লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, October 11, 2020

সিদ্ধার্থ দাস, নবম সংখ্যা

সিদ্ধার্থ দাস-এর কবিতা

 

দেবী পক্ষ    

 

চরণ ধোয়া জল

বিলাসবহুল দরবার।

ওত পেতে আছে সিংহাসন।

 

দেবলোক দুষ্টু টিপ কপালে

পাগল চারণ সরু গ্রামের গলি।

শহরতলা ফিরে গুলঞ্চ ভাদ্র

সুন্দরী, প্রেমে পড়ার বিষয়!

 

ধান দুব্যো মাথা ঠেকিয়ে আশীর্বাদ।

দুর্যোগ তোমার বাড়ি মাড়ায়নি

কাঞ্চনকন্যা সবক শিখে প্রেম দস্তুর বরবাদ।

 

অতি কাঁচা হাত কাটে ব্লেড

পেন্সিলে ফুটকি লিখছিল।

কবির বিপরীত কবিতা বোঝে দূরহি।

 

মন্বন্তরে মুখ পুড়িয়েছে যীশু।

মেরী গজে গমন। ফল শষ্যপূর্ণা বসুন্ধরা।

 

বৃথা চেষ্টা ভাই

 

বলি হে দেবেন্দ্র, তোমার পড়াশোনা যদ্দুর জানি

বোগেনভিলিয়া প্রবেশদ্বার।

যেভাবে খিচুড়ি স্কুলে রঙ চিনতে শেখায় দিদিমণি,

স্পষ্ট দেখতে চাই পাওনা ডিম সেদ্দ মাসকাবার।

 

আদতে ভাষা খুঁজছি স্কুলছুট সহজপাঠ

গীতবিতান হারিয়ে যায় স্রোতে।

অফিসপাড়ায় সহকর্মী বন্ধু নিত্যনতুন গবেষণা।

শিশুশ্রমিক গেঞ্জি কাপড় মোছা লালারস।

কৃষ্ণচূড়া পলাশ হতে পারেনি। তবে আসক্ত ঘুরপাক চেতনা।

 

কপালে প্রাইভেট টিউশন বিরহ গৃহী।

এ জীবনে খেদ নয়, তৃষ্ণা নিয়ে ডাকছে মহর্ষি।

সল্টলেক লবনহ্রদ ছিল কোনো এক করুণাময়ী।

 

দিনমজুরের ঘুড়ি

 

গল্পের নিজস্ব সত্তা আছে তাকে শেষ করা যায় নিমেষে। 

কবিতার অর্ধেক উদ্ধার হল আজও, ময়নাতদন্ত চলছে।

ফলিডল শিশি কে সরিয়েছে? নেতাজি অন্তর্ধান

 

মান্যবর, মুনিষ খাটো করার দৈত্য দেখেছি। ভয়ে তটস্থ বেলতলা।

দুপুরে নড়েনি পাতা, ছায়া সুরে এপাশ ওপাশ মগজ ধোলাই।

 

সিন্ধুকে দলিল রেখে প্রসাদী কারবার। অঘটন ডাকাত পড়লে,

ঘোড়ার পিঠে রাজকুমারী চলে ভিনদেশ,

সেখানকার রাজকুমার সুঠাম পয়মন্ত।

 

পিঙ্গল ঘোড়ায় রাজার হিতৈষী, ছড়া কেটে কিস্তিমাত!

যেন রাজকুমারীর আগে পৌঁছাতে পারে বিচারসভায়।

যেন বলা যায়, এ মেয়ে তো আপনার, গ্রামের ঝিউড়ি

আস্ত রাক্ষস রাজা মা'য়ের অভাব চিরকালীন,

পুত্রবধু নয় কন্যা অমাবস্যায়। মেঘ গুমোট বাড়িয়েছে

রাজ দরবারে সেটা প্রাসঙ্গিক কালবিলম্ব প্রয়াস!

 

যে কোনো কবিতা রাজার কন্যা ফিরে পাওয়া টুকরো গল্প।

শাড়ির ম্যাচিং কানের দুল। শ্রাবণ ইনবক্সে রিনিঝিনি..

