লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, August 16, 2020

কুমার চক্রবর্তী

                                            কুমার চক্রবর্তীর কবিতা

 

সন্ধিপ্রকাশ

 

তোমার দেহের বিদ্যুৎ­­­­তোমারই সন্ধিপ্রকাশ

কী করে প্রচ্ছন্ন থাকবে আজ?

বিরহদীর্ঘ এ জীবন—

 

মেঘকালের স্থলপদ্ম যেন

অথচ চক্রবাক পাখির মতো উড়ে গিয়ে

বসা যেত তোমার তীর্থ কৈলাসে

মণিময় উঁচু উঁচু তটে

স্নায়ুভরে নিতে পারতাম তোমার

মুকুলিত রতিসৌরভ!

 

আমি তো ঘরপথ জানি না

জানি না নিজের কাছে পরিচিত হতে,

আমি সেই হারানো জন্মবীজের প্রকাশ, যেন

দক্ষিণের হাওরে কালিম পাখির ডাক, তাই

গন্ধবতীর দিকে যাবার জন্য

আমার রক্ত গর্জন আজ

তোমারই চন্দ্রহারে ধ্বনিত হোক

 

তোমার ধ্বনিময়তায়

 

তন্ত্রমুদ্রার মতো দু-দুটি তিল পাহারা দেয় তোমার শরীর

যেন শুক আর সন্ধ্যাতারা

অদৃশ্যভাবে পাহারা দেয় তোমার অসম্ভব-আকাশ

 

তোমার অস্তিত্বরাশি যেন ভাটিতে নেমে আসা

সালসাবিল, মধুবনে

ঘুমিয়ে পড়া মধুপবন, কার পরশে যে সংবেশিত আজ!

 

এখনই নদীর জল ফিরে যাবে উলটো পথে, নিয়ে আসবে

মালভূমির পূর্বরাগ আর চন্দন বনের নিদ্রালু ঘুমধ্বনি।

আমি টের পাই সময় কীভাবে স্মৃতি হয় আর স্মৃতি আবারও

জন্ম দিতে থাকে অজস্র আয়না মুহূর্তের, যা কিনা

তোমাকে উদ্ভাসিত করতে চায় গুলশান মুখরিত হর্ষময়তায়

যা আজ সুর হয়ে, রাগ হয়ে, তান হয়ে,

আমাকে বিবশ করে যায়!

 

কাল ও তুমি

 

সন্ধ্যার নদীকূল ভালো, অবলোপী

দেখা যায় জলের বিষাদ

একটি খঞ্জনা পাখি এইমাত্র উড়ে গেল

মনে তার বিস্ময় অপার

বধিরেরা এই পথে আনমনে বয়ে চলে বেদনার ভার

 

তোমার বসন্তকুঞ্জ হয়েছে যে ঋদ্ধ, এইবার

ফুলে–ফলে কোরকের ছলে

কিন্তু জেনো হিমবতী ঋতু অনুবর্তী

একটি ছায়ার মতো বিস্ফারিত, মৃত্যুর কৌশলে

 

যেসব পুষ্প কলি ফোটালে, কী আশায় আশায়

কালের বন্দনাগীত স্তব্ধ হলে

সে-কোন অজানা থেকে ভেসে আসা নিশ্চিহ্নের দান

গ্রহণ করতে হল নিয়তির বরে

জন্মনক্ষত্রের দিকে ছুটে গেল একটি প্রলয়

প্রবল প্রচণ্ড খেলাচ্ছলে!

 

তবু থাকো প্রীতি নিয়ে, প্রেমনদী বেয়ে দিন যাক

আশ্চর্য দিনের পরমায়ু তোমাকে অস্থির করে

ভিড়বে আমার কাছে আজ

 

পেছনেই পড়ে থাক মরণের রক্তচক্ষু, শূন্যগর্ভ মাঠ!

No comments:

Post a Comment