লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, September 29, 2020

অভিজিৎ দাসকর্মকার অষ্টম সংখ্যা

অভিজিৎ দাসকর্মকার-এর কবিতা


লাইন সংখ্যায় কবিতা আরাম 


[১]। আড়মোড়া

 

আমার একটা বটগাছ আজও রয়েছে 

পার্শ্ববর্তী ঝুরো গল্পের গায়ে লেগে রয়েছে নদীর কৌতূহলী  এপাড়

মুখের আড়ালে ঢেউ আছড়ে পড়ছে। চিহ্ন নেই পরিষ্কার জঙ্ঘার গায়ে

শুধু,

শুদ্ধ উচ্চারণ লেগে আছে বাঙ্কের উপর রাখা বিকেলের অলস আড়মোড়ায়।

 

[২]। শুরুয়াত্

 

যে হাওয়ায় অন্য আ'রেক শুরুয়াত্ টগর হয়ে হেসে ওঠে, তার আর আমার সকালের ওঠার সময়সীমা মাত্র একটি শব্দ

 

[৩]। সোঁদাবাষ্প

 

পড়শির প্রাচীরের অটুট ওপারে পরিচর্যিত হওয়া দুটি করবি ফুল, আর

নৈর্ঋত কোণে বাঁশঝাড় জুড়ে হেটে চলা নদী, নদীর যৌবন, আর ক্ষয়ে আসা রজঃস্বলা;

আস্তে আস্তে মাটির সোঁদাবাষ্প হয়ে আকাশে মিলিয়ে যাচ্ছে সন্ধ্যা... 

 

[৪]। ফেসবুক স্টোরি

 

গাছ থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে ১টি বড়ো ফাঁকা জায়গা

 

গাছের পাতা অনুযায়ী পরবর্তী কয়েক দিন পর আবার কবিতায় আসবে কলিঙ্গ জয়ের কথা, এবং

ফেসবুক স্টোরিতে সাঁটানো থাকবে আপনার আর ১টি বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের ক্যাপশন। 

তারপর,

প্রতিদিন ৩:৪০ এর পর ঘড়ি দেখে অনর্গল ওলট-পালট হবে বড়ো, সরু আর সেকেণ্ডের কাঁটা

 

 

[৫]। রঁদেভু

 

জলের কাছে এসে আকাশের মেঘলা জীবনে সংগীতময় স্নিগ্ধ বৃষ্টি এবং 

নৌকাসহ বয়ে চলেছে আমার, নৌকা আর জলের ছায়া।

আমি উত্তম পুরুষকে অন্ধ আঘ্রাণে, প্রতিটিদিনকে মুখরিত হতে দেখেছি গোমেদরঙে

এবার আষাঢ় আসুক সমাজে। সব লেখাই ধান শিস হয়ে অক্ষরিত হোক তোমার শরীরে। আমি শরীরদ্বারে পথ আগলে বসে রয়েছি...

১টিবার রঁদেভুতে এসো

 

 

১টি আঙুল করা কবিতার ৫টি অংশ

 

১। কনিষ্ঠা

 

আমাকে নিস্তরঙ্গভাবে সন্ধিবিচ্ছেদ করেছে বিছানার আর্দ্রতা

নদীপ্রবাহ মিশেছে প্রথম অনুচ্ছেদে...

হয়তো তাই

আমি প্রাতভ্রমণ শব্দটি বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখি

 

২। অনামিকা

 

তারপরও

বৃষ্টি দেখিয়েছে চোখের ছায়াবিশেষ্য

আমি দূষণের সম্ভাবনা না দেখেই

স্টিমড-ইলিশ অর্ডার দেওয়ায়

উপরের লাইনগুলোয় কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন হলো না...

 

৩। মধ্যমা

 

আমার মরণদশা লিটমাস পেপারে বিলিয়মান।

এইজন্যই

আকাশবাণীর মহিলামহল-ও আজ বিরহিণী,

তাই

আমাকে অনুসরণ ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনো অপশন নেই...

 

৪। তর্জনী

 

একদম উলঙ্গ ছিলাম না

জ্যোৎস্না আর ক্রিমশন ভায়োলেটের দ্রাব্যতায়

সাওয়ারের নীচে বসে আছি

আমি শরীর ধোয়া বাল্মীকি

কেন-না তখনও

চিনিচিন করে বেরিয়ে আসছে অম্বঋষি গোত্রজাত কান্না...

