লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Monday, October 26, 2020

সঞ্চালিকা আচার্য, একাদশ সংখ্যা

সঞ্চালিকা আচার্য-র কবিতা

 

  শুকপঙ্খী

 

 

ভিত কি আছে তবে অন্য কোথাও? তারই উত্তরাধিকার আমাকে পৃথক রাখছে?

আমার শব্দের পুঁজ আর তোমাদের সনেটগুলির মধ্যে সীমা টানা, একটা প্যারাডক্স,

তার বিদ্রূপ আমায় ভুলতে দিচ্ছে না পরবাস।

তবু আমি আয়ত্ত করছি না আদব,

কেননা আমাদের কোন ভাগাভাগি পরিভাষা নেই।

কূলকিনারা নেই, শুধু জল      বুকের ভেতর,

ময়ূর ময়ূর, তোমাদের মাইক থেকে দূরতমে আমি।

 

 

 

"মেঘবরণ চুল, কুঁচবরণ কন্যা" এইটুকু ণ্ডারলাইনে।

অথচ সহজ করে নিতে পারছি না। শব্দের মধ্যে ঢুকে পড়ছে বিদ্বেষ।

"সুপুত্রা সুভগাসতি" বলে এজন্মে সেই তো শেকলই দিয়েছ

সোনায় বাঁধানো নোয়া ড্রয়ারে রেখেছি।

 

দেহে গরম ছাই, বিস্ময় বিচ্ছিন্নতাকে ছাড়িয়ে

পাথর এবং কাগজ জুড়ে জুড়ে নৌকো,

বাঁদী, আমার ঘুঁটেকুড়ানী

আয় লো, সঙ্কেতগুলো বুঝে এইসব অসার দিন শেষ রি।       

 

      

 

তারপর সব হঠাৎ উধাও হলে মুঠোর ভেতর মন্ত্রের জাইগোট, 

আলো দেয় পঙ্‌ক্তির সারি।

 

সেইসব অনুচ্চার্য শিখা জানে আমাদের আকস্মিক উড়ান সম্ভব।

 

বাতাসেই ভেসে থাকতে পারতাম, অস্বীকৃত 

কিংবা বীভৎস ক্র্যাশে ভেঙে পড়তাম ভুল জায়গায়।

কিন্তু না, সমুদ্রের দিকে চলে গ্যাছে ফুটস্টেপস। 

ঠোঁট শাদা, শাদা জিভ, সনেটের বাঁকে বিলাপ ড়ছে।

উড়ছে "এখন তুমি কার?"

কলাবতী রাজকন্যাকে ছুঁয়ে আজও এই নদী বইছে নিঃশর্ত

দয়ালু কৌতুকে বদলায় সময়, এখন আমি শুধুই আমার।

শুধু আমার।

Sunday, October 18, 2020

অনিরুদ্ধ সাঁপুই, দশম সংখ্যা

অনিরুদ্ধ সাঁপুই-এর কবিতা


নির্জীব আখ্যান

পাখি ডাকে, দরজি-দেহে তাই ছুঁচ। স্বোপার্জিত পাখির ডাকদিদিমণির ছাত্র পড়ানো এবং রক্ত জড়ানো ত্বকে আকাশ নামে সন্ধ্যের দিকে। রমণীর বাহু প্রসারণ ও পাত্র এবং জল সচকিত, থমকে। অযথা চিত্রপট অথবা আলোক-চিত্রের মায়া। তুমি কাকে দোষ দেবে কে কবে তোমার হাত এসে ধরল, তাদের ছেড়ে যাওয়া বল! কাঁথাফোঁড়ে দু'চোখ খোলাবুকের কাপড় সরে যায়। এ-ওকে ডাকে তবু কাঁটা থামে দেওয়াল ঘড়ির, ব্যাটারি শেষ। লিখবে ব'লে হাত তোমার পাখির লেজ যেন বা  অথচ তুমি ছায়া-বন্ধনে, বিন্দু বিন্দু, এ-পাড়ায় সকাল-সন্ধ্যে আলো ঝরে পড়ে অযথা কানাকানি, চাকা ঘষটানির ধুম। গোধূলি পা সব একত্রিত অযাচিত কাছাকাছি, আবেগ সঙ্কুল পথে চৌম্বক বারিধারা, ছড়ানো কুন্দফুল, সে আজ শহরে যাবে নয়তো ফিরবে। হাত দুটো কী জাদু দেখাবে, পোড়া তেল-হলুদের দাগ, তার মাছ কাটা দেখতে ভালো লাগে তাই মিথ্যে রক্ত মেখেছ সখি! আঁশ-বঁটিতে কি গলা নেবে? কী অলক্ষুণে সমাচার হেতু নয়নে কাজলরেখা, খোঁপায় দোলনচাঁপার থোক। মিষ্টি হাওয়ায় খুনে চোখ নিয়ে সে আগুয়ান তাই পায়ে মুড়োচ্ছ লজ্জাবতীর বন।

