সম্পাদকীয়
চারপাশে
ঘটছে অনেককিছুই। ঘটনাবলীর পক্ষ থাকারা চুপ, বিপক্ষে যাঁরা সরব হবার কিছু এদিকসেদিক চেষ্টা। অথচ জীবনের গতি থেমে নেই। আসলে, এই 'গতিবেগ' বিষয়টি বড়োই
অদ্ভুত। ১দিকে সে যেমন অস্তিত্বের জানান্ দিতে পারে, আরেকদিকে তার পরিবর্তনের অস্বাভাবিক হার, অস্তিত্বের জন্য বিপজ্জনক্।যদিও এসব কথা বলার প্রয়োজনীয় দায় সম্পাদক /
সাংবাদিক,
এঁদেরই সবচেয়ে বেশি। অতিমারী তার সর্বশক্তি দিয়ে, নামিয়ে এনেছে বিশ্বব্যাপী জীবন-সংকট। আবার, সংকটের কার্যকারণ বিশ্লেষণ করে বিরোধী কথাবার্তা বললেই, রাষ্ট্রের কাছে ১ঘরে। কোনো ১ গ্রীক দার্শনিক বলেছিলেন, জনগণের তৈরি রাষ্ট্রের চরিত্র নির্ধারিত হয় জনগণের সার্বিক
চরিত্রের মধ্যে দিয়ে।সত্যি কি রাষ্ট্রের সাথে জনগণের কোনো নির্মাণ বিষয়ক
আন্তঃসম্পর্ক আছে? সমস্ত বিষয়গুলিই তো
কোনো না কোনোভাবে সংক্রমিত। সেটা হয়তো কোভিড-১৯ নয় কিন্তু ক্ষতিকারক আরো বেশিই। খাবার / ওষুধ / শিক্ষা / দৈনন্দিন পরিষেবা /
ইত্যাদি সাংবিধানিক শর্তগুলি, লাভজনক
লেনদেনকারীদের হাতে উলঙ্ঘিত। নিশ্চুপ না কি নিশ্চিন্ত না কি নিরাপদ : পরিসংখ্যান
অনুযায়ী কোন পক্ষ বেশি? তথাকথিত
ক্ষমতাসীনের বিরোধিতা করা সকলেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী সংখ্যালঘু। তবু লড়াই
চলছেই। দেশদ্রোহী তকমা পাওয়া ৮১বছরের কবির সমর্থনে এগিয়ে এসেছে, প্রজন্মের কিছু তরুণ / উত্তরপূর্ব বরাবরের মতো তোলপাড় /
পিছিয়ে নেই সোশ্যাল মিডিয়াও। এর ভিতরেও রয়েছে ১টি ৩য় পক্ষ, যাঁরা নিরন্তর খোঁজ করে চলেন সংকটের সমাধান।কবিতার
ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, ৩টি ধারা। নিশ্চুপের
দল,
চিরকালই সমপ্রবাহ ধারাটির সমর্থনে ১ রৈখিক পক্ষীয়। অর্থাৎ, শাদা বাংলায় চলতির প্রত্যাশী। যা চলছে যাতীয়
কপিপেস্ট। বিপক্ষের ধারাটি সমসাময়িকতার সমর্থক। অর্থাৎ, ঘটনা ঘটছে বলেই সাহিত্য (তথাকথিত জনবিচ্ছিন্ন বিষয়ক সাহিত্য
নয়)। সময় পাল্টায়, কেবল ঘটনা পাল্টায়
কিন্তু ঘটনার চরিত্র পাল্টায় না। সুতরাং কবিতাও পাল্টে যায়, কবিতার চরিত্র
নয়। আর ৩য় পক্ষটি হল, সেই নিরন্তর
সমাধানকামী গবেষকের মতো নতুন পথের সন্ধানী। যাঁরা এই 'ক্ষমতা' শব্দটির প্রতি
স্বতন্ত্রভাবে আস্থাহীন। আর, এই কারণেই তারা
তথাকথিত 'জন-বিচ্ছিন্ন'। আদপে, 'সাধনা' বিষয়টিই অবশ্য
স্বতন্ত্রভাবে জন-বিচ্ছিন্ন, যার কারণ
নির্ধারণের শর্তগুলি এখনোও প্রয়োগগতো পর্যায়ে অনাবিষ্কৃত। সুতরাং, এরপরেও যদি লড়াইয়ের ময়দান অবশিষ্ট থাকে, তা শুধু নির্দিষ্ট ২টি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল : চর্চা এবং 'কি / ক্যানো' বিষয়গুলির আভ্যন্তরীণ-সম্পর্ক এবং এই কথাটির প্রধান শিক্ষক হলো জীবন ও
ব্রহ্মাণ্ডের ওপর গভীর পর্যবেক্ষণ। অতএব, চর্চা বাড়ানো জরুরী। ভয়ডরহীন চর্চা / অবাধ চর্চা / মুক্ত চর্চা / গভীর চর্চা, এদেরই প্রয়োজনীয়তা বেশী। যদি জীবনকল্যাণ ও প্রকৃত সাম্যতা
গুরুত্বপূর্ণ হয়, যে কোনো অবস্থানেই
পাওয়া যেতে পারে সমাধান।
শিল্পী :
প্রতাপ মণ্ডল