লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Tuesday, July 13, 2021

অমিত পাটোয়ারী, ১৬

                         অমিত পাটোয়ারীর কবিতা

 

আই হোল

 

দিদিমার শ্বাস উঠছে হসপিটালে

প্রবাল বসানো আংটি সমুদ্রসৈকতে ছুঁড়লাম

অ্যাসিড ভেবে ভুল করে হারপিক-পায়ী হল বন্ধু

 

কী স্বচ্ছ এই সবকিছু

বাথরুমে জলের বালতিতে।

বক্র কেবল চোখ, ভ্রু-যুগল, সিলিং আর

একটার নিচে একটা না ফেলা

ক্যালেন্ডার

 

এগরোল

 

ও আজকাল নিয়মিত আসে না

কখনো উপরতলায়, কখনো নিচে গুঁজে দিচ্ছি নিজেকে

বাড়িতে না কাটা মাছ এলেই মনে পড়ে

আমার আর মায়ের রক্তের গ্রুপ আলাদা

পুচকুটা মামমামের কাছে লেগে থাকে আঠার মতন

বাবার সুগার, চোখে ছানি

একটু একটু করে কাটছে

 

আমাদের পায়ের তলায় মাটি সমতল নয়

অবতল। যেমন স্ন্যাক্স্ হোটেলে থাকে!

 

হাফসোল

 

পদ্মপাতার উপর ভগবান দাঁড়িয়ে ছিলেন;

পৃথিবী তখন মাটিশূন্য।

একটা আশ্চর্য বড় পুকুর,

যার পাড়ে বসে অশৌচ খন্ডন করতে হয়

 

সাঁওতালডিহি থেকে মাটি এনে

ভগবান তৈরি করলেন ঘাস

 

মেয়েদের জন্য গাছের আড়াল

 

আড়ালে

পাতালবাসিনী সূত্রধরের সাজপোশাকে এসে

ভগবানকে বানিয়ে দিলেন

কাঠের রাস, স্নান, ব্যাধ,

                             দূর্বা...

 

বাই পোল

 

ইটসুড়কিপাথর নিয়ে তেড়ে আসছে, রাস্তায়।

শুনশান

 

অদ্ভুত পটিয়সী শাল

দরদাম করছি, যেন ইটসুড়কি ছাড়াই

 

আমরা ঠান্ডা, স্থিতধী, স্থৈর্যবান, সহিষ্ণু

আর ওরা

ওরা

ওরা এক একটা...

 

ধুস শালা, আর লিখবই না!

আমিনা তাবাসসুম, ১৬

                     আমিনা তাবাসসুম-এর কবিতা

 

নিস্তব্ধ শহরের রানি

 

দুঃখের সমস্ত চেতনা টুকরো টুকরো করে চিবিয়ে খেলে

সালোকসংশ্লেষ আর রসায়নে কোনো পরিবর্তন হবে কি জানা নেই

কিন্তু এক বুক পাথর বয়ে নিয়ে একটা সাম্রাজ্য চালনা করতে

অনেক দম লাগে বস!

বিষাদের পরতে পরতে সিগারেটের উড়ন্ত ধোঁয়া সমানুপাতিক...

টমেটো সসে চিনির বিকল্প নেই জানলেও

বিশ্রী শব্দে ডেকে ওঠে সকালের কাক,

তৈরি হয় নির্জন কারাগারে চিৎকারের বানভাসি বন্যা।

এখন আমি নিস্তব্ধ শহরের রানি

রহস্যের দুনিয়ায় যতরকম পাপ থাকে

আমি আত্মস্থ করি

যতক্ষণ না শেষ হয়ে আসে আমার অন্তিম নিঃশ্বাস।

তারপর একদিন মোরগের ডাকে চোখ না খুলে

পাড়ি দেবো, বিষাদের টুঁটি টিপে নিয়ে

বহু বহু প্রজন্মের আদিম বিছানার গর্ভে।

 

বাইশ থেকে পনেরো

 

অপেক্ষা শেষের গন্ধ কিছু অন্যরকম ছিল

অনুভব বুঝতে দেয় না কষ্টের মহড়া

সামনে বোধহয় আলো অন্ধকারের লুকোচুরি আছে

তাই শ্বাস বদলে খুশি আসে অথবা কোনো স্বপ্ন...

