লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, October 5, 2021

কেদারনাথ সিং : দেবলীনা চক্রবর্তী, শারদীয়া সংখ্যা

কেদারনাথ সিং-এর কবিতা

অনুবাদ : দেবলীনা চক্রবর্তী

 

 

জুতো / কেদারনাথ সিং

 

সভা সমাপ্তির পর

 পড়ে আছে জুতো

একলা নির্জন কোণে হতচকিত উদাস

দুটো ধূলোমাখা জুতো

মুখোমুখি, যার

নেই কোনো উত্তরাধিকারী

 

চৌকিদার এসে দাঁড়িয়ে দেখল

অনেক্ষণ মুখোমুখি

সেই জুতোর সামনে

আর তাজ্জব হয়ে ভাবতে থাকল...

 

বক্তা চলে গেছে,

সমস্ত তর্ক-বিতর্কের শেষ হওয়ার পরেও

জুতো জোড়া পড়ে আছে

 

এই শূন্যতায় যেখানে

কেউ বলার আর শোনার নেই

তবু কত কত কিছু

নিঃশব্দে বলে গেলো জুতো জোড়া।

 

 

মূল কবিতা :-

जूते / केदारनाथ सिंह

 

सभा उठ गई

रह गए जूते

सूने हाल में दो चकित उदास

धूल भरे जूते

मुँहबाए जूते जिनका वारिस

कोई नहीं था

 

चौकीदार आया

उसने देखा जूतों को

फिर वह देर तक खड़ा रहा

मुँहबाए जूतों के सामने

सोचता रहा

कितना अजीब है

कि वक्ता चले गए

और सारी बहस के अंत में

रह गए जूते

 

उस सूने हाल में

जहाँ कहने को अब कुछ नहीं था

कितना कुछ कितना कुछ

कह गए जूते

-----------------------------------

 

এই পৃথিবী রয়ে যাবে / কেদারনাথ সিং

 

 

আমার বিশ্বাস আছে

এই পৃথিবীও থেকে যাবে

যদি আর কোথাও নাও থাকে

আমার হাড়ে-মজ্জায় বেঁচে থাকবে

অথবা রয়ে যাবে

গাছের বাকলে যেভাবে ঘুণ বাসা বাঁধে

অথবা ছোট্ট পোকা যেভাবে রয়ে যায় দানায় দানায়

সেভাবেই এই পৃথিবীও ঠিক রয়ে যাবে

প্রলয়ের পরেও আমার মধ্যে

 যদি আর কোথাও নাও থাকে

 আমার শব্দে আমার নশ্বরতায়

 থেকে যাবে।

 

আর এক দিন জেগে উঠব আমি

এক পৃথিবী সমেত

আমি জেগে উঠব জল আর কাছিম হয়ে

আর ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবো

সেই মিলন কাতরতার দিকে

যাকে নাকি কথা দিয়েছিলাম

যে আমাদের দেখা হবে।

 

 

মূল কবিতা :-

यह पृथ्वी रहेगी / केदारनाथ सिंह

 

मुझे विश्वास है

यह पृथ्वी रहेगी

यदि और कहीं नहीं तो मेरी हड्डियों में

यह रहेगी जैसे पेड़ के तने में

रहते हैं दीमक

जैसे दाने में रह लेता है घुन

यह रहेगी प्रलय के बाद भी मेरे अन्दर

यदि और कहीं नहीं तो मेरी ज़बान

और मेरी नश्वरता में

यह रहेगी

 

और एक सुबह मैं उठूंगा

मैं उठूंगा पृथ्वी-समेत

जल और कच्छप-समेत मैं उठूंगा

मैं उठूंगा और चल दूंगा उससे मिलने

जिससे वादा है

कि मिलूंगा

-----------------------------------

 

অন্ত / কেদারনাথ সিং

 

বন্ধুগন পরিশেষে এই কথাই বলব

যে,

অন্ত বা শেষ হলো শুধুমাত্র এক সংলাপের প্রণালী

যেখানে শব্দ প্রতিনিয়ত নিজেকে ভাঙে

আর স্ফুরণের পর প্রতিবার

 অবশিষ্ট পরে থাকে কাঁচা আদিম

  এক তাল মাটির মতো

   যেখান থেকেই আবার সব কিছুর

    শুরু বা জন্ম

   

 

মূল কবিতা :-

अंत महज एक मुहावरा है / केदारनाथ सिंह

 

