অর্ঘ্যকমল পাত্র’র কবিতা
নীলাম্বরী বান্ধবী সে
“কীভাবে
যেন ঝড়ের আঘাতে
খসে
পড়ে ধ্রুবতারা
আমার
মতোই নদী দেখে
ভয়
পেয়ে যায় যারা..."
১.
সিঁ
ড়ি
দিয়ে
ওঠার মুখে
ঘাড়
বেঁকিয়ে থমকে থাকা দু'পশলা;
সিঁড়ির
নীচে বাগান
অপরাজিতা
ফুটে আছে...
২.
বহু
আগে দেখতাম
উদ্যত
ভ্রু-যুগলের নীল চুড়িদার
বহু
আগে...
‘আত্রেয়ী'
তোর নামটা একটা নদীর...
৩.
অযোগবাহ
কবিতাপ্রেমী
ডুব
দিতে পারে না
নদীতে...
ভাসিয়ে
নিয়ে যেতে পারে
স্রোত...
৪.
নদীর
পাশে বসে থাকব ভেবেছিলাম
কেউ
বারণ করবে না।
এবং
ক্রমশ
মিশে যাচ্ছি গর্ভে।
চোরাবালি...
৫.
স্নান
করে ভিজে আসি।
গামছায়
মুছে নিই
পাপ;
কোনোদিন
কী আর হবে না
স্নানের সময়ে বালি মাখা?
৬.
ভেবেছিলাম
একটা অন্য জিনিস
কিন্তু
ঘেঁটে ঘ হল
সমস্ত
সমস্ত
লেখাগুলো
‘আত্রেয়ীর’ জন্য?
না লেখাগুলোর জন্য ‘আত্রেয়ী’?
৭.
কিছু
কথা আছে জড়ো করা।
বলব...নিশ্চয়ই
বলবো...
এত
উতলা!
ঠিক
নয় বোধহয়...
সব
তো বলবোই...
আগে
মোহনায় পৌঁছাতে দাও...
৮.
সিঁড়ি
দিয়ে ওঠার সময়ে
নীচের
দিকে তাকাতে নেই;
ভীষণ
বিপজ্জনক!
পিছলেও
যেতে পারো...
৯.
বৈতরণী
পার হতে পারে না;
মনে
হয়
থামবে
না ভেসে যাওয়া...
অভিভূত
লাগে
নৌকাবিহার...
১০.
কিছু
বলার থাকলে
বলতে
হবে না...
নিস্তব্ধতা
মেপে নিতে হয়।
টের
পেলে বোঝা যায়
উভয়
পক্ষেরই, কিছু কথা ছিল...
১১.
এতদিন
ঝাপসা হয়ে ছিল যে মুখ
তাকে
ফোকাস করলাম;
এখন
ঝাপসা হয়ে গেছে
বাকি সব...
১২.
দিগন্তের
দিকে আর যায় না
চোখ;
ওপারের
সাবাইনা ঘাসের
ইশারা
ইন্দ্রিয়গুলি আর বোঝে না..
ইন্দ্রিয়গুলি ভাসছে স্রোতে...
নদীতে...
১৩.
যদিও
বাড়ি হারিয়ে গেছে
কিন্তু
আত্রেয়ীর কোনো ভয় নেই।
সে
জানে সে আশ্রয় পাবে
কবিতার
বাগানে
অযাচিত
হবে না খুব একটা...
১৪.
খসে
পড়ে গেছে ডানা;
বাবলা-বকুল
গাছের ডালগুলো
খুঁজে
পাচ্ছে না আমায়...
ডানা
খসে গেছে
নদীর স্রোত লেগে...
১৫.
জলের
নীচে আছে
কাদা
আর বালি।
কাদা
মাখবো না..
কিন্তু
বালিতে দোষ কোথায়?
১৬.
নীল
কাপড়ে জড়ানো
এক
মহামেঘ;
গোলাপি ওষ্ঠে জেগে থাকে
বৃষ্টি...
সহস্র
অপরাজিতা ভেসে যায়,
একটা গোলাপের পাপড়ির সাথে...
১৭.
খরস্রোতা
দেহ...
চড়াই-উৎরাই
পেরিয়ে
এগিয়ে
চলে স্রোত;
স্রোতের
ভিতর
বিদ্যুৎ আছে...
১৮.
পিছুটান?
সে
কী ছিল বেশ একটা...
মনে
নেই এখন
স্রোত
খালি ফিসফিসায়--
এগিয়ে চলো...
১৯.
কিছুটা
পাপ জমা থেকে গেছে ;
ধুতে
এসেছি
‘আত্রেয়ী’র
জলে।
পবিত্র
না হোক
কিন্তু
ওই
জল স্নিগ্ধ ভীষণ;
গঙ্গায়
বড্ড বেশি দূষণ...
২০.
সে
তো সৃষ্টিসুখ;
দৃষ্টিবিষাদ
মোহের
ভ্রম
পলকা
জাহাজ
নিবিড়
ঘুম…
২১.
জল
বরফ হয়ে গেলে,
লক্ষ
লক্ষ মাইল পেরিয়ে
পরিযায়ী
পাখি চলে আসে এপারে।
মরুভূমিতে
লেগে থাকে
আজন্ম
হাহাকার...
জলে
ঝরছে, এই চোখ থেকে আমার
আর
সমস্তটা উবে যায়
‘আত্রেয়ী’
নদীর নাম। দু-ফোঁটায়
কিছু আসে যায় না...
২২.
বাহুমূল
থেকে উঠে আসা গন্ধ...
গল্প
বলে যায়।
পাহাড়
থেকে কিভাবে উঁচু নীচু
গড়ায়
জল।
বরফগলা
জলে পুষ্ট
২৩.
এ
জলে, এ স্রোতে নৌকা
উল্টেছে
কত...
অথচ,
ডোবেনি কেউ।
কোনো
প্রাণসংশয় ঘটেনি।
বরং
তারা সাঁতার শিখেছে…
২৪.
কতখানি
টেনেছে বলে
ব
য়ে
যাও
এতদিন
ধরে?
এখন,
থামাতে হলে
কতজোরেই
বা জড়িয়ে ধরব?
২৫.
ওই
যেমন
একটা
ভাঙাচোরা নৌকা
বেঁধেছি
বুকে
আমি
তো জলের মতোই
সহজ
চলব একসাথে…