লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, October 5, 2021

শুভ্রনীল চক্রবর্তী, শারদীয়া সংখ্যা

শুভ্রনীল চক্রবর্তী'র কবিতা

অসম্পূর্ণ চিঠি

 

যদি বলি প্রেম একা কেড়ে নাও

অগ্নিকুন্ড গর্ভে বিলীন আঁচল

একাকী সত্যান্বেষী গাছেদের তেজ

অরণ্য যজ্ঞ সম্পৃক্ত সজল

 

যদি বলি রাগ একা গেয়ে যাও

স্বরদের আবাসনে নিত্য নৈমিত্তিক

মরুদের ভিড়ে শান্ত সলিল

তৃষ্ণার চোঁখে ভাসে মরীচিকা আংশিক

 

যদি বলি কবিতা ঘাসে লিখে যাও

শিশিরের পতনে মুগ্ধতার বাস

অমোঘ আত্মার ফেরারী অসুখ

কলমের ডগায় থাক বিষণ্ণ চাষ

 

তারাদের নাভী জুড়ে বলে দেওয়া থাক, থাক

প্রেমিকের অসম্পূর্ণ চিঠি

ছায়াপথ জুড়ে রোজ গর্ভের বিকাশ

ক্যানভাস জুড়ে হাঁটে সাম্যের মাটি

অভিজিৎ দাসকর্মকার, শারদীয়া সংখ্যা

অভিজিৎ দাসকর্মকার-এর দুটি কবিতা

 

বৃষ্টি এলেবনস্পতি হাওয়া

 

নির্বাক ভবিষ্যতের ভেতরে দেখো

তোমার সচল যাতায়াত

 

আজকাল বৃষ্টি এলে

তুমি হাসোআমি

বয়ে চলি শ্বাসনালী দিয়েআর

 

জানালা খুলে আসে বনস্পতি হাওয়া

 

যখন উপাস্য মেঘলা আলোয়

চুল এলিয়ে পড়ে

 

রেলিং-এ লেগে থাকে

মেঘমল্লার, আর

মনের উচাটনে নক্ষত্রটির

নাম

বর্ণ এবং

আবছা গন্ধতখনই

 

ভাসমান অন্ধকার ছাড়িয়ে আসে

বংশীখণ্ড...

 

বৃষ্টিস্নাত পা-যুগল

 

তোমার মনের ভিতর একটি

পাখি উড়ে গেলে

রাত ক্রমশ ভোর হয়

 

তুমি পটদীপ দ্বারে

কোমরে সাপটা জড়াও

 

সীতাহার দোলে

কানপাশা ধরে নামে গোধূলি, আর

আমার মনের অবলীলা

 

তুমি বৃষ্টিস্নাত যদি হোতে

যদি ভিজিয়ে নিতে নিজের পা-যুগল

 

আমি আলিঙ্গন করতামতোমার

কোটিতে ভাঁজ হয়ে বসতাম

গান্ধর্ব ধ্যানে,আর

 

বিকেল পেরিয়ে পুনর্বসু আসতো

মল্লভুম পথে

শঙ্খজিৎ দে, শারদীয়া সংখ্যা

শঙ্খজিৎ দে-র গুচ্ছ কবিতা

 

উদ্বায়ী জ্যোৎস্না এবং গাঢ়লিপি

১.

শিশিরের ভিতর এত শব্দ

অথচ হাত ছেয়ে গেছে-মৈথুনের অভ্যেস।

মৃত কবিতার পিণ্ডদানের মন্ত্র

নির্জনে অন্ধকারে খেলা করছে হয়তো...

 

আমি তাকে দেখেছি,

বৃষ্টিতে কুঞ্চিত গা

হিরণ্যগর্ভ মেঘের সামনে

বিস্তৃত হাত

চোখ থেকে নানা রঙের ইঙ্গিত

বজ্রের মতো ধাক্কা দিচ্ছে ক্রমাগত

 

এক পাতা কবিতা নামাতে পারিনি

বলে

সেদিন তাকিয়ে ছিলাম কার্ণিশে ঝুলে থাকা তারতার দিকে।

 

ভেজা জানালার সামনে

খাতা ভর্তি মেলে ধরেছে নগ্নদেহ

কর্পদকশূন্য পাথুরে শরীর থেকে

উষ্ণপ্রস্রবণের স্রোত...