अंत में मित्रों,

इतना ही कहूंगा

कि अंत महज एक मुहावरा है

जिसे शब्द हमेशा

अपने विस्फोट से उड़ा देते हैं

और बचा रहता है हर बार

वही एक कच्चा-सा

आदिम मिट्टी जैसा ताजा आरंभ

जहां से हर चीज

फिर से शुरू हो सकती है

 

-----------------------------------

    

হাত / কেদারনাথ সিং

 

তার হাত

আমার হাতের তালুতে নিয়ে ভাবলাম

পৃথিবীকেও

এই হাতের মতোই উষ্ণ ও সুন্দর হওয়া উচিত।

 

 

মূল কবিতা :-

हाथ / केदारनाथ सिंह

 

 उसका हाथ

 अपने हाथ में लेते हुए मैंने सोचा

 दुनिया को

 हाथ की तरह गर्म और सुंदर होना चाहिए

 -----------------------------------

 

কান্না কতটা ভারী / কেদারনাথ সিং

 

কত লক্ষ চিৎকার

আর কত কোটি আর্ত বিলাপের পর

কোন এক চোখ থেকে

গড়িয়ে পড়া

অশ্রু বিন্দুর নাম হলো

কান্না

 

কেউ কি বলতে পারে

আসলে কে কতটা ভারী

অশ্রু বিন্দু নাকি কান্না !

 

মূল কবিতা :-

आँसू का वजन / केदारनाथ सिंह

 

कितनी लाख चीख़ों

कितने करोड़ विलापों-चीत्कारों के बाद

किसी आँख से टपकी

एक बूंद को नाम मिला-

आँसू

 

कौन बताएगा

बूंद से आँसू

कितना भारी है

 

কবি পরিচিতি : কেদারনাথ সিং

 

১৯৩৪ সালে উত্তরপ্রদেশের চাকিয়া গ্রামে তাঁর জন্ম। বেণারস থেকে স্নাতক হয়ে, কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

কিছু সময় গোরখপুরে হিন্দি ভাষার শিক্ষকতা এবং তারপর দিল্লি জহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটিতে হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপনা করেন। ছোট্ট বয়স থেকেই কাব্যচর্চার শুরু। তিনি কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন গদ্যকার ও সমালোচক।তার কবিতায় প্রথম ও প্রধান আকর্ষণ হলো সরল ভাষা কিন্তু তার গভীর তাৎপর্য ।

 

কেদারনাথ সিংয়ের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে, যহাঁ সে দেখো, অভি বিলকুল অভি, জমিন পাক রহি হ্যায় ও বাঘ।

কাব্যগ্রন্থ 'অকাল মেঁ সারস' কবি হিসেবে তাঁকে জনপ্রিয়তা এনে দেয়। এই কাব্যগ্রন্থের জন্যই ১৯৮৯ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান এবং এই কাব্যগ্রন্থের জন্যই ২০১৩-য় তাঁকে জ্ঞানপীঠ পুরস্কারেও সম্মানিত করা হয়।

 

বিগত কয়েক দশক ধরে হিন্দি ভাষায় কাব্যচর্চা করে অকুণ্ঠ ভালোবাসা পেয়েছেন। তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও কম নয়।এই হিন্দি ভাষার জনপ্রিয় কবি পরলোকগমন করেন ২০১৮ সালের ১৯ মার্চ।

 

আজ তাঁর লেখা কয়েকটি উল্লেখ্যযোগ্য হিন্দি কবিতার বাংলা তর্জমা করলাম।

দেবার্ঘ সেন, শারদীয়া সংখ্যা

দেবার্ঘ সেন-এর দুটি কবিতা


(ক)

মেটামরফোসিস

 

এতো 'মতো' আর ভালো লাগে না

উপমার পৃথিবীতে, তিক্ত হচ্ছে স্বাদ।

 

আমাকেও আমি ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি কতবার

অসহ্য শীতের

নির্বাসিত পাণ্ডুলিপি

 

একটু ফসফরাস, একটু মেটামরফোসিস।

 

ফিরিয়ে নিয়েছি আবার

জন্মবাসর, কৃষ্ণসাগরের কূল

সঙ্গে একটা দৃঢ় আড়াল

 

আড়াল মৃত্যু চিবোনোর...

 

(খ)

সুতরাং


(১)

ব্যথা বাড়ার সাথে সাথে, কথা কমে এসেছে

একদিকে তাকিয়ে থাকলেও

চোখে জল নেমে আসে।

 

পৃথিবী তার মায়া ভোলায় দিনরাত

মৃত্যু সত্য, কারণ তার কখনও বা কৃত্রিম।

 

বাতাসের দেওয়ালে দেওয়ালে

জেনোসাইড আশঙ্কা...