 

৫। বুড়ো-আঙুল

 

জীবনযাপনে পদবিযুক্ত অভিলাষ

হয়তো

আমার মন্দাক্রান্তা নাম আর মালকোষ প্রিয়

আলজিভে গোলাপি রঙের বসন্তবৌরী পাখিটি

দু-একবার বসন্ত বলে ডাকার পরও

ভাবলাম

তুমি যদি কোনোদিন হলুদ রঙে ঝাপসা দেখো তাই...

Monday, September 28, 2020

গৌরাঙ্গ মণ্ডল অষ্টম সংখ্যা

গৌরাঙ্গ মণ্ডল-এর কবিতা


যেদিন রাতে বৃষ্টি হয়

ছিঁচকে পুকুর

ঘাট থেকে চুরি করে আস্ত সিঁড়ি

লুকোয় বগলে

 

দাঁড়াতে পারি না। ফিরে আসি

চেয়ারের কাছে। বলি, কুঁজো হই, বোসো

তোমারও বিশ্রাম লাগে

 

উঠোনের জলে চুড়িবিক্রেতার মেঘ

বেরঙিন ঝুড়ি উল্টে হাঁকে, চুড়ি লিবে কি গ!

কাউকে বলিনি, কাল

নিজের দিদিকে আমি ঈশ্বরের হাত ধরে পালাতে দেখেছি

 

খোঁপা

 

ফিতে বাঁধলেই জবাগাছ

রামপ্রসাদের গানে খসে পড়ছে

                         আহ্নিকের ফুল

 

কামাতুর পড়ে আছি

রুদ্রমূর্তিটির পায়ে আমি কোনো পাতাল দেখি না

 

 

 

 

ইউনিফর্ম

 

নিরাকার নও। আকার নিয়েও

আমি এতটা ভাবি না

 

বাতিল পৃথিবী, তার সামান্যই দূর

 

কোন পূজারীর হাতে প্রাণ পেয়ে, ইশারায়

হেঁটে যাচ্ছে খড়িমাটি একা একা ইস্কুলের পথে

সায়ক দাস অষ্টম সংখ্যা

সায়ক দাস-এর কবিতা

 

নাস্তিক্যবাদ

 

আমার উচিত ছিল ওই মেয়েটার নদী ধরে চলে যাওয়া দূরে। আমার বংশে মর্যাদার ছাপ যেখানে শেষ হয় তারপর থেকে শুরু হয় নদী খোড়া, নদীর পাড়ে হেঁটে যায় আমার পূর্বপুরুষ। সেই মেয়ের শুকিয়ে যাওয়া নদীর ধার ধরে যে মন্দিরে যাওয়া যায়, সেখানে অধিষ্ঠিত যে দেবী নারীর যৌবন পান করে ধীরে ধীরে উঠেছেন কিশোরী, সেই দেবীর পাশে আমার উচিত একটা সাপ ছেড়ে আসা। আমার উচিত মেয়েটার আলপথে পুঁতে রাখা আমার পায়ের ছাপ। মেয়েটার যৌবনে ছেড়ে যাওয়া একটা, দুটো, ভালবাসার দাগ; গলার একখন্ড মাংস।

 

দেবীদের কিশোরী হওয়ার পথ, আমাকে বানিয়ে দেয় স্বর্গভ্রষ্ট, আমাকে বানিয়ে দেয় রাতের খুনি, আততায়ী...

 

শীতঘুম

 

এই যে আমি পেলাম না দেখতে তোমার আলতা-পা, দেখতে পেলাম না মাড়ানো ঘাস, শরীরের লাল। তোমার মাড়ানো ঘাসের নীচে আগে ছিল আদিম কোনো গর্ত, যা মানুষ খুঁড়েছিল অনেক হাজার বছর আগে। তখন শীতঘুমের প্রচলন ছিল, ছিল তোমার আমার অহেতুক সম্ভাষণ। সে গর্তে ঘাস জন্মেছে, পড়েছে একবিংশ শতকের কমলালেবুর খোলা। অথচ এই বিস্তার, এই নগন্য অস্তিত্ব মুছে যেতে যেতে হয়ে উঠেছিল কোনো সাপের শীতকালিন বাসস্থান। সেই সাপের অতঃপর মৃত্যু হল। তুমি এলে নির্ভয়ে, নিকৃষ্টতম জড়তা কাটিয়ে, কাছিমের মতো।

 

তোমাকে দেখা উচিত ছিল আমার। উচিত ছিল তোমার পথে যাওয়ার। উচিত ছিল সাপ-জীবন ত্যাগ করার। শীতঘুম কাটানোর‌।

অঙ্কুশ ভৌমিক অষ্টম সংখ্যা

অঙ্কুশ ভৌমিক-এর কবিতা

 

(ক)


ঋতুচক্র


(১)

দক্ষিণ দিক থেকে

হাওয়া দিলে,

দেবদারু গাছেরও প্রেম পায়।

 

(২)

একটা ফলসা মতো মেয়ে

হাতছানি দেয়

ঋতুচক্র পাল্টে ফেলার

 

(৩)

তফাৎ যাও তফাৎ যাও...

