পল্লব গোস্বামী-র মুক্তগদ্য
লালপাহাড়
লালপাহাড় বলে কোনো পাহাড় নেই পৃথিবীতে। তবু লাল
আছে, মুমূর্ষু এক পাহাড়ও আছে। আর আছে কাজললতা নামের এক পাহাড়ের
মেয়ে।
গায়ে তার ধানী রঙের শাড়ি। পাকড়া পাপিয়াদের সাথে সারাদিন ওড়াউড়ি। উড়েউড়ে ঘুরে বেড়ানো কালো কালো সব মেয়ে-পুরুষ; গাই-ছাগল-মোষেদের সাথে। হাওয়ার ঝোঁকে আমি কাছে যেতেই,
―সে বলে ওঠে, "বোলোপে"।
আমি তাকে বন্ধু হতে বলি। কন্টিকারির পাতা স্মারক
এনে,
সে বন্ধু পাতায়। পাতায় পাতায় রটে যাই আমরা। এক ছুটে তাকে
নিয়ে যাই আমাদেরও গ্রাম। তালাই পেতে বসাই কাজল মাখানো ঘরে। ঘর থেকে অদূরেই বহাল।
সেখানে আমরা একসাথে চাষ করি। ঘুগিতে মাছ ধরি। পেটে ঘাটো খাই। খেতে খেলতেই ছলকে যায় বিকেল।
তারপর আবার সেই তড়ার পথ বেয়ে পাহাড়।
ফেরার পথে চোখ রাঙিয়ে ওঠে হাজার সিঁদুরে মেঘের
চোখ। মুথাঘাসের মাঠ পেরোতেই, ভয়ে কাঁপন ধরে যায়
কাজললতার।
―সে বলে, ' বোলোপে '...
রক্তে আমার আদিম জাগরণ।
জাগ্রত চোখে চেয়ে উঠে দেখি,
সারা আকাশের লাল নিয়ে,
যেন এক অন্ধ কবি লিখে চলেছেন
এক অনন্ত, হিম বর্ণের
কবিতা...
No comments:
Post a Comment