 

(২)

ফুলগুলো ঝরে যাচ্ছে,

সংরক্ষিত করার লোভে

আতঙ্ককে ঢাকা দিয়ে ফ্রিজে রাখা হবে

 

আমরা বরফের ওপর বরফ নিয়ে খেলব।

অনিকেশ দাশগুপ্ত, শারদীয়া সংখ্যা

অনিকেশ দাশগুপ্ত-এর দুটি কবিতা


আলেয়া নবীন

 

নতশির হয়ে প্রমুখ বিষণ্ণ রেস্তোরাঁর মুখোমুখি হই

কাচের দরজায় নিজের ছায়া ঠেলে

অন্তর্মুখ কোনো কিয়স্কে দেখি

মানভঞ্জনের হলুদ ডায়েরি

মৃগশিরার পুঁজ আর বারোয়ারী সর্পিণী মহল

গোল পরিধির চারপাশে মদ্যপ নখরগুলি আঁচড়ে চলে

রাত্রির পাঞ্জাবিকাশোদ্যত বহুতল ও গাছেদের বাবরি

ট্রাকের ক্ষুরধার আলোয় ঠিকরে দেয় যা বহুলাংশে মিথ্যা

দর্পণের মেহন মনে রেখে রুপার মাকড়সা গেলে আনি

সর্বৈব তুহিননীল ফুলের খসে পড়া পালঙ্ক  

গাঢ় হেডলাইট যখন মন্ত্রপূত বাসা হাতড়ে বস্তুত

পেছন দরজার কোনও কৃষিমুখ খুঁজে মরে

 

 

মৌসুমী

 

শেষ রাত্রির ঢের চাঁদ ও পরম্পরা আমাদের স্বপ্নে গাঁথা

সমান্তরাল শালুকগুলি প্রায়ান্ধকার মাথা উঁচিয়ে

সীমান্ত-ফড়িঙের কথা পাড়ে

 

তুমি সেই স্বাধীন ও বল্কলের রাঙা আতিশয্যে

ভাঙা কুয়োতলার মজুত জোনাকি-পৃষ্ঠা

একে-একে উল্টে যাও

 

নিবিষ্ট স্তনে একেকবার তেরছা রৌদ্র পড়ে

 

সমুদ্রতটআমাদের প্রভাতী বিষণ্ণতা,

চুমুকের উষ্ণ জ্যোতিষ্কসারি ভ্রান্ত ক্যাফেটেরিয়ায়

ক্রমাগত চলকে ওঠে

সব্যসাচী মজুমদার, শারদীয়া সংখ্যা

সব্যসাচী মজুমদার-এর দুটি কবিতা

 

লোলুপের লেখা

 

(১)

এ লেখার মাতৃকামে চাঁদ হয়ে গেছে

সুদূর বৃক্ষেরা। কুয়াশার সামনে এসে

থমকে আছে জলরেখা। মোকামে মোকামে

শুরু হলো পুঞ্জধ্বনি কর্বূরের নামে।

 

এই দেখো জয় রক্ত পাহাড়ি প্রশ্বাস

অনুলোমলিঙ্গরেত প্রকৃত সন্ত্রাস

হাত ছেঁড়ে চোখ ছেঁড়ে নাভি টেনে খায়

বিষণ্ন ব্রততী যেন শামুকে জড়ায়

ছিন্ন মাথা খুলে নেয় ভরা রাস্তা ঘাটে

আর যোনি ভেপসে ওঠে আমনের মাঠে

 

এ লেখার মাতৃকাম খুঁড়ছে মীরা বাই

আমি এই ছায়ানটে আমাকে বাঁচাই

তবে যে কুয়াশা আছে ওদিকের ঢালে

তার মতো স্রোত হয় নদী অন্তরালে

 

 

(২)

অতীব সরল ধাঁধা রজঃক্ষরা থাক

দূর বাঁওড়ের জলে শটির পরাগ

ভাসে মূদ্রা খুলে আহা শ্যাওলা বিহ্বল

সম্পৃক্ত সারস দেখে ছড়া কাটে জল

 

জলের ঘরানা জানে জলে ভেসে যায়

চারণের জননাঙ্গ। মিথোজীবিতায়

এই যে রয়েছি আমি― এও এক শোক

প্রতি গল্পে ডাইনি হয় মায়ের আনখ

 

আমিও তো হৃতলাশে খেজুর খোঁপাটি

যোনি বন্ধ করে তুলি ঝুমুর গোঙানি

 

দুটো হাঁস আল ঠুকরে শামুক ধরেছে

ক্রেংকারে মাঝে মাঝে বৃন্দাবনী বেজে

উঠে ফের লুপ্ত হয় শীতের নদীতে

তুমি তৃণ। অঙ্গরাগে সমস্ত‌ই দিতে!