কাছে আসার সময়টা

মনে থাকে না আর

 

(৪)

কাছে আসতে গিয়ে

সুইসাইড, এগরোল সব এক হয়ে যায়

 

 

 

(খ)


রংমিলান্তি

 

(১)

বিকেলের রোদে

সোনার পরিমাণ

কমে গেছে বলে মনে হয়

 

(২)

কদিন ধরেই

মেঘকে আর সাদা লাগছে না

আগের মতন

 

(৩)

শুনেছিলাম,

অন্ত্যমিলের রং নাকি

ভীষণ সবুজ!

 

(৪)

সিগারেটের আগুন,

ঠোঁটের কাছে চলে এলে

লাল হয়ে যায় বড্ড

 

(৫)

ট্রাইটেশনটা

আজকেও মিলল না...

শুভদীপ সেনশর্মা অষ্টম সংখ্যা

শুভদীপ সেনশর্মা’র কবিতা


ঘূর্ণি

 

 

সিঁড়ি উঠে যায়

সিঁড়ি নেমে যায়

 

বহুদূর স্বপ্নের মতো

চলে যায় রাস্তা

 

ওপারেই তৃণভূমি

ওপারেই চাঁদ

 

সিঁড়ির শরীর ঘেঁষে

পূর্ণিমা রাত

মৌমিতা পাল অষ্টম সংখ্যা

মৌমিতা পাল-এর কবিতা


সবুজ জলপাড়

 

এক খেলাঘর চু-কিৎ-কিৎ

এক কিংবা দুই

 

এক খেলাঘর পুতুল খেলা

তোর সঙ্গে রই...

সৌমাল্য গরাই অষ্টম সংখ্যা

সৌমাল্য গরাই-এর কবিতা

 

পত্রকথা

 

একটা চিঠির জন্য আমাকে হারিয়ে যেতে হয়। যে অক্ষর বন্দি থাকে তাকে ঘরে পৌঁছে দিই। অক্ষরগুলো নাম পায়, এমন একটা নাম যে নামে অনেকেই আছে কোথাও না কোথাও। প্রকৃত নামেরা হারায় অথচ তাহাদের সর্বনাম এক। কী করে তাদের দিই নামা-বলি? এর চেয়ে থাক সেসব চিঠিরা নিজের মতন।


মুছে যাক নাম দিয়ে লিখে রাখা চিঠিদের ঘর। মনে মনে বলি
উহাদের ঠিকানা হউক কেবল স্পন্দন...

 

চিঠিদেরও মন থাকে। একলা দুপুরে

তাদের হারাতে ইচ্ছে করে। স্কুলফেরত চিঠিটির দেখা করতে ইচ্ছে হয়, কোকিলপুরের কিশোরীর সাথে। কোনও কোনও চিঠির তাঁতিহারের মেঘ হতে ভালো লাগে, আকাশের বৃষ্টিটিকিট ঝেঁপে ভাবে নৌকা ভাসাবে ঘন দুরযোগে।

শস্যের যৌবন হবে ভাবে যে চিঠি সে প্রকান্ড একটা মাঠের শরীর  বুকে ধরে সম্পূর্ণ গ্রামের ঠিকানা হতে চায়। কোনও চিঠি ভাবে বাঁশি হয়ে ভুল সুরে বাজবে, যাতে তার রাধা কখনো দুঃখ না পায়। মধুকূপী ঘাসে ফুল হয়ে ফুটবে, এমন চিঠিরা অপেক্ষা করে কিন্তু কে তাকে পৌঁছে দেবে এমন ঠিকানায়? পিনকোড জানে না কেউ।

কোনও কোনও চিঠি থাকে তারা অর্ডিনারি। তাদের কিছুই হতে ইচ্ছে করে না। হয়তো কিছু না হওয়াটাই তাদের একমাত্র ইচ্ছে। অন্ধকার মর্মরের স্তূপ হয়ে তারা ক্লান্ত ও বিষণ্ণ হবার স্বপ্ন দ্যাখে  

যে চিঠি নিরুদ্দেশে যায়— তারা সব কোথায় ওড়ে। বায়ুবাহিত ঝরাপাতা তারাও তো গাছেদের চিঠি, কুড়িয়ে রেখেছ, তাকে কেউ? দিয়েছে ঠিকানা পৌঁছাবার?