 

এতদিন জানতাম না,

আজ অব্ধি লেখা প্রতিটি কবিতাই

আসলে রক্তমাংসের নারীদেহ!

 

২.

নদীর দুপার থেকে বিস্ফোরণরত শব্দের আওয়াজ আসছে।

এই যুদ্ধের রক্ত-সাফল্য-অজস্র অপত্য বীজের

নিঃশব্দ মৃত্যু!

গুহামানবের শরীরজাত প্রবৃত্তি,

এখনও জিভ বার করে

নারীদেহ খাচ্ছে...

 

৩.

পুঁজি, একটা পুরানো হিংসাত্মক শব্দ।

মানুষের বদলে যা উদ্বায়ী ফসিলের চাষ করে

এসেছে এতকাল।

মেরুভাল্লুকের মতো নখওয়ালা একদল মানুষ,

মানুষের মাংস পুড়িয়ে রোস্ট করে খায়।

পুঁজি, একটা মাংসাসী রেস্টুরেন্ট...

 

৪.

যৌনতা, সবুজ একটি আখর

যার ভিতর দিয়ে অসময়ের ফল্গু

ক্লান্তিহীন গতিতে

বুকের পাথর কে ঠেলে

মাটি করে।

 

৫.

কয়েকটি ভিত্তিহীন গুজব ছাড়া

কবিতা লেখার মতো সমাজব্যবস্থা নেই।

কবিতা, সুইসাইডের মতো ধারালো আফিম...

 

৬.

আত্মহত্যা, পুরানো একটি অজুহাত

মাংসাসী পিঁপড়ের মতো যার আয়ুরেখা,

সূর্যগোধূলিতে মগ্ন হয়ে যায় একা একা।

 

৭.

ক্রীতদাস জীবনের মতো বড় পঙ্গুত্ব

সভ্যতায় কোথাও নেই

অথর্ব শরীরের

গুচ্ছ গুচ্ছ কষ বীজ

অশ্বক্ষুরাকৃতি যোনি ভেদ করে।

 

৮.

যাও বিবর্ণ শোক যাও,

নির্বিবাদে গন্ধরাজ চাষ করো

ক্ষত চৈতন্যের গায়ে, বীর্যঘন জ্যোৎস্নায়...

নিমাই জানা, শারদীয়া সংখ্যা

নিমাই জানা-র কবিতা

 

কনজুগেটেড প্রজাপতি অথবা শুক্রাচার্য পাঠ

 

মৃত্যুর প্রমাণ কালের দৈর্ঘ্য হাফ কোসাইন কোঅর্ডিনেট

 

ভ্যাম্পায়ার উঠছে ঠিক মাথার ৩.১৪ বর্গইঞ্চি উপর দিয়ে

এখন আমি কোনো যুদ্ধের পোশাক অথবা বর্ম পরিনি

অদ্ভুত মায়ান্ধকারের কনজুগেটেড প্রজাপতি 

গভীর রাতের পুরুষের হাতে তুলে দেয় আইসোলেটেড পলিসিসটিক ওভারি

 

আমার মুখে দানা দানা নুনের চিহ্ন সৈন্ধব সম্পর্ক, সন্ধ্যাকাল

গভীর রাত্রিকালে নিজের রাখা বিষের পাত্রকে ছুঁয়ে দেখি 

অমৃত স্বাদের গোলাপি ছায়াময় বৃন্ত দুইখানিকে

প্রতিটি মানুষের নীলরঙের ওষুধ খেয়ে বিছানায় যাওয়া উচিত

একটি ভয় সমগ্র কতকগুলো ছত্রাক তৈরি করতে পারে

বিষময় ফল ত্রিভুজ আকারের ধারাপাত পড়ছে

 