 

জোৎস্নার পর চাঁদ খুঁজে নেয় প্রেম

কোনো অবসর অথবা নতুন নিয়মের ভাঁজ থেকে,

এদিকে শ্রাবণে বসন্তের ডাক শুনছি আমি

অন্যথায় উজাড় হওয়ার অভিসার

ওত পাতে কাব্যের শহরে।

 

বাইশ থেকে পনের...

হিসেব গোলমেলে বেশ

আমি পরিষ্কার শুনতে পাচ্ছি

অপেক্ষা আমার দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে অবিরত।

 

নির্জন শহরের চিলেকোঠায়

 

অগোছালো কাব্যের গণ্ডি পেরিয়ে এসে খুঁজি অক্ষর

মেঝের ওপর ছেড়া কাগজের স্তূপ পাশে রেখে

দৃষ্টি ফেরায় আগামীর বাক্য প্রসবে

এখন একটা ভালো কবিতার জন্য এ শহর তল্লাশি করতে হবে

বৃষ্টির মুছে যাওয়া দাগের থেকে

কিংবা আবহাওয়ার মসৃণ ত্বক বেছে নিয়ে।

 

নির্জন অন্ধকারের  চিলেকোঠায়

যে অতীত লেখা আছে সমুদ্রের ভাঁজে ভাঁজে

তাতে এ খোলা আকাশ আর ওই বিষন্ন পেঁচাদের রাজা

জেনে গেছে অবসাদের ভাষা।

এক টুকরো চামড়ার নীচে ফুরিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য্য

কোনো কাব্য লেখেনি কখনও।

তবু সকাল হলে ডেকে ওঠে প্রাচীন কবিতা

জ্বলন্ত সিগারেট পোড়া প্রাণের উচ্ছ্বাস

এই রাত লিখবে আবারও

গহন কোনো মেহগনির গহ্বরে

কিংবা সময়ের অনিশ্চিত রাজসভায়।

সন্দীপন দাস, ১৬

                     সন্দীপন দাসের কবিতা

 

জ্যা

 

আমাদের কোনো আকাশ নেই

মা সেই থেকে কেবল অনাদির কাছে

হাত পেতে বসে আছেন তো বসে আছেন

তবু হাতে মিলছে না আগামী দিনের রসদ

আমাদের কোনো আলো নেই

তবু আলো দ্যাখার আকুলতা আছে...

যে আকুলতা বুকে চেপে প্রিয় গাছগুলিকে হাঁটাতে হাঁটাতে

বাবা মাথা নিঁচু করে চলে যান গোয়ালঘরের দিকে...

#

সন্ধে নামে... মা উঠে পড়েন

 

জীবন সেদ্ধ করতে করতে আনমনা হয়ে

তাকিয়ে থাকেন হারানো পথের মতই...

#

অদূরে মায়াবী তূণ লুকিয়ে অপেক্ষা করো তুমি...

#

ডিরেক্টরের মনকেমন হয়...

সমুদ্রপার জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে

একলা টুপি, মায়ের অপেক্ষাতুর চোখ, বাবার হেরে যাওয়া

কিংবা আবছা আলোর গন্ধ...

#

আমাদের কোনো পাখিধরা খাঁচা নেই

কেবল একটা ঝিমধরা পাখি আছে

প্রতিদিন ভোর হওয়ার সাথে-সাথেই

যার দেহ থেকে খসে পড়ে এক-একটা নেশাতুর পালক...

 

দ্য প্রোটাগনিস্ট

 

তোমার অপেক্ষায় আলো ছুঁয়ে থাকি...

#

রাত নামে...

আলনায় বাবার লুকানো ঝাঁপি থেকে লাফ দিয়ে বেরোয় একটা সাদা বেড়াল

মিউ মিউ করতে করতে জীবন শোঁকে আনাচ-কানাচ

রাতের ভাত চাপিয়ে ঝিমটি কাটেন মা

আমার কেমন যেন শীত শীত করে...

তাই দেখে বিড়ালটার খুব অভিমান হয়

ও লেজ উঁচু করে ভাতের হাঁড়ির সামনে

মা আধপোড়া কাঠ নিয়ে ছুটে যান...

