লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, July 14, 2020

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল

দেবীপ্রসাদ বটব্যালে'র কবিতা

 

মধ্যবর্তী

যেভাবে ভালোবাসলে মধ্য দাম্পত্যে চেগে ওঠে প্রেম

সেভাবে বাবলা কাঁটায় চোখ বিঁধিয়ে দিয়ে

হেঁটো ,

পড়ো, সুবচনীর পাঁচালি, হাঁসের রূপকথা

আর

মনির ভিতরে হলুদ সাপের গল্পে জমা রেখো

সোনালি খোলস।

এক একটা উড়ো'খই দিন ভেসে এলে, হেঁসেলে

কুপির আলোয়

আসমান ভেঙে নামে জলজ ঢেউ, ঢেউয়ের

ফোকরে জাফরানি মাছ

অলক্ষিতে আকর্ষক ঝুলেকুয়াশা বুননে রজত

মাকড়সা ফাঁদ।

গল্প করতে করতে অবলীলায় ওড়ে বুনোহাঁস,

প্রাচীন পৃথিবী,

যা-সব একদিন ছিলহাতের নাগালে, সলতে

পোড়া তেলে

উঠে আসা সন্ধ্যা'গন্ধের মতোনাগালের কাছে,

তারার,

আকাশপ্রদীপ হেমন্তে উঠেছে, হিমের আকুল

স্পর্শে,

আঙুলের ফাঁকে একপল থমকে, গলে গেছে

নিতান্ত নিরুপায়

ওম। উষ্ণতা খবর আজ ইতিহাস, মিথ্যা নয়

গাঢ়তম ওম

নৈর্ব্যক্তিক, ধারণের কচি ডগা থেকে শিশির

ঝরেছে,

বহুগামীতায় ভ্রমিত মধ্য চল্লিশ

তেজাবের মতো তাকে ভুলভেবে বৃথায় নষ্ট

সময় ।।

তবু ফিরে আসে ভালোবাসা, চশমার পিছে,

কিয়ৎ ঝাপসা

ঘ্রাণে চেনা,স্বেদ'সৌরভ, স্পষ্ট হয় টাটকা ফুল

মালা, বাসি'জল ছাপ

আমাদের মমির খাপে বহুযত্নে রক্ষিত সময়

যক্ষ্মিনী সমর্পনে

হীরের নাক ফুল, হলুদের বন, পথভোলা

পথিকের মন

বাঁশির আওয়াজ, বাবলার বনে বাজে কাঁটা'সুখ

অন্ধ সম্মোহন


মেলা

 

কিছু কিছু দিন, মস্তিষ্ক বিক্রি করে দিই,

হৃদয় ফাউ।

গাজনের মেলায় চড়কগাছ দেখতে দেখতে

'শিবে'কে জিজ্ঞাসা করি বাণ মাহাত্ম্য

সে তখন পাঁপড় ঠোঁটের বর্ণালী !

ভাবছি উড়ুক্কু যানে চড়ে শনি চলে যাব

ওমনি ত্র্যহস্পর্শে

ডুগডুগির শব্দটা মাথার ভিতর পাক খায়

নেমে আসে বুকে , জঠরে,

জ্বালিয়ে দিয়ে

ঘুঘনির মতো ইচ্ছেরা মটরে আলুদোষ মাখে !

বহু মেলা তেলহীন

নাগরদোলায় অলৌকিক ঘুর্ণন সেরে নেমে আসে

আমাদের এক শালপাতা

ফ্রি খিচুড়ি। দশ নয়ার ফিরফিরি ঘোরায়

আনাড়ি বাতাস,

মেলায় এক কোনে বেচতে বসি পাতার জিবে

দেওয়া তালপাতার বাঁশি,

সেও বাজে ! সুরে ভিজে গায়ে পড়ে একহারা

জ্যোত্স্না,

তখনই ভেতরে হ্যাচাক্ জ্বলে, বাইরে বাউল

গায়, সে পদাবলী পড়েনি

আমি মাধুকরী কুড়িয়ে, সাজান পিরের থানে

দিয়ে আসি

প্রাচীন ধুপের গন্ধ, আর কিছু অলিখিত

লোকসান সংবাদ


সাতখণ্ড অমনিবাস

 

মাত্র সাতদিনে শোক ঝেড়ে ফেলে যেরকম তাজা হয়ে উঠেছো,

তার সাথে খাজা কাঁঠাল আর ডুমো নীল মাছির

অদ্ভুত মিল।

 

তোমাকে কে ছেড়ে গেছে,

তুমি কাকে ছাড়োনি,

যে তোমাকে ধরে আছে,

তুমি তাকে ধরোনি,

 

এইসব খেজুরেবিলাপ,

ঢ্যামনের আমসত্ত্ব। কড়ারোদে শুকোতে শুকোতে চাটের টাকনা যেমন

ছায়াকে খানকি বলে গালি দেয় --

উপরবাগে এক উড়োজাহাজ দুঃখবিলাস তখন

উইন্ডো সিটে চোখ রেখে

অন্যের বাগানের লাল টিয়া দেখেকিংবা ময়না,

সে নিষিদ্ধ পাড়ার বাসিন্দা তুমিও তো ছিলে একদিন----

 

অবৈধ জলের ভিতর ঝিনুক প্রবাল থাকতে পারে

সাথে কুমির হাঙরও, এসব জেনেও

আমার অখণ্ড অবসর জুড়ে ঘ্যানঘ্যান করে

সাতখণ্ড অমনিবাস


2 comments: