সোহেল হাসান গালিবের কবিতা
গিঁট
খুলতে কি সবাই পারে?
হোক না তাদের গ্রীবা যতই গ্রন্থিল, থাক ওই
আঙুলে ধূর্ততা। সত্যি যে পেরেছে সে বোঝেনি কিছু।
না-হলে গ্রন্থ নিজেই বলত কথা।
এই শুনে একদিন আমার কলার ধরে টান মেরে
বলেছিলে, ‘তাহলে তুমিই খুলে দ্যাখো...’
জন লক আর হিউমের কাছ থেকে সরে এসে
খানিকটা হিম হয়ে, তারপর
এক আত্মম্ভরি মাছরাঙার আদেশে
জাল ফেলতে গিয়ে কিনা জড়ায়ে ফেলেছি নিজেকেই—
এতসব প্রস্তুতি সত্ত্বেও, হায়,
খুলতে গিয়ে দেখি, ভুলে গেছি গেরো খুলবার
সকল উপায়।
আত্মা
কবরের’পর দিয়ে
হেঁটে হেঁটে কেউ যদি ফের চলে আসে
ভোরবেলা নগ্নপায়, সেই ভয় চুপিচুপি জ্বলে রত্নদীপে
আমার সমস্ত রাত্রি।
রাত্রি কি নিঃসঙ্গ এক বাদুড়ের নাম,
হৃদয়, মৃতের মুশায়েরা?
পাতালে সুড়ঙ্গ আছে, চাতালে ময়ূরশয্যা।
সুড়ঙ্গের এই শেষ মাথায় এসেই জানলাম,
অসমাপ্ত পৃথিবীর পথ।
বুঝেছি, নিষ্কৃতি নয়,
ছাতিম গাছের নিচে বসে, তুমি হে মৌনী, সেদিন
নিষ্ক্রান্তিই চেয়েছিল তবে!
কার থেকে? প্রেম আর প্রত্যাশার ফাঁকগুলো আজ
দাও যদি ভরিয়ে, গলিয়ে দেহমোম
আমি তবে সে তাড়নাপুষ্প হয়ে ফুটি।
ভাষা
হাতজোড় বসে থাকা এই রাতভর
ভোরবেলা বাক্য হয়ে যদি ঝরে পড়ে
যদিবা তাতেই পাখি পায় শস্যদানা
পায় ফুল ফোটার ইন্ধন, তবে আর
তুমুল উৎপ্রেক্ষা কই, কোথায় উপমা—
কেন চাও এই সফলতা? কেন ডাকো
ফণীমনসার ঝোপ?—যদি না চুম্বন
সিল্কবৃষ্টি, স্নিগ্ধ কাঁটা; যদি না এ ঠোঁট
রক্তাপ্লুত গান। ক্ষত নিয়ে, দ্বিধা নিয়ে
এতদিন পরও, ভাষা,
তুমি নতজানু।
এতদিন পরও দেখি মাছের সাঁতার
নভতলে। অথচ তুমিই দিলে ডুব।
ভাসালে হৃদয়। টেনে তুলে তারপর
ছুটেছ কোথায় কার পায়ে বেঁধে মল?
চমৎকার
ReplyDeleteখুব সুন্দর
ReplyDeleteতিনটি কবিতাই বেশ ভালো লাগলো।
ReplyDelete