অন্তর চক্রবর্তী’র গুচ্ছকবিতা
নির্বাণ
৬.
ভূতপূর্ব যা যা পথ, অকাতর ইষ্টজগতের
সমাহিত অবশেষে সবিস্তার নিগূঢ় ঐহিক
বিনাশ? না আয়ুমূল? ছদ্মরবে
কৌতূহলরাশি
পরমে আকুতি সঁপো, সঁপো, সূক্ষ্ম অনুভা-তালাশ
বারংবার বাত্যাবিঘ্নে ইতস্তত সাধনসমাধা
কৈবল্যমুখর তবু সুজঙ্গম জিগীষামহিম
পান্থশ্রমে দ্যাখো ইহ, নিরঙ্কুশ
মহাজাগতিক
৭.
মুহুর্মুহু স্মৃতিচিহ্নে দীর্ঘতর হল ক্ষতদাগ
অন্তর, জাগাও দ্রোহ, ভাস্করের
শিরা-উপশিরা
খোদাই-প্রকৃতি গুণে সমুজ্জ্বল ধমনীজোয়ার
স্পন্দনে নিপুণ ঢালো অনিমিখ রাহীকুশলতা
নীবরের স্ব-আঘাতে চিরঞ্জীব অসীমাবয়ব
বিশদ স্ফূরণজোড়া মৌসুমীর পরতে পরতে
সরল নিশ্চিহ্ন হল সমগ্র জখমস্মারক
৮.
উৎফুল্ল নিদ্রালোক জেগে আছে তুষারশয়ানে
সন্তাপের প্রাত্যহিকে অকপট মায়াব্যতিক্রম
প্রেয়সী তিতিরচোখ, রাখি মৃদু ক্ষুধা-অনুরোধ
দুর্জ্ঞেয় নিঝুম চিরে ঝাপটাও কৃশানু-উড়াল
দাহপর্ব সমাপনে মেলে যেন কণ্ঠমাত্র দেহে
স্নায়ুর ক্ষরণজলে রাঙা রাঙা বাল্য অস্থিফুল
নিদ্রাভোজে সমারূঢ় ঊষানাভি, ওমে ফেরা
শীত
৯.
অবসাদে বাঁধাধরা পরিত্যক্ত নোঙর-মানস
দেখেছি ধ্বংসের কোণে, বেলাশেষে
স্বভাবী ছায়ায়
সেও তো চেয়েছে আজ মহোত্তম জাহাজী প্রত্যয়
কবেকার অপঘাতে শুয়ে আছে স্তব্ধজল পোত
ফেরাও ভোঁ-এর শ্বাস অনাবিল, আজন্মের ভোর,
সুপ্রখর অর্চিদণ্ডে, দাও এই
মহার্ণব সেঁচে
নোঙরের ওষ্ঠাধরে শ্বেতস্পর্ধা পালোমা-আভাষ
১০.
দ্যাখা যায় ওই দূরে, নাস্তিকের
শ্রান্ত পাদুকারা
কাঙাল আবেশে লিখি মনোযোগী ভাবানুসরণ
সদ্যোজাত মক্শখানি জড়দ্গব ঊষর পেরোয়
উপল-কাঁটায় বিঁধে, লিপিবদ্ধ ভ্রমের অধিক
আয়াসী আঙুল বেয়ে আচম্বিতে মৃদু করজোড়
আদিগন্ত প্রপঞ্চের ক্ষুরধার বজ্রসমাহারে
নাস্তিকের পাদুকায়, নেমে আসে ঈশ্বরের ভূম