সব ভঙ্গুরতার পাললিক দেহবর্ম ও পাখির পোশাক 

ক্রমশ হালকা হয়ে আছে অ্যালভিওলাই মধ্যাহ্নকালীন শ্বাসকষ্টে

পাশের বালিশে মরুভূমির জলশূন্য রাত

আমাদের সূর্যের কাছে গিয়ে অনতি চিহ্নের জন্য ভিক্ষা চাওয়া উচিত

 

৮০ লক্ষ যোনি অতিক্রমের পর ঘর্মাক্ত দেহের 

জিএনএম নার্সেরা অবচেতন মনে বেরিয়ে আসে 

তরল পানীয় থেকে আমাদের সকলের আঙুলে জটিল সংক্রমণের দ্বিস্তম্ভ রেখাচিত্র

 

আমরা শুক্রাচার্যের কাছে ওভিউলেশন থিওরি পড়ছি

আসলে, মধ্য প্রহরের বৃষ্টির স্থানাঙ্ক জ্যামিতি উপবৃত্তাকার

পার্থ সারথি চক্রবর্তী, শারদীয়া সংখ্যা

পার্থ সারথি চক্রবর্তী-র মুক্তগদ্য

 

এক অদম্য নদীর গল্প

 

বুকের ভেতরে যে নদী বয়ে যায়, তা কী কেবল ঢেউ তোলে? কখনো স্তিমিত হয়ে আসে কোন এক রাগাশ্রয়ী বিকেলের শেষে? পথে পথে যে বিপন্নতা ছড়িয়ে আছে, তা ক্রমশ বিষন্নতা ছেয়ে দিতে থাকে। নদীপথ যতই রুক্ষ্ম হোক না কেন, গন্তব্যে পৌছে যাবার স্বপ্ন অটুট থাকে চোখের কোটরে। দুর্বল সাঁকোর অনুভূতি জীবনের ক্যানভাসে আঁকা হতে থাকে। আপাতসুখের আশায় বুক বাঁধা ফেরিওয়ালার ঝোলা উপচে পড়ে। রামধনু রং চুপিসারে ইশারায় ডেকে নেয় এক বধ্যভূমিতে। চিতার মতো ক্ষীপ্রতা তো চাইনি, শুধু চেয়ে যাই চলতে। আপেক্ষিকতার সব শর্ত ও সূত্র অতিক্রম করে এক উদ্দাম যৌনতা যেন!

              অপার্থিব রোদেলা আলোর ছটায় চিত্রিত হতে থাকে অদম্য চলার পথ...

ছাব্বির আহম্মেদ, শারদীয়া সংখ্যা

ছাব্বির আহম্মেদ-এর কবিতা

আর একটি নিস্তব্ধতার পাহাড়

 

আমাদের ঘরের মতো কিছু পাহাড়

হাটছিল আগে আগে

আর ভোর থেকেই গুহার নীরবতাকে অনুসরণ করছিলাম আমরা

মাথার উপর ছিল মহামারীর আকাশ

 

কতগুলো ব্যাকুল সিঁড়ি ভেসে আসছিল সেই মেঘের তলা থেকে

কার্নিশের উপরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম যুবতীর  সন্ধ্যাকে

 

প্রদীপের গাছে আমার ভ্রু আটকে পড়তেই

মহাবিশ্বের হাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে ভয়ার্ত কতগুলো হাত

 

মানুষের আর্তনাদের ঢেউ ওঠে গ্রামের প্রান্তে

সঙ্গে আর একটি নিস্তব্ধতার পাহাড়

রিয়া চন্দ্র, শারদীয়া সংখ্যা

রিয়া চন্দ্র-র গুচ্ছকবিতা


অনভিপ্রেত


যাপনের সব রন্ধ্রপথে এখন আর চাঁদ থাকে না

বিপন্ন কালো দাগের আততায়ী জ্যোৎস্না 

পৃথিবীময় লেগে থাকে, রাত বদল হতে পারে

তাই যেকোনো অছিলায় প্রায়শই অপ্রতিহত ঘুমে

কতিপয় রূপকথারা তার সাম্রাজ্য সাজায় 

আর অন্ধকারে আহত শরের তীর্যক দৃশ্যে 

নীড় প্রত্যাশী তাঁবুর নীরবতা থেকে ঘূর্ণায়মান

হাওয়ার মতো বিষাদ অক্ষরেরা উঠে আসে

 