রাজস্ব ফাঁকি দিলে পেয়াদা ঠেঙানি, তথৈবচ।

আলিউজ্জামান, নবম সংখ্যা

আলিউজ্জামান-এর কবিতা

রাজহংসী, তোমাকে

 

(১)

এসব তোমাকে বোঝানো সহজ না,

কাছাকাছি এলে সকল বৃত্তই বিন্দু হয়ে যায়।

এতদূর থেকে বোঝায় যায় না জন্মের টানেই বৃষ্টি পড়ে...

পাহাড়ি ফাটল চুইয়ে খুব সাবধানে টপকায় পাঁচিল।

 

সিলিং ফ্যানের নীচে শুয়ে আছে অশ্লীলতা।

দেখি,

এখানে তোমার মতো কেউ না!

 

 

(২)

তোমার কথা মনে পড়লে

শান্ত নদীর বুকে জাগে সাপের ভাষা।

মাছ-মাছালি, পাখ-পাখালি ,

যেন বিস্ফোরণের পর বহুগামী বারুদ।

 

 

(৩)

খাবার ও খিদের মধ্যিখানে সাঁকো ডুবে আছে।

ভাঙাচোরা, রংচটা অস্তিত্ব তোমার ওগো...

মাঠে হারানো পিংপং বল!

আমি ব্যাডমিন্টন খেলি মাঝে-সাঁঝে।

 

 

(৪)

একতারা বিহীন লোকধর্মের মতো

রাতের জমানো কফ সকালে বুক বাজিয়ে যায়।

তোমাকে ফেলে পাঁচিলতোলা এনট্রপি,

সকালের কেটলি বাতাসে ভাসিয়ে দেয়

 

আবহাওয়ার পূর্বাভাস।

জলীয়বাষ্প সঠিক জমাট বাধলে।

আজ আকাশ সর্বত্র মেঘলা থাকবে।

 

(৫)

ভিখারির অন্ধচোখে তোমার কাছে ফেরা।

থালায় পয়সা বাজিয়ে বাজিয়ে,

এই গান গেয়ে চলে যাওয়া।


যেন পিঁপড়েদের সমাজতন্ত্র চলে গেছে পঞ্চায়েতে।

 

এবার দেখা যাক!

স্বাদহীনতায় শিশুরা ফেরে কিনা স্তনের দিকে।

 

(৬)

কাটলেই বড়ো হয় পুকুর।

এরকমই জটিল প্রশ্নের সহজ উত্তর তুমি।

 ছায়া ভেসে আছে, শুধু তুমি ডুবে গেছো শরীর।

 

(৭)

তোমাকে জমিয়েছি মাটির ভাঁড়ের ভেতর।

ফুরিয়ে যাবে বলে কখনও বের করিনি।

 

তবু, ছেলেবেলার অন্যমনস্ক হাত থেকে খসে

গিয়ে চূর্ণ বিচূর্ণ মাটি বেজে উঠে মেঝের উপর।

তুমি কি টের পাও?

রাস্তা ভাসিয়ে এখন বর্ষার জল চলে যাচ্ছে

 

ওই নদীটির দিকে...

বিশ্বজিৎ দাস, নবম সংখ্যা

বিশ্বজিৎ দাস-এর কবিতা


মাঠপুকুরের কাটামুণ্ডুরহস্য

 

১.

স্বীকার করেছে ওরা, চারজন ছিল

            শিকারের পদ্ধতিও ছিল ব্যতিক্রমী

জুয়ার আসরে বসে ঠিক হত প্ল্যান

ঘোরের ভিতরে এইসব করে, হাসত

           হেসেই চোখের কোণে শেয়ালের লোল

 

একদিন এভাবেই আসে ফাঁকা ঘরে

    একা পূর্ণিমার ঘুমের শরীরে হাত

মুখ চেপে ঝাঁপিয়ে পড়েছে একজন

    সে রাতে যোনিতে হায়নার থাবা আর

রক্তের সূত্রেই পড়ে ধরা বাপি ডন!

 

২.

পাড়ার ভিতরে তার ত্রাসের আকাশ

কসাইয়ের মতো পুষেছে পিশাচ খুন

                তিনসঙ্গী আরও ভয়ঙ্কর, ধর্ষণের

পরে, ওরা মাংস কেটে ছড়িয়েছে

                           ভাটার পুকুরে

 

তারপর আবার মদের আসর।

                          হঠাৎ হাওয়া!

