লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, November 1, 2020

নাসিম বুলবুল, একাদশ সংখ্যা

নাসিম বুলবুল-এর কবিতা


আত্মদ্রোহ ও কৃষ্ণকলি সংবেদন

 

১২.

ধোঁয়ার মতো দুই ঠোঁট গিলে নেয়

বাতিঘর জ্বালানো পরিযায়ী চুমু বলাকা,

অচেনা অনুভূতির সাথে চুপ করে বসে থাকতে হয়।

 

যাকে খুব সহজে বোঝা যায়

সেই আসলে ভীষণ জটিল,

সহজ বুঝে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি

পরে বুঝি এ শুধু ছায়াপথ না,

বহুদূরের কোনো অচেনা অজানা নীহারিকা।

 

১৩.

কৃষ্ণকলির মুখে সন্ধ্যে নামে নীল আলোর বৃত্ত দিয়ে

সবসময় তার ভাগ্যলিপিতে সোনালী পাতা নেই

পবিত্র নাম ভেবে সন্ধ্যের নিয়ন নিসর্গে

রঙিন রোশনাইয়ে তাকে ডুকরে ডুকরে কাঁদতে দেখি

 

আসলে অন্ধকার কীআমরা বুঝি না

অন্ধকারই জানে সত্যিটাকে না চেনার বেদনা!

 

১৪.

কৃষ্ণকলির জন্য হত্যে দিয়ে মন তোলপাড়

তার জন্য লিখতে পারি ব্রহ্মাণ্ডের ইতিহাস

অথচ এক সময় ইতিহাসকে গল্প কাহিনী ভেবে

কি অবজ্ঞাটাই না করতাম

 

এখন লিখতে চাই মোহর টানে না

তাকে বাঁধনহারা থেকে ফিরিয়ে,

সে যে সৃষ্টিরই প্রলেপসেটা বোঝাতে।

 

কৃষ্ণকলির হাতের রেখায় নির্জন রাত্রির অবকাশ,

অথচ কাছে থেকেও সে ভীষণ দূরের নীলরাঙা আকাশ।

 

১৫.

অন্ধকার হওয়ার আগে

রাঙারোদের পৃথিবীতে সে হাসিখুশিই ছিল

তুলতুলে নরম গালে রোদেলা লাল আভায়

শ্রাবণের শ্রান্ত বিকেলে শান্ত মেয়ের মতো উতলা হতো

একটু ছুঁয়ে দিলেই কৃষ্ণকলি হয়তো গলে পড়ত।

 

অন্ধকার হওয়ার আগে

একসময় এমনই বিকেল ছিল...

 

১৬.

এলোপাথাড়ি প্রেমের কবিতায়

তোমরা কৃষ্ণকলিকে খুঁজলে পাবে না,

বালির ঢিবির বশে সে ঘিরে বৃত্তাকারে...

চিন্তারা গভীর হলে মাথায় বিলি কেটে দেয়

তাসের ঘরের মতো ঠুনকো ছোঁয়া প্রবৃত্তি ভাবলে

 

তার ভীষণ অভিমান হয়আলেয়া হতে চায়।

 

১৭.

মাঝে মাঝে সে মেঘকফিনে

অখণ্ড আত্মার প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়

এবং সেটা ভালোবাসার মানুষকে ডেকেও দেখায়

 

কখনও বা সোনালী যন্ত্রণায়

'জানি না' বলে বিরহী সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে চায়

 

অথচ সে ভুলে যায়

সীমাহীন অদ্ভুতে আদ্যন্তই সেই-ই তো একটা ঢেউ।

No comments:

Post a Comment