আদিদেব মুখোপাধ্যায়ে'র কবিতা
জ্বলন্ত ঘরের ভেতর নাচ
১
একজন
মৃত লেখকের ডায়েরি
কাঠের
আলমারির ভেতর
অনেক
অন্য বইয়ের সাথে
স্থির
হয়ে
অপেক্ষা
করছে।
‘খুব
শিগগির আসব’, বলে
তিনবছর
আগে
স্যাম হাওয়া হয়ে গেল।
আমি
দেশলাই জ্বালি
আর
তোমার কথা ভাবি
আর
শিখার মধ্যে আঙুল চালাই,
সিদ্ধান্তে
আসি না।
চল্লিশ
বছর কেটে গেলে
কেচ্ছা
ও কোলাহলের ওপারে
জ্বলন্ত
ইশারা উঠে দাঁড়ায়।
রাত
ঘন হলে
মৃত
লেখক
আমার
সাথে কথা বলবেন।
২
বেসিনে বীর্যপাত
এই
প্রথম না।
চোখ
ধুতে গেলে
হাতের
আঁজলায়
মণি
ঝরে পড়ে।
বলা
হয়েছে, এ এমন এক পাপ
যা
বাদ দিলে কোনো পুণ্য নেই
এমন
এক অসুখ
যা
বাদ দিলে কোনো সুখ থাকে না।
২০১৪,
জয়পুর।
হোটেলের
ঘরে শুয়ে
তোমার
জন্যে
কাতরাচ্ছিলাম
আমি।
৩
আমি
একটা শহরে আছি
যেখানে
কান্নার শব্দ ভেসে আসছে
আর
ধোঁয়ার ভেতর হারিয়ে যাচ্ছে
কারোর
বিষাদ।
সরাইখানার
আলো যদি পথ দ্যাখায়
যদি
মুখ কালো করে সিগারেট
আর
ক্লাউনটি যদি চিৎকার ক’রে ওঠে
তবে
দেওয়ালঘড়িতে ঠিক বারোটা।
নীরবতা
জ’মে রূপ পায়।
পুরু
হয় ধুলোর আস্তর।
কান্না
ক্ষীণ হতে থাকে।
ব্যথা
ঘনরং, নীল।
এসো,
আমরা ছমছমে রাতের কথা বলি।
৪
সূর্য আর চন্দ্র দুই ভাই
তাদের
মধ্যে এক পুকুর সন্দেহ
পানার
তলায় ডুবে আছে
ফন্দি
আর স্বার্থের জাল
একটা
প্রশ্নকে এবার ঢিল হিসেবে
ছুঁড়ে
দাও
চৌচিরের
মধ্যে থেকে উঁকি দেবে
টলটলে
অতীত
একান্নবর্তী
আদর
ঘিরে
আছে তাকে
৫
রাত্রির ফোঁটা জল হয়ে নেমে এলে
এবার
অনেকক্ষণ
ধরে শোনা যাবে
যন্ত্রের
গোঙানি।
টুকরো
ছাইয়ের মতো শব্দেরা বিছিয়ে
আর
নগ্ন
লোকগুলো
ছুটে
যাচ্ছে
নিজেদের
আড়াল করবে বলে।
কথা
থেকে কথা গড়ায়
কফির
টেবলে,
দপ
ক’রে
ফণাতোলা
আগুন
জ্বলে ওঠে।
কিন্তু
শেষ নয়,
যেহেতু
এটাই শেষ কথা নয়,
যন্ত্রের
গোঙানির তালে
জ্বলন্ত
ঘরের ভেতর
আস্তে
আস্তে
আমি
নাচছিলাম।
১০
মে, ২০১৭
ভালো লাগলো আদিদেব। আরো লেখো,পড়ি।
ReplyDeleteভালো লাগল লেখাগুলি। স্বচ্ছ ও তীক্ষ্ম
ReplyDeleteভালো লাগল লেখাগুলি। স্বচ্ছ ও তীক্ষ্ম
ReplyDelete