লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, July 19, 2020

অরিত্র চ্যাটার্জি

অরিত্র চ্যাটার্জি’র কবিতা

হাসির কথাই তো হচ্ছিল 

নাও এইখানে আমার গান, অবশিষ্ট পাণ্ডুলিপি ছিঁড়েখুঁড়ে ফেল, কেটেকুটে নাও টুকরো লজেন্সের মতন, মুখে পুরে চোষ, কামড়াও, গেলো, আমার কিছু আসে যায় নাআমার কিছু আসে যায় নাবার বার বলি, বলা প্র্যাকটিস করি, করা তো দরকার নাকি ফাঁপা দুর্গের ভেতর বোতলবন্দি হয়ে আছি তিন মাস ইস্তক, দেখি বাসে ট্রামে ঝোলা অবিন্যস্ত মানুষ, উফ কতদিন ঝুলিনি না-মানুষের ভিড়ে একটা তির্যক প্রশ্নচিহ্নের মতো, আমার খোঁচা খেয়ে খেয়ে তোমাদের আস্তিনে ফুটো হল ফুটো তো নয় যেন সুড়ঙ্গ সমান, গেরস্ত ব্ল্যাকহোল, কালো ফুটো শাদা ফুটো বরাবর তোমাদের আস্তিন বেয়ে আমি কিরকম অনায়াস সেঁধিয়ে যাই, গলে পড়ে যাই হাজার হাজার মাইল, না না এসব পরিমাপ কার্টেজিয়ান ছিল না কোনোদিন, অতিসরলীকরণ করতে যেও না, বার বার বলি, কাকে বলি গুলিয়ে যায়, আয়নার সুমুখে দৈববাণী হয়, উল্লম্ব সীমিত প্রতিকৃতি আমার ওই, আয়নার ভেতর কদাচ ইনিয়েবিনিয়ে কাঁদে, উফ কি ঘ্যানঘেনে, মেলাঙ্কলিক এসব কান্নার সুরের ফুরিয়ার ট্রান্সফর্ম করা বৃথা, নিছক সময় নষ্ট, শুধুমুধু কিছু বিজবিজে লাইন, হোয়াইট নয়েজআমার যা দরকার ছিল, কোথায় সেই  অরুন্তুদ গ্রাউল, গলার খাদানে তলানিসর্বস্ব শুধু খুচরো ধ্বনিরা পড়ে আছেগুনেগেঁথে খরচ করছি আর কতদিনবল কতদিন , রক্তমদ দিয়ে আমার গলা বুক ধুয়ে দিলে না তোমরা, কিভাবে যুদ্ধে যাব, ঘুমের ভেতর, মারা যাব আমি, এই নিয়ে তোমাদের কূটকচালি, ফিসফিসে পরিকল্পনা কিছু থেকে থাকে তো এইবেলা বল, বলে ফেল আমার জন্য তোমরা কি ভেবেছ, কতদিন যাবৎ পরিলক্ষিত হইতেছি তোমাদের রাডারে, অন্তত একবার লক্ষ করেছ আমায়, আমার জামার রঙ, কোন আঙুলেতে তিল, হ্যাঁ, হ্যাঁ, তোমরা নিশ্চয়ই জানবে, পুনরায় ডেটাবেস ঘেঁটে দেখ, আশ্বস্ত কর আমায়, মুখ তুলে চাও, আমায় একটিবার দেখ, এইখানে কালো পাথর ও শাদা পাথরের নিচে থেকে কি প্রবল হাত নাড়ছি আমি, কয়েকটি সম্ভাব্য প্রেমিকারা আমার ছায়া ডিঙিয়ে চলে গেল এই , হরির লুট, দরগায় সিন্নি, গির্জেয় মোমবাতি , বদর বদর, ইনশাল্লাহ, তোমাদের ভাষায় এই তো বলছি টরেটক্কা, টক্কা টরে সুভাষিণী অপারেটর ওগো, কান খাড়া করে শোন, আমার নাম জিজ্ঞেস কর, কতদিন ঘর করছি নিজস্ব শবদেহের সাথে জানতে চাও, ওয়াও, বল ওয়াও, কি সুইট আপনি বল, বল কতখানি কাঁচা মাংসের প্যাকেজ, আমার অবশিষ্ট হাড়মজ্জার বিলগ্নীকরণ করলে তোমাদের খেমো এজেন্টের দল আমার পশ্চাদ্দেশে ঘুরঘুর করবে, গালে চুমু খেতে রাজি হবে ভাড়া করা মেয়েমানুষ আমায় বল, যাতে অন্তত শেষবারের মতো, আরেকটি বার হলেও আমি তোমাদের সহাস্য প্রত্যাখ্যান করে ফেলতে পারি


কয়েকটা সঠিক প্রশ্নের অপেক্ষায় বসে আছি

অর্ধেক জীবন এইভাবে কেটে গেল

একি খুব বেশি চাওয়া-গ্রিল বারান্দা থেকে মিটসেফ

ঠাণ্ডা মাংসের মতো চাহিদারা ঝুলে আছে,

একটা খাপছাড়া নাট্যচিত্র অদ্যাবধি চলে আসছে

আমার তাতে পাহারাদারের পার্ট, নিরন্তর পেতে থাকা ওত্‌

পা থেকে মাথা অবধি বিজবিজ করে লাল পিঁপড়ের দল

আঁতুড়ে খেলে না কেন ভাবি, মাথার ভেতর টলমল করে

এইসব দত্যিদানব, আধখাওয়া প্রশ্নের উত্তর আমি এখন জানি

আমি জানি আমার দুঃখরোগ, মাথার মধ্যে অবিরাম ঝুমঝুমি জানি

খাটের নিচে কত কটা পোড়া দেশলাই, শাদা পাতা আমি জানি

তোমরা ব্যস্ত যেসময়, তোমাদের সুখ ভরা নালিশী গল্প নিয়ে

আয়নার সামনে একা এইসব প্রশ্নোত্তরের মহড়া করেছি আমি

ভাবি, কেউ যদি কখনো জিজ্ঞেস কর

অথচ ভুল, ভুল-শুধু ভুল কথোপকথনে কেবলই ছেয়ে গিয়েছে আমার এপিটাফ


অনন্য স্বর্ণবেলচা

ডিমের ভেতর মৃত্যু করে স্ফীত প্রজন্মের খোঁজ”—অনন্য রায়


শীতঘুম সন্নিকটে এলে আমি সন্ধান করে থাকি ডিমের

অনায়াস বিড়ে পাকিয়ে ঢুকে যাই ফাঁপা খোলসের ভেতর

এইখানে কথা ছিল আয়োজন স্বপ্নের, স্বপ্নের ভেতর মৃত্যু

স্যাঁতসেঁতে চেতনারা তিনমাসব্যাপী আনাগোনা করে

ঘুমের মধ্যে কেঁপে উঠি, টের পাই, গেরস্থজাত টোটেমের স্ফীত

উরস বিদীর্ণ করে ফুলে-ফেঁপে ওঠে ঘোড়া, ইওসিন প্রজন্মের

সেই আদিমতর ঘ্রাণ স্বপ্নসন্ধান করি, আমাকে বল যদি পাও তার খোঁজ

2 comments:

  1. অসাধারণ দুটি কবিতা ❤️❤️ মুগ্ধতা গো।

    ReplyDelete
    Replies
    1. অনেক ধন্যবাদ তোমাকে

      Delete