যে বস্তায় পুরে কাটামাথা ফেলেছিল

জলে, তার খোঁজ মেলে পচা'কে ধরার পরে

 

৩.

তিনমাস লুকিয়ে বাড়িতে ফেরা হলে

         পাগলের ছদ্মবেশে গোয়েন্দা অমিয়

মাঠপুকুরের আশেপাশে ঘুরে জানে

                 পচা বাড়ি ফিরেছে গভীর রাতে

আর,

শোর্ডের উপরে শুয়ে আছে আশঙ্কায়

এই ধরা পড়ে! পুলিশের জালে সত্যি

                       জড়িয়ে পড়েছে, তার

একঘন্টা ঘুম ভেঙে দিল; হাত ও পা

 

৪.

পচার সূত্রেই রবি।

বাপির দ্বিতীয় অস্তিত্বের চাবিকাঠি

                  হাতকাটা রবির অবশ্য

টাকাপয়সার দিকেই লোভ ছিল বেশি

উপরি মহিলাদের পেলে আর কোনো

            দাবী নেই, বাপির কথামতোই তার

 

পিস্তল চালাতে পারদর্শী। আঘাতের

                  ছুরিটিও যে, সে চালিয়েছে

এমন প্রমাণ মিলেছে হাতের ছাপে

 

৫.

অথচ পচার বাড়ি শোর্ড, রবি ছুরি

           বাপির বাড়িতে কিছু নেই!

আর ভিকি?

 

ভাটার গুদাম থেকে তাকে বের করে

থার্ডডিগ্রি দিলে বাধ্য হয় বলতে, খুন

             তারা চারজনই করেছে। খুনের পর

নিজেদের ওই পোশাক গুদামে রাখে

 

পোশাকে রক্তের দাগ চিনিয়েছে ডন

এবার জেরার পালা, আর খেলা শেষ!

 

৬.

ক্ষমতার কাছে মানুষ ঘুমালে তার

অবশিষ্ট থাকে না। এই যে আকাশের

দিকে চেয়ে চেয়ে এখন স্নায়ুর শোক

     আদতে খুনির ছাপ রাখে চোখেমুখে

 

বাপিসহ তিনজন সেই পথে হাঁটে

মাঠপুকুরের পাড়ায় ওরাও ডাকে

         

         বাঘের গর্জন। মদ মাংস আর জুয়া

সঙ্গে লুটপাট তোলাবাজি চলে

এসব কখন যেন তাদের ভোলায়

         ক্ষমতার কাছাকাছি চাঁদ ডুবে যায়...

 

৭.

কী ভীষণ আর্তনাদ

                স্বামীহারা মহিলার এবং শরীর

কুঁকড়ে যাওয়া ভয়, ছাড়েনি তাকেই ওরা

লালসার দাঁতে তখন পরম গন্ধ

 

গন্তব্য হারিয়ে তাকে প্রথমে শোয়ায়

সেও চিৎকার করে, নখের চেষ্টায়

         পারেনি আটকাতে; শুধু ব্যর্থ প্রতিরোধ

 

তখনই শোর্ডের কোপ। এক কোপে ধড়

মাথা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তারপর

     মাথাহীন শরীরে ধর্ষণ নারকীয়...

 

৮.

জল্লাদের মতো শরীরের অংশগুলি

পিস পিস করে কেটে বস্তায় ভরেই

            ভাটার পুকুরে ফেলে। মাথাটি আলাদা

বিলের জমিতে পুঁতে রেখে উধাও যে!

 

ভাটার অফিসে থাকা ছোট্ট গুদামের

ভিতরে রেখেছে রক্তমাখা সব জামা

            এবং পরিকল্পনা মতো সব হাওয়া

 

বাপি ডন খোঁজ রাখে, পাড়ার ছেলেরা

ভেঙেছে তাদের ঠেক। উন্মত্ত জনতা

 দেখে পুলিশের কোনো উপস্থিতি নেই

 

৯.

