সন্দীপন দাসের চারটি কবিতা
 
১. আলো
কয়েকটা মানুষ জটলা করছে এ রাতে আগুনের সাথে
আগুনের খুব অভিমান... 
অভিমান অদূরে পড়ে থাকা রক্তাক্ত সন্ধেমণি ফুল, 
ছেঁড়া বর্ণপরিচয়ের পাতা, ভিনদেশী অন্ধকারেরও... 
#
ঈশ্বর মাটির হয় বুঝি? 
পরিযায়ী চোখও কখনো কখনো ভাষা... 
#
কয়েকটা মানুষ জটলা করছে শূন্যতার সাথে
চোখে অশান্ত স্বপ্ন বুনে... 
স্বপ্নের খুব অভিমান
অভিমান কাছে পড়ে থাকা মাটির ঈশ্বরের, পরিযায়ী চোখের জলেরও... 
#
আলো কখনও কখনও বিজয় অভিলাষী হয় বুঝি? 
 
২. জেনেসিস
 
একটা তারা খসে গ্যালো তোমার যোনি থেকে
আবারও ক্লোরোফিলের আঁশটে গন্ধ... আরেকটা
নিদ্রাহীন রাত... 
শরীর ভর্তি সেই অন্ধকার নিয়ে বর্ষার ছাদে
মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছো  তুমি
তোমার পেছনে মাইকেল অ্যাঞ্জেলো, পাবলো পিকাসো
#
তারও পেছনে ঈশ্বর... 
 
 
 
 
৩. ঘুঙুর
 
স্বাভা বিক উদ্ভিদের মতো বেড়ে উঠছি আমি
মে মেয়েটি সুন্দর পরিচর্যায় ডালপালা ছেঁটে বড়ো
হচ্ছে
সে বোধহয় জানে আদিম দেবতার গোপন আঁচলের তলায়
লুকিয়ে রাখা ঈর্ষার হাজারো কারণ...
অবলীলায় সে ছুঁয়ে দিতে পারে জলের ব্যথা,প্রতিটি ভোরের একাকীত্ব, ঈর্ষাতুর মেঘের দলও...
 
আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখি...
দেখি মেয়েটির শরীর ঘিরে সূর্য ওঠে
জলের ব্যথার সাথে মিশে যাচ্ছে মেয়েটির সাতজন্ম
আর আমার একজন্ম...
হে ঠাকুর, সমস্ত অহংবোধ কি আজ তবে শামুকজন্ম?
জলের মতো শুদ্ধ হবো...
আমি পিছন ফিরি,অল্প আলোতে খুঁজতে থাকি অন্য আকাশ,অন্য কোনো
গাছের শরীর...
 
৪. দ্য ব্লু প্যালেস
 
অনেকদিন হলো কোনো গল্প শোনাতে গিয়ে কেঁদে ওঠোনি
তুমি
আর আমারও মুক্তি ঘটেনি
দেখেছি আমার চারপাশের অন্ধকার ফুঁড়ে উঠে এসেছে এক
প্রেমের কাহিনী
যেখানে শূন্যতা প্রেমিক, প্রেমিকা তুমি... 
অনেকবার ব্রেক-আপ হয়েছে তোমাদের, তারপর আবার মাটির টানে, 
চোখ উপড়ে নেওয়া চেনা কোনো তূণের টানে ফিরে এসছো
তুমি
তোমার এই বারবার ফিরে আসাটা মেনে নিতে পারেনি 
নদী, জঙ্গল, মনখারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকা
পিরামিডও... 
এমনকি মনকেমনের মেঘ দু'হাতে হাওয়ায় ওড়াতে ওড়াতে
সাহারা ক্রস করে গ্যাছেন ডিরেক্টর
সূর্য অস্ত গ্যাছে,আবার একরাশ অন্ধকার গ্রাস করেছে আমায়
আমি আর সহ্য করতে পারিনি... শহর ঘুমোলে চুপিচুপি
উঠে গ্যাছি
সারাগায়ে অন্ধকার নিয়ে
তুমি আলো হয়ে আসবে বলে... 
#
কতদিন কোনো ভাঙ্গা ইমারতের গল্প শোনাতে গিয়ে
কেঁদে ওঠোনি তুমি
আর...