 

হাভাতে আকাশ-রেখা ছিল, নিষিদ্ধ ডিম থেকে গোপন উৎরাই ও তোমার মৎস-পাখনানিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে সেচে, পুকুরে, বিস্মিত চৌবাচ্চায়। আমাদের উপশিরা বেয়ে স্রোত ছিল তাই তুমি দ্বিধাহীন উঠে এসেছ সাঁতারে ও শিশ্নে, যেহেতু খালাস বক্রচোখে তীর ও উপাখ্যান এবং পোকামাকড়ের ইতিহাস ধুন্দুল ফুল,— ধোঁয়া নিয়ে কাঠের পাটাতনে শোয়া তোমার মৎস-গন্ধা দেহে কাঁটা ও কাঁটাতারসীমাহীন গমন। কর্পূর নিয়ে আগুনে-আগুনে গান বেঁধেছিল গীতাদি, চুলের ফিতে মাছ নিয়ে গেছে, ব্যাঙের মতো লাফ গুনগুন দু'কলি আখতারি বাঈ। তালু চেটে চলে গেছে নভোনীল হত্যা, নিতম্বে উচ্ছাস ও ঢেউ। এখন ফুল-নকশার জাজিমে কলকাকলি, সমাবেশ, ভাঙামুখআমাদের পুন্যিপুকুর ও যমপুকুর আর অনাবিল চোখ ও তোমার গতি মৎস-রমণী, শোকাহত খাবি শুধু, আয়না-মহল খাবি, পলায়নপর খাবি খাওয়া। শুনসান বুদবুদ বাঁশি বাজে বনে এবং আঁধারে ও অনুর্বর ঘাসেবাদামি রৌদ্রে।

বল্লরী সেন, দশম সংখ্যা

সীতা হেমব্রমের কবিতা

বল্লরী সেন

 

কৃষ্ণা রজকিনী

 

পাতাঝরা বাতাস কাঁকই

দুপুর তাতানো এই  হাঁড়ি, ভীমদহ পেরোলে দেবদাসী

দু’‌‌বেণীতে ঝালর লাগানো, ওলাবিবির থানে একদিন

লম্বাপাড় নোয়ান ফেলেছি কত। যতবার বুকের মাঝখান দিয়ে গেছে

ছুঁচের ডগার চোখে নাবাল পূর্ণিমা, জোয়ান মরদ রইবে এক। অক্ষত

 

যতক্ষণ অনন্তনাগ, ততক্ষণ দোলাই চেপে আছি ঘুম গায়ে

বুঝে নিই কামড় পেতে রাখা এই টইটুপুর ষড়যন্ত্র নাভি, ধ্বস নামে

যতবার অম্বুরি তামাক ফিরে আসে, ব্যামো সেরে আবার গজাবে এই

মাত্‌লা শরীর, হ্যাজাকের মন্ত্র পড়া ছায়ার গেরাস

 

প্রতিদিন স্বরবর্ণে হাত রাখি

ভুলে যাই পুরুষাঙ্গ কিলবিলে কাপড়ে চোপড়ে

বিকেল পালিয়ে আসি পুরনো তহবিল, জানুকবলিত সুখ

উল্টে নিই সোঁদা গন্ধ, পাখসাট, ঘামচুর

ধুয়ে ধুয়ে তুলে ফেলি বাবুদের চামড়ার অসমাপ্তরেখা

 

পান্তা

 

লগনতুক কাপাস বনের গোসা হয়েছে বলে আজ অরন্ধন। এখন গন্তব্য খতম করে আমি ও সেই মেয়েটি ভুট্টার বাগানে নেমেছি। ওর কাঁধের হাড় ঠিক ঘুড়ির লাটাইয়ে টান মেরে বাপের সাদা পাতের স্মৃতি ফেরাবেই, অস্তরুটির মতো তেকোণা খামচ-লাগা ওর কপালের পাশ, গালের হনু। আর ঠা ঠা কপালে ফাটা বরাতের দাগ, শেষবর্ষার পর যেন লালচে গ্রহ দেখা দিচ্ছে অমলতাসের রোমশ কুণ্ডলীর চরায়। আজ দু মাস হল, ভাতারবাড়ি তুক্করেছে সতীন। সতীনপো-এর চোখ নেচে উঠছে ইতিউতি বাতায়,

