লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, November 29, 2020

সন্দীপন দাস, ১৩

সন্দীপন দাসের তিনটি কবিতা

 

১. ভলক্যানো

 

আকাশ মেঘলা, মনখারাপ করে শুয়ে আছে নদী

একটা সারস উড়ে এসে বসে ঠোঁটে এক অদ্ভুত আলো নিয়ে

অন্ধকার তা দ্যাখে, দ্যাখে সন্ধেমণি ফুল, মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবও...

কিন্তু কেউ সেই আলো ছুঁতে পারে না

শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দ্যাখে তুমি কি নিপুণতায় ওই আলো নিয়ে মেখে নাও তোমার সারা শরীরে

আর তারপর...

তারপর ঠোঁটে করে সমস্ত মনকেমন, মেঘরঙা ইচ্ছে

আর সম্রাটের জন্মান্তর নিয়ে উড়ে যাও কোনো এক

ভলক্যানোর দেশে...

আমার সমস্ত ফেরা মিথ্যে হয়ে যায়

দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখি আকাশ মেঘলা, মনখারাপ করে শুয়ে আছে চোখ হারানো একটা সারস...

 

২. দ্রোহ

 

তোমার হাত গলে যে জলটুকু ছলকে পড়ে তা চেনা ব্যথা

দমকা হাওয়ায় উড়ে যায় মেঘ, ধুলোমাখা বর্ণপরিচয়ের ছেঁড়া পাতা... কেবল শূন্যতা জেগে থাকে

এ পথ থেকে ও পথ... ও পথ থেকে এ পথ

অন্ধকারের অবস্থাও তাই, এ ভোরের আলো ফোটার আগেই পিঠে চাঁদ বেঁধে গোপনে পাড়ি দ্যায় সীমান্তে...

আগুনপাখিদের দেশে... ঝরাপাতার দেশে...

 

তোমার খোঁপা থেকে অসাবধানতায় যে অক্ষরগুলো

ছিটকে পড়ে ধ্রুপদ ঘরানার দেশে, তাদের গায়ে লুকিয়ে থাকে গোপন রক্তের দাগ...

তারা এ কবিতাকে একা ফেলে মিলিয়ে যায়...

মিলিয়ে যায় কাঁটাতারের ওপারে...

 

৩. রুটমার্চ

 

মাথার ভেতর ঘুমিয়ে পড়ছে বিকেলগুলো

চেটেপুটে খাওয়া সব মাংসের সাদা হাড়গুলোও...

তবু সন্ধে দেখি, দেখি নিয়ন আলোর নিচে সমস্ত সংযমকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে...

দেখি ভোর চেয়ে বন্ধুদের কল্পতরু বৃক্ষের কাছে মাথা কেটে

বুকপকেটে ছুরি লুকিয়ে সন্তর্পণে সন্ধেমণি ফুলের পাশে গিয়ে বসি... শুনি দিন ফুরোবার গল্প...

উঠোনের পাতাবাহারীর হাত ধরে তোমার পাবলো পিকাসোর দেশে উড়ে যাওয়ার গল্প...

আর তারপর শহর ঘুমোলে চুপিচুপি ফিরে এসে হাঁটুমুড়ে বসা ফায়ারপ্লেসের আগুনে...

 

মাথার ভেতর এভাবেই ঘুমিয়ে পড়ছ তুমি...

No comments:

Post a Comment