যেন লালচে গ্রহ দেখা দিচ্ছে অমলতাসের রোমশ কুণ্ডলীর চরায়। আজ দু মাস হল, ভাতারবাড়ি তুক্করেছে সতীন। সতীনপো-এর
চোখ নেচে উঠছে ইতিউতি বাতায়,
চিলতে
কার্তিকের রোদ্দুরে ঠাকুর গড়ছে ঝালুক নদীর তেচোকা মেয়েরা।
আটকুঁড়ির
গর্ভ হোক্, গৃহস্থের খোকা।
বুড়ি
তার সুতো কাটে আর বলে, “পানসি রঙের পাতে
কাটুম
কুটুম রোজ আসুক তাথে”।
পাড়
বোনা কাপড়ের গায়ে আমার মায়ের হস্তলিপি
একটু
করে কুঁদে তুলেছে চামড়ার এক গজ খুঁচিয়ে
—
বাবুরা দেখল, জ্যান্ত লাশগুলোর কতটা মেয়ে
আর
কতটা চিৎকার, মরে মরে ও বেঁচে আছে কিনা
লাল মিয়া ও হাওরের গল্প
লাল
ফুলের ঝুরি নামছে জলের দিকে তাকিয়ে
দহের
হিজল গাছের বাকল তেমনি খরা
আখখুটে
হাওরের মেঘ নেমেছে কাজিয়ায়
সুর্মা
চুঁইয়ে নামছে পপি বাগানের ক্রোধ
বিটিয়ার
বে দিয়েছো
খবর
করবে নি? হ্রদের পারে টিয়ার মুখে
সংবাদ
পাঠাও, বোলো আব্বাজানের বুকে পাথর
চড়কসংহিতায়
পাকোয়ান
পিঠা হলে মনে করবে তাকে
সেই
কালো পিচুটি মেয়ে, কোথায় নেয়ে উঠল
আজ?
লাল মিয়া হিজল গুঁড়ির গায়ে চোখ মুছে
বাকি
অশ্রু গোস্তের পুরে লুকিয়ে নেন
সারস
আর ডাহুকের ছায়ায় ভুল হয়
কাশের
বনে ঐ বুঝি উমা এল, ধবল গাইয়ের
দুধ
পলা করে তুলে রাখেন, গোসল করেন না
অসাধারণ সব কবিতা দিদি শ্রদ্ধা রইল
ReplyDeleteধন্যবাদ
Deleteভালো লাগা
ReplyDelete