লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, November 15, 2020

জেম, ১২

জেম-এর কবিতা

 

সিসিফাসের কবিতা

 

আমার সামনে সারি সারি কাচের মুখোশ রাখা।

রোজ একটি মুখোশ পরি, ঘুরে বেড়াইবইয়ের দোকান

মুদিখানা, হোটেল, মদের দোকান, পার্টি অফিসফের রাখি যথাস্থানে।

কেউ আমাকে বিশ্বাস করে না, যারা করে বলে জানিয়েছিল

তাদের আমি হারিয়ে ফেলছি কবিতার লাইন মনে রাখতে রাখতে।

আর যাই হোক মুখোশগুলো বিশ্বাস চেয়েছিলএকটা সময়ের পর

একটা-দুটো করে ভেঙে গুঁড়ো হল সেগুলোও

এখন অনেক রাত করে যখন ফিরি, সেই পেরেক টুকরোগুলোয় পা ফেলে পিছলে যাই

দেখি কীভাবে আমার বাড়ি দূরে সরে যাচ্ছে আমার থেকে, ক্রমশ...

আমার মুখে দীর্ঘ অবসাদের মতো জেলখানার ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

আমি দূরে সরে যেতে যেতে বুঝতে পারি কোথাও পৌঁছানো সম্ভব না,

অবসরের মোহনা ছাড়া জীবন কোথাওই নিয়ে যায় না।

নদীর মতন জীবন চেয়েছিলাম কি?

হেঁটে হেঁটে বেরিয়ে পড়ি,

স্পষ্ট স্রোতের ভেতর প্রকাণ্ড সব প্রস্তরখন্ড, যতসব মৃত বন্ধুর অভিপ্রায়!

তাদের জিজ্ঞেস করি

কীভাবে এলি তোরা এতদূর!

আমিও আমার মাথাটাকে বয়ে নিয়ে এসেছি সারাজীবন

নদীর পাশেদাগ কেটে কেটে।

 

গিল্ট কমপ্লেক্স

 

পিঠের দিকটায় এখন রোজ ব্যথা লেগে থাকে।

আয়নার সামনে জামা খুলে দাঁড়াইদেখি

অজানা এক ভয় এসে কুচি বরফের মতন জমে আছে।

 

সমস্ত হাড়গুলো ফুসফুসের সাথে পচে জল হয়েছে

একটু আগে পেচ্ছাপ করে তাদের গন্ধ আমি শরীর থেকে বের করে দিয়েছি।

যাদের কথা জানা যায়নিতারা এখন মাথায় পৌঁছে যাবে

তাই অপরাধবোধ আমাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখেছে।

 

আগুন ও কবিতা

 

অতঃপর, আমার সমস্ত কবিতার খাতা পোড়ানো শেষ হল

এরকমই এক সম্পূর্ণ আত্মত্যাগের পরে মুক্তি আসে,

তবুও কেউ যেন শূন্যতা ছাপিয়ে চলেছেস্বাধীনভাবেঅনন্তকাল ধ'রে।

 

সন্ধ্যার বিছানা ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি রাস্তায়, নিজের ছায়ার দিকে তাকাই সম্দেহে,

হঠাৎ বুঝতে পারলাম, সবাই তাকিয়ে আছে অক্ষত অক্ষরের তমসাঘোরে আমার দিকে।

দৌড়ে ফিরি... পোড়া কবিতার গন্ধে ঘর ভরে আছে এখনও

আবার নতুন করে কবিতা লিখি, এবার কবিতা আমাকে পোড়াচ্ছে...

No comments:

Post a Comment