লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, August 16, 2020

সুকান্ত ঘোষাল

 সুকান্ত ঘোষালের কবিতা


কোয়ারেন্টাইন


এক

সবাই মুখবেঁধে চলেছে দেখি

এ সকালের কী এমন হল!

কুমড়ো নিয়ে হাটে আসা লোকগুলো

খুচরো ফেলেরেখে পালিয়েছে

 

দুই

কয়েকবার মেয়েরবাড়ি যাবার সময়

স্টেশনের ওই কাঠেরচেয়ার,

হাঁ হয়ে দেখেছে

মাথায় লোহার হাওয়া, ধুমসো লোক চারটে

আঠার মতো লেগেছিল

আজ প্রথমবার হাত পা ফাঁক করে

বুক উঁচিয়ে বসে

লোকালট্রেনের নিশ্চুপ বাঁশি

 

তিন

গাড়ির শব্দ শুনে ওই ছেলেগুলো

আর তিনটেকুকুর গলি ধরে

অন্ধকারে একসঙ্গে পালায়

এই প্রথম ওরা চিন্তা করে পেল

খিদেলাগা শেষকথা নয়

 

চার

বাতাসে লংকাচারা দোল খায়

মাস্ক ঢাকা দুটো ছেলে-

সরকারিজামা

লাঠি হাতে পাকারাস্তায় দাঁড়ায়

বাতাসের গলা চেপে ধরে

লংকার ঝাঁঝ

 

পাঁচ

মানুষের নখের টুকরো, বয়ে

নিয়ে যেতে যেতে

পিঁপড়ে দুটো রাস্তা রুখে দাঁড়ায়

শরীরের গন্ধটুকুও ত্যাগ করে গেছে

এ তল্লাট

বন্ধজানালার ভেতরে কেউ একাকী

অবশ্যই আছে

 

ছয়

কাঠিগুলো লতাটিকে ঠেলে দেয়

উচ্চতা তেমন এক নিরাপদ কুঠি

যদি ধুলো আর মাটির কথা বলো

একটা তুমুলসড়ক কখনও একসঙ্গে

এত লোক হাঁটতে দেখেনি

 

সাত

ভাত আর রুটির মধ্যে

কোনটি বেশি সাদা

সবজির ঝুড়িগুলো খালি না হতেই

যখন হাট যায় ভেঙে

এ কথা জিজ্ঞেস করো

ঝালমুড়ি বিক্রি ছেড়ে

যে সদ্য রিক্সা কিনেছে

 

আট

একটা গাড়ি এসে

লোকটাকে তুলে নিয়ে চলে যায়

রাস্তার ওপ্রান্তটা ওদের ভারে ঝুঁকে পড়ে

আমরা গোটা পাড়াটা মিলে এপ্রান্তটাও

ভারী করার চেষ্টা করি

তবুও দুদিক সমান হয়ে কাঁটাটা স্থির হয় না

দাঁড়িপাল্লার

 

নয়

পানীয়জলের কাছে দাঁড়িয়ে হাঁপায়

দুপুরের গাড়ি

কে আমাকে বিশ্বাস করে

কে আমার ভরসা করা লোক

পথ এত ছোটো করলে কেন

শিরদাঁড়া সোজা করে আজ আমি

কীভাবে এগোই

 

দশ

একটা প্রকাণ্ড ছায়া

পায়ে পায়ে, চাকায় চাকায়

ভেঙেচুরে ফেলার কেউ নেই

দূর থেকে ওকেও আজ সন্দেহ করি

কীভাবে, ও অশরীরী

প্রচণ্ড বরফ করে সম্পূর্ণ মানুষ

No comments:

Post a Comment