ভাত তখনও ফোটে...

সাদা ধোঁয়া থেকে বার হয়ে আসে ক্ষুধার্ত বাঘিনী

আমার ঘেঁটি ধরে নিয়ে যায় আলোর সাম্রাজ্যে

আমার চোখে-মুখে ধাঁধা লেগে যায়

আমি রা কাটতে পারি না... মুখ থুবড়ে পড়ি

তাই দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ো তুমি

ভাবো, এই বুঝি নির্বাণ পেয়ে গেলে...

#

ভোর রাত হয়ে আসে

মুখে রক্ত নিয়ে আমি এখন খিদেপেটে শুধু মা'কে ছুঁয়ে থাকি...

 

রাহী

    

এ ভোর অভিমানী... তোমার অনেক ভাষা।

আমি চেয়েও ফিরে পাইনি সেই সব শব্দদের

যারা বারবার নিজেদের ঈশ্বর বলে দাবি করত...

#

একা মেঘ তখন শান্ত নদীতে ভেসে যায়...

#

ঘরফেরত পাখিদের ডানা জুড়ে তোমার সাজিয়ে দেওয়া

অভিমান, আনমনা সন্ধে...

পলকে আলো সাজাতে গিয়ে দেখি

মুখ লুকিয়ে একা একা কাঁদছে চেনা ডাকনামগুলো...

বন্ধুরাও ছোঁয়াচে কান্না ফেলে যায় আড়ালে...

#

এ সকাল বড় মনখারাপের... তোমার অনেক কথা।

আমি নীরবে কান্না মুছে তবু ফিরে পাইনি

অভিমানের বাংলা ভাষা...

রুবি রায়, ১৬

রুবি রায়ের কবিতা

 

১ । Netflix-এ সূর্যের তীর্যক রশ্মি

 

দারিদ্র্যের স্পেস বার না থাকলে Netflix-এ সূর্যরশ্মি তীর্যক ভাবে পড়ে। 
কেলভিন স্কেলে মা অন্নপূর্ণাকে বসানোর চেষ্টা হয়। 
ময়ূর পাখার উজালা স্বপ্নে যদি সোডা না পড়ে 
তবে তা কোনো কাজের নয়।

       ঠেক থেকে ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে বুঝি

 

ফেলে দেওয়া ফাউনটেনের মুখ খুলে যায়― 
যখন প্রোটেকশন পরিহিত Left over স্মৃতি নানা ফ্লেভারে মিশে ধাক্কা মারে।

আর শূন্য পাকস্থলি দিগন্তরেখায় মিশলে, ইন্টারভেলে― 
পিল বুঝতে পারে এক বঙ্গজননীর পরাধীনতা।

 

২ । দিওয়ানির হাতে কলম 

 

বাউলগান হতে পারলে, ফকিরের নগ্ন গলা থেকে বেরিয়ে 
একতারার সূক্ষ্মকোণী তারে নিজেকে চিরে ফেলে পরিশ্রমের দাম দিতে পারতাম।

কোনো আমিষ-নিরামিশ থাকত না। 

নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌছানোর চিন্তাও নোটিফিকেশন পেত না।

    কিন্তু মনের ট্যানিং কলঙ্ক ট্রান্সফার হল মধ্যমগ্রাম লোকালে 

আর গ্লিসারিন মাখা শরীরে চিপকে গেল।

 

ঠিক বছরের ডাইরিতে লিখলেই কি স্বপ্ন মিলে যায়? 

নারিশড দামোদর তার দুঃখ-হাহাকার প্রকাশ করে... 
নতুবা আনন্দে চিয়ার্স করে― সেটা বলতে পারে গ্রাম্য স্কুলবাড়ি।

ফুলকো চন্দ্রমল্লিকার বুক থেকে 

ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত চুরি করে ঘুমাতে যাই। 
আমার লেবু জলের গ্লাস থেকে মধু তোলে মৌমাছি।

 

    কত নষ্ট হয়ে যাওয়া ডিম্বানু খিস্তি দেয় 

তাদের একটা প্রেমিক দিতে পারিনি বলে।

 

 

৩ । হবু কবিতা 

 