মাঠ বন নদী পেরিয়ে বহুদূরে হঠাৎ যেন 

দুলে ওঠে রাজকুমারীর স্বপ্নের পালঙ্ক

ঘোরতর স্বপ্নভঙ্গে তখন ঢেউয়ের প্রমাদ 

গুনতে গুনতে দেখি, দারুণ বৃষ্টিপাতে সর্বাঙ্গ

ঢাকতে চালকবিহীন পদাতিক কেমন করে

বেখেয়ালে নেমে যায় গুহার স্থবিরতার দিকে

 

 

আদিস্রোত

 

জলের ভেতরে আগুন, কতটা গভীর ছিল

প্রান্তিক ডুবুরি তার খোঁজ রাখেনি

স্রোতের কাছাকাছি তন্ময় চন্দ্রালোকে

ঢেউয়ের গান শুনিয়ে যায় আদিমানবেরা

 

আজ শুধু পাতাদের কান্না লেগে রঙিন ডানায়

অথচ তার কোনো দাগ নেই, অপার ডাক নিয়ে

আমি যে ঘরে নেই, রক্ত ও মাংস সাজিয়ে

এ কাকে আহ্বান করছ নিজের ভ্রমর-শরীরে?

 

ডুবছি, ভাসছিও, এভাবেই শূন্যতা লুকিয়ে 

একদিন চলে যাব আমি, কেবল বাহুমূলে

নিবিড়তা শেকড় ছড়িয়েছে যতটুকু, ততটুকুই

পাতার রূপোলী শরীর গোপন দৃশ্যে রেখে যাবে

 

মধ্যরাতের শহর থেকে

 

রাস্তার একপাশে অর্ধমৃত রাতের ভয়াল থাবায়

ধুঁকছে নিঃসঙ্গ ল্যাম্পপোস্ট, আভার নিষেধাজ্ঞা

পেরোতে দু'হাতে ছাড়িয়েছে পতনোন্মুখ

পিপাসার জল, প্রকৃত লিপ্সার দিকচক্রবাল

ঠোঁট নড়ে উঠছে ভাঙা জিপের, নৈশ কোতোয়াল 

তুমি নির্জনতায় ভরে দাও ঘোরলাগা আলো

মধ্যরাতে গলিখুঁজি হয়ে পোড়ো বরফ-সংকেত

বারবার ফিরে যায় সৃষ্টি স্থিতি লয়ের ভেতর

এই স্মৃতিময় রাত জানে সমূহ সম্ভাবনা থেকে

দূরে মানুষের কাছে হরিণীর মতো চোখ তুলে 

সে থেকে যাবে তর্জনীর প্রণয়ে, একা স্পর্ধাহীন

 

 

তৃষ্ণার ভেতর সহজ অঙ্কও জটিল হয়ে যায়

এমন অনতিক্রম্য দীর্ঘ বৃষ্টিপাত, সর্বাঙ্গ স্খলনে

নিয়মের কাটাছেঁড়া শরীর তীরের ফলার মতো

এক গোলার্ধ থেকে অন্য গোলার্ধে ছুটে যায়

কোনো দৃশ্য নেই, প্লাবনের খেয়ালে জলের চঞ্চল

শব্দ রেখে যাচ্ছে আত্মসমাহিত মায়াপাশ

ফুটপাতের নির্জনতা ও ভ্রমররঙিন প্রতিটি

অক্ষরের কৃশ-শরীর দেখে ব্রিজের ওপর রাস্তা

কেমন ভিজে যায়! রাতের নিবিষ্টতা পেরোলে

অর্ধেক ঘুমের আড়ালে পল্লবিত হয়ে ওঠে

কামজলময় অন্তর্দহন, নৈঃশব্দ্যের অঙ্গুলি হেলনে

 

অনুরাগ

 

