অরিত্র দ্বিবেদীর কবিতা
উৎসর্গ: তোমায়
তোমায় দেখি অরন্ধন দিনে
কেমন পথে একলা চিনে চিনে
এগিয়ে গিয়ে চলো!
তোমায় দেখি নীলচে রঙে নেয়ে
বেড়াও ঘুরে, ঘুরে বেড়াও মেয়ে
আস্তে কথা বলো!
তোমায় দেখি বিষণ্ণতা গাঁয়
পৃথিবী ঘুরে অবোধ জোছনায়
জ্বেলেছ দুটি কুপি
তোমায় দেখে লিখতে গিয়ে থামি
অপদেবীর মানত করে আমি
চাঁড়াল হাতে সঁপি
লাইটহাউসের দিনগুলি ১
যেটুকু ভূপতিত মন, দূরের ভেলায় চেপে
ধ্রুপদী লঘুপক্ষে লম্বিত করেছে যাতায়াত
তাকে বহনের জ্বালা তুলে দিয়েছি দু'হাত
একী অসম্ভব সামান্যে ভালবেসেছি প্রতিদিন
মান্যে-অমান্যে আর একবার ডাক দিয়েছি,
'হে দুখ, হে স্মৃতিভার, কিশোরবেলার যত মাঠ'
রন্ধ্রহীন বাসরে, অখণ্ড, অনন্ত
পাথরে পাথরে, চোখগুলি রাঙা, অচিন্ত্য
জলের করুণে দেখেছি তাদেরই কথা, 'চুপ'
শুনেছি, যেসব
মায়েরা ছেলেদের কথা ভেবে
এখনও বসে আছে চৌকাঠে! রাতভর—
গুটোনো ল্যাজে একলা কুকুর, শুনিয়েছে
যিশুর জন্মকথা, নিবিষ্টে তাদের কানে কানে
তারা, হেসেছে
বা কেঁদেছে লম্বিত যাতায়াতে
লাইট হাউসের দিনগুলি ২
স্পর্ধিত বিশ্রামে চেতনাহত পৃথিবী
মৃত্যুর কথা বলে।
বলে সেইসব যুবতীর কথা যাদের বাড়ির
চৌকাঠে রক্ত,
লক্ষ্যভ্রষ্ট পৃথিবী প্রেমের কথা বলে
যবুতীরা শোনে,
তাদের স্তনে ফোটে পদ্ম ডাঁটির নিবিড়,
তাদের ঘুমে ঘুমে—
জেগে ওঠে রাত! আর শীৎকারে শোনা যায়
কবন্ধ সুরের হাতছানি রব!
প্রবেশ, তোমাদের
ছাড়িয়ে সেসব উড়ে যাবে
গোপন কোনো গুহায়,
যে গুহার আঁধারে জেগে উঠবে ভালবাসা;
সে আশায়, বসে থাক্
বসে থাক্ যত 'আমি' আমার, মূর্তমণ্ডিত
এ খণ্ডচিত্রে
জেগে থাকুক অভিশাপ আমার, জেগে থাকুক—
এ পৃথিবী! স্পর্ধিত বিশ্রামে হোক শুশ্রুষা!
যুবতীদের কমলাঙ্গে জন্ম নিল' নতুন সৌরভ
প্রার্থনা লেগে শান্ত হল' প্রতিপদ
নৈরাশে মিহি হয়ে এল রৌদ্র, আজীবনের!
লাইটহাউসের দিনগুলি ৩
মায়ের সমান ভূপতিত মাটি
বাবার সমান হলুদ নদীর ধারে
গাছ বসাবো যেমন তেমন
সকাল খোঁজ নিতে আসবে জানি
তুমি এলে, কথা হবে, বুঝি...
অথচ সময়? সে যে ফুরিয়ে এলো বলে
বসতে বলবে না পীড়িতে?
অসংখ্য ফাঁকা চালাঘরে
ডেকে তুলবে না একদিন আমায়?
তোমার সমান মেঘের দরবারি
প্রেমের সমান ঘৃণার উপরোধে
কাল অনেকক্ষণ কথা বলেছি তোমায় নিয়ে
দাঁতের জটিলে কাটোনি তো জিভ!
এদিকে এলে তুমি জানিয়ো ছাইপাঁশ
রাতের বৃষ্টি, ভুল করেছি আমি,
শুধরে নেব ফুলে, সময় পেলে।
No comments:
Post a Comment