XYZ কোনো চলের চলাচল নেই। 

বর কখনো ধ্রুবক হয় না, তবু চেষ্টার ত্রুটি রাখতে নেই Romantic Dinner Plate-এ।

দিব্যি গিলে লিখেছিলাম একটি কবিতা।

দ্রাঘিমাকে সাক্ষ্মী রেখে সেনসিটিভ আদর চুঁইয়েছিল ফেব্রুয়ারির ছাপা কোনো এক পাতায়।

 ঠোট রপ্তানির গল্প শুকেছিল গরম বিরিয়ানির গন্ধ

এইরকম দুটো প্রতিসাম্য মানুষের দিকে চেঁয়ে থাকে বংশপ্রদীপ।

বুকের হাড় গোনা যায় এমন এক নারকেল দড়ি থেকে 

আমার যশোদা মা ঝোলে... আর ভাবে, 
সরল অনুপাতে থাকতে হলে স্বামীর এঁটো খাওয়া দরকার।

         কলম থেমে শকুন্তলা দুপুরে হবু কবিতা পলাশী চোখে চেঁয়ে থাকে।

প্রসাদ সিং, ১৬

                     প্রসাদ সিং-এর কবিতা

 

অর্ন্তদহন ২ ॥

                             

ঠুঁটো হাতে ছারপোকা ছেড়ে দিয়েছে রাষ্ট্র

ধীরে ধীরে বেদনার সাথে পাতাই বন্ধুত্ব

রাষ্ট্রীয় অন্ধকার চোখ সয়ে যায় বন্য উদযাপনে

বিবর্তনবাদ পড়ছি ছাদ চুঁইয়ে পড়া জলের শব্দে

 

যন্ত্রণা ও বিষণ্নতার মাঝামাঝি বসে আছি 

হলুদ রোদের অপেক্ষায় কাবার হচ্ছে রাত

রাষ্ট্রীয় দূষণে আরো কালো মেঘে ঢাকছে সকাল

নীরবতা লুকিয়ে আছে হলুদ পাতার আড়ালে

 

পাতা মাড়িয়ে, মৃতদেহ মাড়িয়ে রাষ্ট্র এগিয়ে চলে

সহমর্মীদের শোকযাপনে অনুভূতি বিক্রি করছি

মাটি কামড়ে মেটো দাঁতে চুমু দেয় না প্রেমিকা

মুখে মাটি মেখে রাষ্ট্র রূপ নিচ্ছে নদীমাতৃক

 

লেলিহানতায় আগুনের নৃশংসতা মাপা চলছে

ছাইলিপিদের স্থান নেই জীবন্ত সিলেবাসে

হ্যাঁ, আমি ছাই ঘেঁটে দেখার জন্য বসে আছি

অর্ন্তদহনে ঢেলে দেব সভ্যতার ধূসর গোধূলি

মহ. শামীম আফরোজ, ১৬

মহ. শামীম আফরোজ-এর কবিতা

 

লড়াই

 

রোজকার চেনা আমি-র খোলকের আড়ালে

আর একটা যমজের বাসাবাড়ি!

 

রোদ-জল-বৃষ্টিতে মেলে ধরি বাইরেরটাকে,

পালাবদলের খেলায় আঘাতের মিউজিক্যাল

বলটা যখন আমার হাতে এসে থামে

বাইরেরটাকেই এগিয়ে দিই!

সাধ আর সাধ্যের মাঝে সমঝোতা,

পাতলা হয়ে যাওয়া চটিতে নতুন ফিতে,

ছেঁড়া কলারে লেগে থাকা সার্ফের গন্ধ,

ভিড়ের মাঝে ঘামে ভেজা জামা,

সাদা ভাত, সাদা যাপন― এসব দলিলনামা একান্তই তার!

 

স্বপ্নরঙে কাল মিশিয়ে যায় ভিতরের জন,

তারও গুটি কেটে বেরিয়ে আসার লড়াই,

লড়াই― বাইরের আমি-টাকে মুক্তি দিয়ে

পছন্দের নামের পরিচয়পত্র বানানোর!

Saturday, May 15, 2021

অর্ঘ্য কমল পাত্র, ছায়ারোদ ১৫

অর্ঘ্য কমল পাত্রের কবিতা

 

লজ্জা

 

শরীর তো ভাঙা পাড়

শিহরণঅনুভূতি। বেঁধে রাখা

                 পুরোনো নৌকা

 

ছুঁয়ে দিলে কেঁপে যায়।

টলমলে পিছুটান!