জেরার এসেছে উঠে এইসব তথ্য

পূর্ণিমা, বিধবা পুত্রহারা সদ্যশোক

            আধমরা করে রেখেছিল তাঁকে, ওই

তাঁর পাঁচকাটা জমির দিকেই ঝোঁক

বাপির লোভের মুখে ওরা তিনজন

আগুনে ঘিয়ের মতো উস্কানি দিয়েছে

 

সেইমতো বাপি

ছক কষে মদ-জুয়া হয়ে আসে

পূর্ণিমার বাড়ি। গোপনে ঘরের মধ্যে

ঢুকে তাক করে ধরার, মাছের গায়ে

যেমন বর্শার কোপ তেমনই জাপটেই

 

        শরীরের শাড়িসহ ছিঁড়ে ফেলে তাঁর

       কোঁকানো কান্নার শব্দ হারায় উল্লাসে...

 

১০.

বাড়ি হাতানোর লোভ ছিল বলে ওরা

প্রথম থেকেই ভাবে খুন করা হবে

মস্তিষ্কের কাছে জেনেছে উপায় এর

জুয়ার আসরে ওরা মতলব আঁটে

 

গোয়েন্দা অমিয় জানে কী করে এসব

বার করতে হয়, পোশাকের রক্ত দিয়ে

নমুনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে

 

কী হবে এবার?

স্বীকারোক্তির ভিতরে কেঁদে ওঠে

পুলিশভ্যান ওদের তুলে নিয়ে যায়

 

কাটামুণ্ডু স্বপ্নে হাসে, ঘামের কপালে...

সায়ক দাস, নবম সংখ্যা

    সায়ক দাস-এর কবিতা

 

ছেঁড়া কাঁথার শব্দগুচ্ছ


অথচ আমি লাল গোলাপ কে খুন করিনি কোনোদিন। আমার স্বপ্নে ঢুকে যায়নি একটা মনখারাপী সামুদ্রিক আটলান্টিস। আমার ঘুম ভাঙায়নি কোনো সনাতনী ভোর কিংবা আমার কাঁধে হাত রাখেনি পারিবারিক শৃঙ্খলা...

 

প্রতিটা উচ্ছৃঙ্খল দুঃখ থেকেই জন্ম নেয় একেকটা বটগাছের মতো কবিতা

 

"I have heard the mermaid singing, each to each

I do not think that they will sing to me..."

 

ছিল না কোনো বান্ধবী। স্বপ্নে চিরকাল তবু এসেছে একটা বন্ধ্যা মারমেড, লেজে করে একটা হেমন্তকাল নিয়ে। আমার যৌবনকে সে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে শেষ দিন অবধি। ও কাছে এসেছে যতদিন একটা আঁশটে গন্ধ ঘুলিয়ে নিয়েছি আমার শরীরের মধ্যে...

 

একটা আঁশটে গন্ধ না চাইতেই মিশে গেছে আমার পুরুষত্বে, ধীরে ধীরে

 

 

অথচ আমি মৃত্যুকে ছুয়ে দেখিনি কোনোদিন। কোনোদিন ভাবাইনি আমায় প্যারালাল ট্র্যাক। আমাকে হাঁটার জন্য যে রেললাইন দেওয়া হয়েছিল, তাতে কোনোদিন ছিলনা সাদা কবুতর। কিন্তু আমারও খাঁচা ছিল, সেখানে খেলে বেড়াত একটা টিয়া, যাকে কথা বলতে শেখাতে হয়েছিল আমায় ছোটোবেলায়। তখনও মাকে জড়িয়ে ধরতে পারতাম, বাবা নিয়ে যেত রেলগাড়ির কাছে।

 

আজ আমি দুটো রেললাইনের মাঝখানে হাঁটি। একটা আমার বাবা , অপরটা মা

 

আমার একটা প্রেমিকা ছিল, ঘাসফুলের মতো। সারাদিন হাসত নবজাতকের মতো। আমার ঘরে প্রদীপ দিত সন্ধ্যাবেলায়। আমার সাথে একাকার হতো মিশে। আমার কাঁথায় বসে গান গাইত। মুক্তো ছিল গলায় একটা, আমি তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম এক মনে। সেও কোনোদিন প্রতিবাদী হয়নি।

 

নদীর ধারে তার পাওয়া শরীরে মুক্তোর হারটা আর ছিল না , যেমন ছিল না আমার দেওয়া ছেঁড়া কাপড়

 

 

কবিতার মতো দেখতে একটা রচনা

 

