লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Saturday, January 11, 2025

ছাব্বির আহম্মেদে'র কবিতা, ছায়ারোদ নতুন সংখ্যা

ছাব্বির আহম্মেদে'র কবিতা

 

রাত্রিবাসে ডুবে গেছে মোহিনী চারুকলা


একটা নীরব আকাশ

যেখানে সারিসারি চোখের মাইল ফলক

আর হাজারো নক্ষত্রের রাত্রিবাসে

ডুবে গেছে মোহিনী চারুকলা

 

বহ্নিশিক্ষার আঁচল ছুঁয়ে আছে সময়ের বালুচরে

বুকের ভিতর গেয়ে ওঠে সমুদ্রের তলার নিস্তব্ধতা

এক অস্থায়ী মরীচিকার আত্মাকে সঙ্গে নিয়ে

সূর্যের ডানার ভিতর ঝুলিয়ে রাখছিলাম আমার আর্তনাদ

 

সুদূর মৃত্যুপুরীর পথ

যেদিক দিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত পৃথিবীর পরিচয় লাগে

আর খোলা আকাশের চিঠি

তবুও দেখতে দেখতে পার হতে পারি ঐতিহাসিক ঘড়ির কাটা

যার শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা নদীর সাঁকোর মতো রাজসভা

 

জীবন পারাপারের ব্যস্ততায়

সন্ধ্যার মুখের প্রলেপ যেন খসে পড়ছে

নৌকার দাঁড়ের আঘাতে কতগুলো জোনাকি উঠে আসছে

আর আমি ডুবে যাচ্ছি জীবনের অন্তিম নদীতে

 



অপরিপক্ক ঠোঁটের অস্থিমজ্জা

 

ঘুণ ধরা বাঁশের মতো পলাশের ঔদ্ধত্যও হারিয়েছে

পৃথিবীর বর্ণালীতে যত আলো ছিল

সবগুলোই এক এক করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে

তোমার গায়ের ফুলদানির গৌরবময় আঁচলে

 

শিশিরের চুপ থাকার কারণে সজাগ দৃষ্টি দিয়ে

আমি ফিরে পেয়েছি হিমাদ্রির সকাল

যেখানে উন্মাদ সহিষ্ণুতা দিয়ে আপন খেয়ালে চলে যাবো

মৃদু বাসন্তীর মরীচিকায়

 

কোকিলের সুরে এক চিলতে রোদ্দুর ছেঁকে নিয়ে

ঘুরিয়ে দিয়েছি তোমার বসন্তের ছায়াবৃত্ত

আর দিল-দরদিয়া মায়ায় চোখের কাজলে ধুয়েছি

তোমার কপোল গড়া অশ্রু

 

আকাশের কালসর্পের নিথর অপেক্ষায়

আমার অপরিপক্ক এক কোনায় ভাতের মাড়ের মতো চাপটে লেগে থাকে

তোমার ঠোঁটের অস্থিমজ্জা

আর আবছা নদীর বালুচরে বসে হাতের ছোঁয়ায়

গড়ে তুলি সেই খোঁপার পাহাড়

 

 

অঘ্রানী পেয়ালার ঠোঁট

 

তুমি হয়তো বলবে জীবনের প্রতিটা মুহুর্তই পোয়াবারো,

কিন্তু একটা অগোছালো মানুষকে গুছিয়ে রাখতে না পারলে,

তার দায় প্রলেপ দেওয়া হৃদয়ের কার্নিশ নেয় না

তবে এই যে ঘটা করে বিভর হয়ে থাকা দরদিয়া সম্বোধন

তোমার কাছ থেকেই শিখেছি প্রিয়

 

কেনো এমন হয় বলতে পারো?

আকাশের ফুটফুটে বুকে

সাদা বকের আলতা মাখা পা'গুলো সাঁতার কাটে

যদিও বা সেখানে কোনো নদী নেই,

শুধুমাত্র দুটো মখমল জান্নাতী সহজিয়া ঠোঁটের অপুষ্টতা জমে আছে,

আর তাতেই তোমার আঁচলের বৈকুন্ঠে কিঞ্চিৎ বেবাগী রঙ লাগে

 

সমস্ত টানাপোড়নে তটিনীর স্থবিরতা,

গোধুলি বেলায় তোমার হাতের ছোঁয়ায় ঝিমিয়ে পড়লে

একটা একটা করে স্বপ্নের ঘাটে সাজিয়ে রেখেছি

কাঠ পোড়ানোর মতো বিপরীত মেরুর বেনিয়মের শরীর

 

ভোরের বাসি কাপড়ের মতো যত অবহেলিত দিন ছিল

সেখানে আমার মধ্যবিত্ত সংসারে ক্লান্ত কোকিল বড়োই অসহায়

আর তোমার নানান ইঙ্গিতের শরীর সহ্য করে

কড়াই-এর মতো সন্ধ্যার নিষ্ঠুর অত্যাচার

কিন্তু তুমি দুচোখ চন্দ্রমল্লিকায় ভরে দিয়েছিলে

গেয়েছিলে প্রদীপের কলতানী সুর

 

মনপিঞ্জরের ঝরে যাওয়া কদম যেমন করে দিনলিপি আঁকে,

যেমন করে খড় বিছানো সভাস্থলে রাত্রি বাসর হয়

ঠিক তেমন করে তুমি আমার অঘ্রানী পেয়ালার হাতল ধরে

জীবনের স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছো, যার কোনো গন্তব্য নেই

No comments:

Post a Comment