লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, August 2, 2020

অর্ঘ্য কমল পাত্র

অর্ঘ্য কমল পাত্র'র কবিতা


দীঘা-১


তিনটি মেয়ে গল্প করতে করতে

পেরিয়ে গেল ডাবওয়ালাদের...

 

ঝাউগাছের পেছনে আশ্রয় নিল

আমাশা রোগী।

 

নতুন দম্পতি দেখছে

কীভাবে লাল গ্রাস করছে

শেষ বিকেলের একাকীকে।

 

তারপর, ক্যামেরা আমার দিকে ফিরলে

হতবাক আমি ঢোক গিলে নিই

 

দীঘা-২


ছেলেটি মেয়েটির হাত ধরতেই

একটা ছোট্ট ঢেউ

আলগোছে গিলে নিল তাদের।

 

তারপরের কথা

এখনো বলার সময় আসেনি।

 

এখনো আমি খুঁজে চলেছি

ঢেউ থেকে ফেরার উপায়...

 

দীঘা-৩


একা একা

বালিতে গিয়ে দাঁড়াতেই

একটা বক উড়ে গেল।

আরেকটা বক স্থির তাকিয়ে রইল

আমার দিকে

 

সে দৃষ্টিতে— কতটা হতাশা

আর কতটা ব্যঙ্গ ছিল

সেসব আজও বুঝে উঠতে পারিনি

 

দীঘা-৪


সমুদ্র আসলে কিছুই নয়

কেবল হারামি চাঁদ দেখে

প্রেমিকের গর্জন

আর মেছুড়ের অট্টহাসি।

 

সব শেষে শালা লুটিয়েই পড়ে

বালির খাঁজে খাঁজে...

 

দীঘা-৫


শান্তি খুঁজতে এখানে এসে

শুরু হয়ে গেছে ভরা সংসার।

 

যেন আমার মাকড়সার মতো গৃহিণী

সকাল সকালই তুলকালাম করেছে

আর অবোধ বালকের মতো আমি

ছেলের হাত ধরে বেরিয়ে এসেছি

 রাগ করে

 

ঢেউ মাড়াতে মাড়াতে

এতদূর চলে এসেছি

যাতে নিজের জীবনে আমরা

ফিরতে না পারি কোনোদিন...

 

দীঘা-৬


তখনো আমি জন্মাইনি।

আমার বাবা আর মা হয়তো

স্রোত খুঁজতে এসে ছুঁয়েছিল

ঢেউ!

 

তারপর থেকে আমার বাবা

বাবা হয়ে উঠল

আর আমি হতে শুরু করলাম

নোনতা

 

দীঘা-৭


তোমাকে ভালোবাসলেও

নিজেকে ভুলে যাইনি কখনও।

 

ঢেউ লেগে সরে যাওয়া

বালি দেখে

বুঝে গিয়েছিস্নেহ থাকলেই

জন্ম নেয়

কামড়ের গূঢ় অভিসম্পাত

 

দীঘা


হয়তো আমার একমাত্র বান্ধবী

একদিন এখানে আসবে

 

হয়তো ঝাউগাছের নীচে

খুঁজে পাবেকাঁকড়ার ফসিল।

শেষমেশ তাকে উঠিয়ে নেবে

হাতে।

 

আমিও সেদিন খুব হাসব

আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের আনন্দে

 

দীঘা-৯


মানুষ ছিলাম। খানিক বিষণ্ণও...

বালি বরাবর হেঁটে গেছি...

যেন বা কাগজকুড়ানি।

 

সংসারের কথা ভাবতে ভাবতে

সামুদ্রিক বাতাস আসে...

জং পড়ে, উইকেন্ড বিষণ্ণতায়

 

ঠিক এর পরমুহূর্তেই, ঢেউ উঠে এলে

বেবাক আমি, ঈশ্বর হয়ে উঠি


4 comments:

  1. প্রথম তিনটে ফাটাফাটি ❤️
    বারবার পড়লাম

    ReplyDelete
  2. বাহ। বেশ সুন্দর লাগল

    ReplyDelete
  3. 2 r 4 ta vison sundor❤❤❤❤

    ReplyDelete