 ...সাধারণ জীবন

একটু একটু করে বিষের মতো গড়িয়ে পড়াই আমার ভাগ্য। একটা ছোট্ট টেবিল, দু'বেলার চা, আর এই রুগ্ন জীবন। অথচ তোমার স্বর্গ থেকে নেমে আসবে অপ্সরা। তারা অর্ধনগ্ন হয়ে মনরঞ্জন করবে। নালা, পুকুর দিয়ে গড়িয়ে যাবে রূপ, গন্ধ আর বীর্য। আর ঠিক তখনই আমি পাউরুটি নিয়ে বসব খাবার টেবিলে...

 

প্রতিবাদ, এবং...

 

এরপর একটু একটু করে বেগুনি হয়ে উঠবে সূর্য। যেটুকু রাস্তার উপর রক্ত আর মাংস পড়ে থাকবে সেটা মাড়িয়ে যাবে সবে মায়ের কোল থেকে নামা সভ্যতা। স্তন্যপানে পাপ জেনেও সভ্যতার মায়ের কাছে এসে পড়বে রাজকীয় পোকারা এবং একইভাবে দিনের দিন চলতে থাকবে ঐক্যবদ্ধ ধর্ষণ...

 

সবে সবে বেড়ে ওঠা সবার মতো আমি তারপর সভ্যতা বাঁচাতে রাস্তায় নামব

বিশ্বজিৎ, নবম সংখ্যা

বিশ্বজিৎ-এর কবিতা


বোকা মানুষের গল্প

 

পোশাক ও জীবনের কথা,

ভাবতে ভাবতে

মুহূর্ত তৈরি হয়ে গেল।

মুহূর্ত ভাবতে ভাবতে

ইতিহাস। তুমি

মাথা খারাপ বলতে পার

আমি তোমাকে সর্বনাশ।

সময় ঘুরছেঢেউয়ের ভেতর

অসংখ্য বালি চিকচিক করছে

দূরত্ব বেঁচেযে নীরবতা কিনছ

 

খরচ ও পাওয়ার হিসেব

এখন দিগন্ত ছাড়িয়ে... 

মধুমিতা রায়, নবম সংখ্যা

মধুমিতা রায়-এর কবিতা


ক্ষোভ


নদীর থাকে না পিন কোড

হতচ্ছাড়া!

আপনি লালন করে সমুদ্রের ঢেউ,

সাবানের ফেনা

একনিমেষে,ঝেড়ে দেয়

লেখার মাত্রাকে মুছে

চিত্রভানুকে চিরবিদায়

কীসের ছটফটানি?

কে দেয় চাকায় তেল?

সপ্তাহে একটি দিন থামতে পারতো!

সহজে আলাপ যাতে জমে যায়

 

কামারশালা

 

জানালার শিক, তুলো, হাতের আঙুল, লোহা

কামারশালায়

পানপাত্র দ‍্যুতিমান, মাথায় টোপর

ক্ষণজন্মা সহ‍্য করে হাতুড়ির পদাঘাত

 

ঘুমন্ত কমলা হাসে হাপরের নীচে-

কোথাও সেতার

লাঠি দিয়ে জোরে মারো, বালিশ হবে তো!

 

গাছ                  

 

একটা দেওয়াল বার্তা, এক ঘর পুরো খাঁচা

জানালার পর্দা চাঁপাগাছ

ট্রামগাড়ি শহরের ডাল

সবই জীবিত

 

প্রিয় ধূপকাঠি আজ ফুলের বিজয়ী

 

গাছই শেখায় রোজ

আকাশের কাছে যায় কচি পাতা

মূল

   তবু

      নক্সা

         কাটে

              মাটির

                  লালায়

                   

 

স্নেহ

 

সন্ধ্যার উজ্জ্বল তারা গ্রাস করে

মায়ের আঁচল,স্নেহ

শুকতারার নেই আলো

আমাদের খিদে করো দূর

মেঘের গর্জন

সহ‍্য করা

বৃষ্টির ফোটাকে তুলে রাখো

ভাতের কলসি আজ ভর্তি হয় যেন...

ভোরের শাসন যেন চাবুক মেরেছে

গ্রহণের সূর্য ছাড়া হারানোর কিছু নেই আমাদের!