 

মৃতদের ঠিকানায় চিঠি আসে। চন্দ্রাভিমানে বসে থাকে তারা। চাঁদের গন্ধকে গায়ে চন্দনের মতো লেপে। অপেক্ষা করে চিঠির জন্য। জ্যোৎস্না পাঠিয়ে বলে-'এইখানে দাও'। আমাদের কাছে জ্যোৎস্নামূলক কোনও ডাকটিকিট নেই। এই অক্ষমতা নিয়ে চিঠি পাঠাব কীভাবে?

Sunday, September 13, 2020

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সময় ও যাপনের দুঃসাহসিক ঘোড়াকে আদর করছে নারী! পুরুষেরা বইছে বৃদ্ধ অক্ষমতাকে। পাথরে পাথরে আদল ভেঙে আসক্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসছে মাথাসমগ্র বিশ্বাস! আমরা দৃষ্টি খুলে ধরিয়ে দিচ্ছি অন্যের হাতে। এ কি আমাদের ক্ষত ভরাবার পাত্র? এ কি আমাদের নির্লজ্জতা? নাকি ভেসে উঠছে ছায়াঘুমের এক একটি দালান কাতরতা...

                                প্রচ্ছদ শিল্পী – প্রতাপ মণ্ডল

Saturday, September 12, 2020

সিদ্ধার্থ দাস

সিদ্ধার্থ দাস-এর কবিতা

 

মহামারী দুঃখ আর বিন্যাস

 

দুঃখ আর বিন্যাস সমান বিনয়ী কেউ ছেড়ে কথা বলেনি। ক্ষমা চাইব না

কিছুতে ভেঙে পড়ি না অরন্যসপ্তাহ। বড়োলাটকে বলে দিয়েছি নীল চাষ করব না।

দাদন চাই না শুধু খেয়ে পরে বাঁচি।

মেঘ বালকসুলভ বিচিত্র দোঁয়াশ। প্রয়োগ ভেদে জলকাটা।

আয়নার সামনে ভ্রম কাটেনি। ডান হাতে লিখি।  পদহস্তাসনে

তলপেটে চাপ পড়ে। মেঘ ভূমিষ্ট আদরের দেশে।

কথার ধোঁয়াশারা ভবিষ্যৎ। ধর্ম নিয়ে যত সিনেমা সবটা মহাভারতে আছে।

হাত ঘসে করতল উষ্ণায়নের শিকার। হাত ধুয়ে মধ্যবিত্ত

প্রায় সর্বশান্ত। চোখের কাজলে গান্ধারী রুমাল ভিজিয়ে ফেলে।

 

ছায়া সঙ্গী

 

অদ্ভুত উদ্দেশ্য সব ছায়া আর মায়া হাতের রেখা কাটাকুটি খেলে।

ক্ষয় খতির হিসেব হয় না। খুব কম সময়ে বাসস্হান মেরামতি, সাজানো সংসার

পানীয় জল বিদ্যুৎ নূন্যতম পরিষেবা-মানুষের পরিচয়।

পায়রা বর্ণ পরিচয় জানে। মোঘল প্রাসাদে জনান্তিক উপনগরী। দলবদ্ধ

রেশনে মুসুর ডালের লম্বা লাইন, ধান গম জীবন ধারণ।

ফাটা বাঁশে টিন গুল পেরেক, আন্দোলনের সাথী কাছেই থাকত

একসময় চাতক বাড়ির অমতে বিয়ে তারপর ছাড়াছাড়ি ইন্দ্রিয় আদ্যন্ত সজাগ।

ঘাসের মধ্যে সহজ অনুমেয় কিছু শাকপাতাড়ও আছে

অগম বিস্তারে প্রাচীন শান্তিপ্রিয় পুরোহিত। মনস্কামনা জানালে

হাতেনাতে ফল পাওয়া যায়। ঘাসে নিহিত খনিজ পাকস্থলীর

পাচকরস নিঃসরণে নগরকীর্তি। কেউ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছোঁয়াচ বাতিগ্রস্ত