ধৃতিরূপা দাস, শারদীয়া সংখ্যা

ধৃতিরূপা দাস-এর দুটি কবিতা

 

জগডুমুর

হাফপ্যান্টের কাপড় যদি

আরামদায়ক না হয় দারুণ

খিস্তি মারতে ইচ্ছে করে

নিষ্ঠ পাথর চুষতে চুষতে

 

ইচ্ছে করার ডাল পাওয়া যায়

অতঃপর সে ডালের ডুমুর

প্যান্টে পকেট দুই থেকে এক

পাথর ভাঙার আওয়াজ শুধু

 

শুনতে পাইনা এই যা দোষের

শ্রবণ ভাঙছেশ্রাবণ-কোশের

অদার্শনিক অন্ধ চরা

এখন মাটির বাহ্য সাজায়

 

সজ্জাটি তার স্বভাবজাত

হাফপ্যান্টের ছন্দ মেনে

ন্যস্ত পুচ্ছ খোয়াব দেখেন

তাঁর খোয়াবের খাইগো ডুমুর

 

কাচ ভাঙা     অব্দি কেউ

এই দহে        স্থল পেয়ে

টলছিল         কাচ ভাঙার

অপেক্ষায়।    কাব্যে নীল

নখগুলি        শব্দভর

জন্মানোর      ইঙ্গিতে

টলছিল।       এক দুটি

ডিম কৃমির    তার ছায়ে

বর্ষণে            ট্যাংরা মাছ...

সম্বলের         এই পুঁজি

রইবে তো?    হেই ঠাকুর!

হেই পিতল!   পথ ছাড়ো।

নির্বাণের        হিমসাগর

চমকে দিক    পথ ছাড়ুক

এইটুকু           নীল গ্রহের

 

নীল আষাঢ়    প্রস্তুতির

ডিম ব্যথায়     অন্তহীন

ব্যর্থ হয়          ব্যর্থ হয়

লিঙ্গহীন         ক্ষেত্রফল

 

পক্ষহীন          ব্যর্থতা

নির্ণীত            এই ফুলের

এই আলোর    কাচ ভাঙা

অব্দি নেয়       বৃক্ষুকে?

 

নেয় যদি         এই কৃষির

জগডুমুর         নিক প্রভু

নিক প্রভুর       কাচ দেহ

ফল ঝরার       কাচ শরীর

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল, শারদীয়া সংখ্যা

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল-এর দুটি কবিতা

 

চন্দন'গাছের অংক

 

কী করে যাব ?

প্রেমিকার মতোই শশ্মান আমাকে ডাকে !

ওহ হ্ বিস্মৃত রঙের জোঁক পুষেছিল

যোনিতে। সিঁড়ি ভাঙার গানে

ধরা যাক X= লাল পেয়ারা,

এবং Y= পাখীর ঠোঁটএবার

Z জিগজ্যাগ নাভিমণ্ডলে কিছু দানা ছড়ানো থাক

খুঁপতে খুঁপতে

চড়ুই ঠ্যাং আর পাতা ফাঁদের অংক পাশ

করতে পারলে

কোনো একদিন নদীর চরে লুকিয়ে

তোমার প্রতি বাঁকে চন্দন গাছ লাগাব।

 

"---তীর্থক্ষেত্র---+"

 

পর্ণগ্রাফি ভেবে দেখলেনই না,

অথচ আমি কী বর্ণময়ই না হয়েছিলুম।

ইচ্ছে করেই লিখলেন না তবু

 

লেখকের নাম নিলুম

ধরুন, লেখকের নাম ধর্মতলা

ডালহৌসি অব্দি একটা টিকিট কেটে নিন

গুঁতিয়ে টুতিয়ে বাসের মাঝ'রডে ঠেকনা দিন

 

সবাইকে হতবাক করে আর্মহার্টস্ট্রীটে নেমে

খোঁজ করুন কতটা হাঁটলে

ছ্যাঁড়া গলি, ট্যানা গান  টাকা দুয়েক রতি'