জন্মান্ধ মেয়েটির চোখের গভীর থেকে 

সাঁতারের চিহ্ন মুছে দিচ্ছে বিষাদী 

কিশোর নদের নষ্ট পাড়

নির্বিকার উপত্যকায় এমনই সঙ্গীহীন 

জলজ হাওয়াদের নিত্য আসা-যাওয়া

এখন বৃষ্টির উঠোন তো তার কেউ নয় 

 

মরমী নদীর কোমল ঠোঁটের মুখোমুখি এসে

দাঁড়িয়েছে শুকনো পাতার প্রণয় প্রস্তাব

এখানে পদ্মপাতায় সঙ্গোপনে 

সেতারের কথা লিখে রাখেন মাটির ঈশ্বর

 

চাঁদেলা নর্তকী

 

স্থবিরতা চেয়ে পাথুরে জমির ওপর স্খলিত

নৈঃশব্দ্যে শিস দিয়ে ওঠে বিচ্ছিন্নতা, যেন মন্ত্রমুগ্ধ

প্রহেলিকা জলের দৃশ্যপটে প্রবাস সেরে তাপাঙ্কে

রেখে গেল অসংখ্য সুতোর মতো জড়ানো জাল

বাগান ভরে উঠেছে শয়তানি জ্যোৎস্নায়

বহুদিন এরকম চন্দ্রাহত রাতে স্নান করেনি 

কোনো প্রেতাত্মা, তার কিছুটা আভাস ছড়িয়েছে

আলো ও অদম্যতার মৃত্যুভয়াতুর হলুদ পোশাক

 

আজ অন্তর্ধান প্রয়োজন, জল-পতনের শব্দে

খুলে যাচ্ছে জোনাকিদের উচ্ছিষ্ট বসন

মগ্নতার আদিম আলোয় পাহারায় বসে শীতের

ওম, অসময়ে হঠাৎ সন্ধ্যে নেমে এলে পাহাড়তলীর

চোরা খাত হয়ে ভাষাহীন ক্ষতের হাঁ মুখে সম্মোহিত

লুটিয়ে পড়ে চাঁদের একজোড়া অবারিত ঘুঙুর

অর্ঘ্য দীপ, শারদীয়া সংখ্যা

অর্ঘ্য দীপ-এর দুটি কবিতা

 

দেখা

 

সবাই বলে, পৃথিবীটা নাকি খুব সুন্দর।

আমি যেরকম ভাবি, তার থেকে অনেক বেশি

সুন্দর এই পৃথিবী...

 

আমারই দেখার চোখ ছিল না হয়তো,

তাই দেখা হয়নি।

 

দেখা হয়নি সমুদ্র

দেখা হয়নি পাহাড়

দেখা হয়নি দূর বরফের দেশে

হলুদ মেপল পাতা

বিষণ্ণ বাতাসে পাক খেতে খেতে

ঝরে যায় অবিরাম

 

একা, একা, আরও একা হয়ে

কত দীর্ঘ পথ আমি হেঁটে গেছি মানুষের ভিড়ে

হয়নি দেখা বন্ধুর মতো কারও সাথে কতকাল!

 

নতজানু হয়ে বসে

প্রেমিকের জীবন চেয়েছি

প্রতিটি প্রার্থনায়

 

অথচ দেখিনি প্রেমিকার মুখ কোনওদিন...

তাতেও কোনও দুঃখ নেই আমার।

 

ভুল প্রেমে

ক্রমশ অন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে,

 

আমি শুধু তোমাকে

 

স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতে দেখেছি

দু-একবার...

 

তপস্বিনী

 

অজানা বাতাস আসে কালের ইশারা নিয়ে

যেটুকু যা খড়কুটো ভেসে চলে যায়

কোন দিগন্তের পারে

 

যেতে দাও তাকে, যে খুঁজেছে তোমাকে

আলো-অন্ধকারে

 

উপোসের বেলা মুছে দেয়

বিদায়ের সুর

 

কান পেতে শোনো

 

শিবের মতো বর, তুমি তো চাওনি কখনও...