কিশলয় ঠাকুরে'র কবিতা
হাতে গোনা হাত
১
আমাদের দূরত্ব বেড়ে গেছে বহুদিন হল,
তোমার পাড়ার সেই সকল লোক আর
রাস্তায় বেরোয় না, যারা আমাদের দেখে হাসত।
আমিও আমার নিজস্ব বাড়ি ছেড়ে
অন্য এক গ্রামের ভেতর এসে থাকি
সবকিছু নতুন এখানে, শুধু মানুষ নতুন নয়।
এ গ্রামে তোমার আমার মতো কেউ
হাত ধরে হাঁটলে তারা হাসে,
যেন তারা কখনো কারো হাত ধরে হাঁটেনি পৃথিবীতে।
২
শৈশবের হাত ধরার মধ্যে ঠিক কি ছিল জানা নেই,
যৌবনে হাত ধরতেই এ হৃদয় চমকে উঠেছিল
তারপর বন্ধুর হাত, কাঁধে, পিঠে এসে
লেগে থাকা ভরসার মতো ঝুলে আছে।
তারপর তুমি এলে,
মধ্যবয়স্ক ঘামে ভেজা হাত ধরতেই
দায়িত্ববোধের মতো ভারী হয়ে ঝুলে পড়ে মাটির
অভিমুখে
ছোট্ট শিশুর মতো কেউ এসে তর্জনী
ধরে নিলে, এ জীবন ধন্য হয়ে যায়?
৩
যার হাত ধরে হেঁটে এলে আজ,
হেঁটে এলে কঠিন সময়।
মাঠ-ঘাট ক্লান্ত শহর ছেড়ে
পড়ন্ত বিকেলে যার হাত ধরে এসে দাঁড়ালে
বিস্তৃর্ণ ফাঁকা মাঠে।
যার হাত থাকে খাতায়-কলমে, কুকুরের মাথায়।
আদরের মতো বোলাতে বোলাতে মসৃণ হয়,
ধান কাটা কাঁচির হাতলে লেগে থাকে যার ছাপ
সেসব খুঁজতে গিয়ে দেখি,
তুমি নও, নিজেই নিজের হাত ধরে আছি!
No comments:
Post a Comment