'কাটাহাড়' মার্কা শঙ্খযোনি আপনার কলম চেখেছিল ।।

শীর্ষা, শারদীয়া সংখ্যা

শীর্ষা-র কবিতা

শ্রাবণ

কোথাও একটা শ্রাবণ হতে থাকে, অঝোর শ্রাবণ, মায়ার শ্রাবণ! পাখিরা ফেলে যায় নিজস্ব পালকের ছাপ, খড়কুটো ভেসে যায় প্রকৃতির ডাকে। সুদীর্ঘ পৃথিবী কমলালেবুর মতো রং নিতে থাকে এভাবেই। আলোকবর্ষ পেরিয়ে ইন্দ্রপ্রস্থের দিকে হাঁটতে থাকে সময়ের ধুন। এরপর একদিন প্রগাঢ় নিশুতি নেমে এলে চাঁদের উঠোনে মিটমিট করে শাবকের ঘুম মা পাখিটি কুড়িয়ে নিয়ে আসে সেই আদিম পালকের ছাপ, আর এঁকে দেয় শিশুর কপালেঅমোঘ মায়ার এক অবিনাশ পরমতিলক!

সোহম বিশ্বাস, শারদীয়া সংখ্যা

সোহম বিশ্বাস-এর গুচ্ছ কবিতা

 

মেটাফোর

 

ছয় মাস বমি করেছি

একশো আশি-টা আলপিন

বেরিয়েছে গলা থেকে।

 

পকেটে রেখে দিই সেগুলো

শোয়ার আগে মাথায় গাঁথি।

 

ঘুম

 

এখনো মাঝে মাঝে হাওয়া বয়।

ঠোঁট, চোখ শুকিয়ে আসে।

চামড়া-গুলো কুড়িয়ে নিই!

শীতে আগুন জ্বালাই

 

স্পার্ক

 

দূরে সরছিল ফ্রেমগুলো

কপালের ছোট্ট বিন্দুটা পরিষ্কার।

 

ডিজিটাল ঘড়িগুলো এক সেকন্ড করে পিছোচ্ছে সেই থেকে!

 

 

মণিশংকর বিশ্বাস, শারদীয়া সংখ্যা

মণিশংকর বিশ্বাস-এর দুটি কবিতা

 

ম্যাজিক

 

আমি ইউরি গেলার

রিমঝিম বলে মেয়েটির ভিতর যে সুরেলা চামচখানি আছে

আমি তাকে আমার ইচ্ছেশক্তি দিয়ে বাঁকিয়ে ফেলতে চেয়েছিলাম

আমি জানি রিমঝিম, ওর বন্ধুরা, বাড়ির লোক

একে আমার বুজরুকি ভেবেছিল

সে যে যা ভাবে ভাবুক

আমি চাইছিলাম একটা ম্যাজিক করতে

 

এক চামচ রিমঝিম, চামচে করে তুলে নিয়ে আসতে

 

মৃত মানুষের ইনবক্সের পাসওয়ার্ড

 

বাইপোলার ডিসঅর্ডার

পরম শূন্য তাপমাত্রার আশেপাশের কোনো সংখ্যা

নামহীন একটা গন্ধ

পিঁপড়ের ডিম ও ফেরোমন

ঘর ছেড়ে চলে যাওয়া মেয়েটির অন্তর্বাস

গুগল আর্থে এখন আর নেই

এমন কোনো নদী আর তার আত্মায়

বিঁধে থাকা একটা মাছের ইম্প্রেশন

 

যার কানকোর ভিতর শেষমেশ আশ্রয় নিয়েছিল

একটা আস্ত ছায়াপথ

বাসব মণ্ডল, শারদীয়া সংখ্যা

বাসব মণ্ডল-এর কবিতা

 

যাপন

 

বন্ধ জানলার গরাদ পেড়িয়ে

আমি ছায়াদের কড়ানাড়া শুনি

সেই আওয়াজ আস্তে আস্তে

চিৎকার হয়ে ওঠে।

চেনা অচেনা সম্পর্কের

আড়ালে গজিয়ে ওঠে

হাজারো নখ, দাঁতশিং।

 

আমার জানলার বাইরে

মাথা উঁচু করে

দাঁড়িয়ে আছে একটা মাধবীলতা গাছ।

নিশুত সম্পর্কগুলো

আর মাধবীলতার ফুল

হাত ধরাধরি করে

আমার অস্তিত্বের অঙ্গ হয়ে যায়

অজান্তে।

 

শুধু একটুকরো জেহাদ 

পুষে রাখি,

গোপন সেনোটাফে।