ফুল বাগানে লালিত্যশোভা ঘাসের উপর হেঁটে, আরক্ত পাপড়ি প্রেম

নিবেদনে নির্ভরশীল। আতাগাছে বিনিদ্র তোতার, মার্গ দর্শন।

 

মধ্যবিত্ত মনের কোণে

 

পাহাড় মানে ক্রমশ নীচ থেকে উপরে উঠি আর উপর থেকে নীচে নামি।

দুটো ঘটনা ঘটে প্রায়শ একসঙ্গে।

কারো উপর বেশি নির্ভরশীল হলে সময়ের ব্যবধান বাড়ে মাত্র।

হাঁড়ির ভাত কতক্ষণে ফুটবে ঠিক হয় চাপের তারতম্য।

চাপটা স্বাভাবিক। কাঁচা হলুদ রোদ শুকনো চপল।

গৃহহীন উন্মত্ত অসুখ পাহাড়ের চ্যুতি

'জন হাত তুলে দাড়িয়ে সানু তলে, 'জন গাছের দড়িতে গাছ বাঁধতে চায়,

দূর দূর সীমানা বেড়া ঘেরা জঙ্গলে ক'জন গৃহহীন।

কোলাহল বিহীন সম্পর্ক নীচ তলায় বাড়ি ভাড়া থাকে।

গাছগুলো এগিয়ে আসে প্রানবন্ত শহরের দিকে ঝড়ে নানান বাহানা।

গাছ ও পাহাড়ে পর্যটন সমন্বয়।

ছাব্বির আহমেদ

ছাব্বির আহমেদ-এর কবিতা

 

১.

স্পোক

 

জং ধরেছে স্পোকে, ফেলে দিয়েছি

খারাপ স্মৃতিগুলো...

ভাগ্যের চাকায় গোধুলি।

 

ঘূর্ণন বেগে ত্বরণ সরলরেখা বরাবর

থেমে গেছে, ক্ষেত্রফল শূন্য রেখে

পরিধিতে সুখ লিখে রেখেছি।

 

মন্দনের খাতায় ঋণাত্মক চিহ্ন

আঁকতে ভুলে গেছি,

তুলিগুলো হারিয়ে গেছে,

স্পোকে রঙ করা হয়নি!

 

 

২.

ব্ল্যাকবোর্ড

 

ব্ল্যাকবোর্ডে লিখতেই বেরিয়ে এল

বুনো টিয়া, সবুজ অবয়বে।

আমি গাছের ডালে তাকে দেখতে পাইনি,

লাল শাক ঝুলছিল।

 

সাদা চকে লিখেছি রাষ্ট্রবিজ্ঞান,

শিলা ভেঙে পড়েছে বোর্ডের উপর

এক টুকরো পকেটে কুড়িয়ে রেখেছিলাম,

কাঁচের বয়ামে দিতেই অদৃশ্য।

 

সাহারা মরুভূমিতে ইতিহাস খুঁজতে খুঁজতে

কেঁপে উঠল যৌবন,

ফেটে বেরোল কালপুরুষ।

বিড়ালের গোঁফে দুধের আস্তরণ,

আঙুলে ডলা দিতেই

ব্ল্যাকবোর্ডে ফুটে উঠলো শান্তি!

 

 

৩.  

ছাইগুলো বুকে বিঁধছে

 

টিকটিকির আওয়াজেও সত্যতা থাকে,

গোরস্থানে গিয়েছিলাম হাড় খুঁজতে..!

শব্দহীন ভাবে পড়েছিল কর্ম।

 

কানের লতায় বিড়ির ছেকা খেয়েছি,

ঝিঁঝিপোকা তির ছুড়েছিল

ছাইগুলো বুকে বিঁধেছে।

 

ব্যাঙের কর্কসে আনন্দিত প্রাণ

প্রজাপতির রঙ ছড়িয়েছি

হোটেলের সাদা চাদরে, দাগ পড়েনি।

 

ঘড়ির কাঁটার ক্যালসিয়াম খেয়ে

পেন্ডুলাম খুঁজতে গেছিলাম টর্চলাইট হাতে

ট্রেনের চাকা গড়লেও, হুইসেল বাজেনি।

 

কালের সমুদ্রে নৌকার পালে ছিদ্র দেখে

সাইরেন বাজিয়েছে মৃত্যু, সাবমেরিন

চোখে পড়েনি...