জল নড়ে। গুটি গুটি পা পা

 

***

 

বন্দুক

 

বাঁশিকে বন্ধু ভেবে

সুরজন্ম চেয়ে

            একটা রাইফেল

কতই না পড়েছে বিপাকে!

 

ট্রিগারে হাত পড়ে

আততায়ী চিৎকারে

লজ্জিত বন্দুক পিছু হটায়

 

       উদ্ধত কাঁধটাকে

 

 

***

 

প্রচ্ছদ

 

আকাশ যে বিবাহিত

তাকে প্রেমিকা বলতে নেই...

 

এই শোকে স্থির তালগাছ

দাঁড়িয়ে থাকে। মেনে নেয়

               বাজ পড়াটাকেই

 

*****

 

বেণীমাধব শীল

 

চরাচর জুড়ে শুধু ঝাউগাছ।

এখনো নোনা মাটি। বরাবরই

                    চিলেকোঠায় ঢেউ উঠে আসে...   

 

তবু রোদ আসে। তবু জং পড়ে শ্লেষ।

আমাদের, সে না হওয়া বিবাহে

  তরুণ পেরেক পোঁতা আছে

শুভ্রনীল চক্রবর্তী, ছায়ারোদ ১৫

শুভ্রনীল চক্রবর্তীর কবিতা

 

তুমি টের পাওনা

 

মৃত ঠোঁট কথা বললে

      পালকের ওম জেগে ওঠে

পাইনের খাজে লেগে থাকে স্বপ্ন

      পাহারের ভার তীর্যক পথে

তুমি টের পাওনা

কখন বরফ হয়ে যাই স্নানের জলে

 

নাভিপদ্মের আলিঙ্গনে

         স্রোত মিশে যায় বিমোহনে

শেষ দ্রাঘিমায় দাঁড়িয়ে

       কোনো না ফেরা নাবিক

তুমি টের পাওনা

কখন তারা হয়ে যায় সূর্যের অন্তরালে

 

রক্ত ট্রোল হচ্ছে

 

একটার পর একটা রক্ত রোল উঠছে

        অনিচ্ছায় মিশে যাচ্ছে চাকার পাতে

গুটিকয়েক অন্ধকার, ভন্ড আলো সেজে

   পথ দেখাচ্ছে --> সোনার মুকুট --> খলনায়ক

 

রক্তের রোল উঠছে তোমার জলের গ্লাসে

     তবু শ্বাস বায়ু বিক্রি হচ্ছে রাষ্ট্রের দেওয়ালে

        তুমি কিনে নিচ্ছ, মেনে নিচ্ছ সব

           ভালো থাকার অজুহাতে(?)

 

একটার পর একটা রক্তের রোল উঠছে

    রাজার চাকা মেতে উঠছে

        ভগবান হওয়ার খেলায়

 

নৈঃশব্দ্যের কোনো লোভ হয় না

 

নির্লোভ জিহ্বে লেগে থাকে আলগোছে

ঝড়ের আশ্রয়ে ভেঙে পড়ে শিকার

তুমি জানো না কত দেহ মিশে গেলে মাটিতে

অমাবস্যা মেখে নেয় চাঁদের অন্ধকার।

 

শিথিলতা পরিমিত জরায়ুর মন্থনে

হেসে যায় অলিখিত আদর

তুমি জানো না কতটা শক্ত হতে পারলে

মাতৃ দুগ্ধে মেশে সন্তানের কবর।

 

নৈঃশব্দের কাঠ ভোরে আজানের শব্দ মাখে বাতাস

স্মৃতি যত ঝির ঝিরে বৃষ্টির

তুমি জানো না কত রাত না খেলে

শৈশব জলাঞ্জলি দেয় কয়লার হাত।

 

নিষিক্ত পরিবেশের অবগাহন হ্রদে

নিশ্বাস গোনে শেষ হৃদস্পন্দন

তুমি জানো না কত নক্ষত্র মরলে পড়ে

সূর্য মেখে নেয় শেষ রক্ত চন্দন।