চিলতে কার্তিকের রোদ্দুরে ঠাকুর গড়ছে ঝালুক নদীর তেচোকা মেয়েরা।

আটকুঁড়ির গর্ভ হোক্, গৃহস্থের খোকা

বুড়ি তার সুতো কাটে আর বলে, “পানসি রঙের পাতে

কাটুম কুটুম রোজ আসুক তাথে”।

 

পাড় বোনা কাপড়ের গায়ে আমার মায়ের হস্তলিপি

একটু করে কুঁদে তুলেছে চামড়ার এক গজ খুঁচিয়ে

— বাবুরা দেখল, জ্যান্ত লাশগুলোর কতটা মেয়ে

আর কতটা চিৎকার, মরে মরে ও বেঁচে আছে কিনা

 

লাল মিয়া ও হাওরের গল্প

 

লাল ফুলের ঝুরি নামছে জলের দিকে তাকিয়ে

দহের হিজল গাছের বাকল তেমনি খরা

আখখুটে হাওরের মেঘ নেমেছে কাজিয়ায়

সুর্মা চুঁইয়ে নামছে পপি বাগানের ক্রোধ

 

বিটিয়ার বে দিয়েছো

খবর করবে নি? হ্রদের পারে টিয়ার মুখে

সংবাদ পাঠাও, বোলো আব্বাজানের বুকে পাথর

চড়কসংহিতায়

 

পাকোয়ান পিঠা হলে মনে করবে তাকে

সেই কালো পিচুটি মেয়ে, কোথায় নেয়ে উঠল

আজ? লাল মিয়া হিজল গুঁড়ির গায়ে চোখ মুছে

বাকি অশ্রু গোস্তের পুরে লুকিয়ে নেন

 

সারস আর ডাহুকের ছায়ায় ভুল হয়

কাশের বনে ঐ বুঝি উমা এল, ধবল গাইয়ের

দুধ পলা করে তুলে রাখেন, গোসল করেন না

Saturday, October 17, 2020

নাসিম বুলবুল, দশম সংখ্যা

নাসিম বুলবুল-এর কবিতা


আত্মদ্রোহ ও কৃষ্ণকলি সংবেদন

 

৪.

কৃষ্ণকলি আদ্যন্তই একটা অপার রহস্য

গোপন আবর্তনে তার সবকিছু পড়ে ফেললে

একটা তত্ত্বাবধায়ক আবরক বাঁক টেনে টেনে

সচরাচর অনবহিত রহস্যে পরম্পরা মুছে নিয়ে যায়...

 

নিঃশ্বাসটুকু কেবল আশ্রয় হয়ে

অথবা আশ্রয়টুকুকেই একমাত্র ভেতর বার বলে

গল্পের ছলের মতো দয়িত ইঙ্গিত দেয়

 

আমরা এই মধ্যবর্তী সংবাদকে স্থির বলে ধরি

নিঃশ্বাসটুকুকেই আপাত আশ্রয় বলে বাঁচি...

 

৫.

নশ্বর থেকে হারিয়ে যাওয়া বহিত লাশের মতো

জলভারে আর্তনাদকে বলা হয় অনেক সহজ

অথচ যারা মাটিতে মিশতে না পেরে

কফিন কিংবা মমিতে আটকে যাচ্ছে

 

তাদেরকে কি বলবে?

শান্তিতে কবরে থাকো বলতে পারবে?

 

মরার পরও নির্দেশ মতো মধ্যস্থতাকারী আসে

কেবল অল্প সংখ্যকই পারে ইল্লিয়নে যেতে

বাকিরা লহুতে মিশে নেয় অনন্ত আগুন!

 

৬.

মায়াবী ছায়ার পরাদৃশ্যের কাছে আমরা

চিরকাল গ্যাট হয়ে পড়ে থাকতে ভালোবাসি,

ভ্রষ্ট ভুলে একটু ছায়া পেতে চাইব্যস্ এটুকু'

 

বিষাদ এসে যদি কাঠঠোকরার মতো

ভিতরটুকু খেতে চেয়ে তীক্ষ্ম ঠোকরও দেয়,

জানব বিষাদদেরও নিজস্ব স্বরলিপি থাকে

 

খেই না হারালেঅবিরত সংকেত পেতে থাকি...

 

৭.

মুহূর্ত সুখে নক্ষত্রমণ্ডলী জলছবি আঁকে

কৃষ্ণকলি যখন আসার অপেক্ষায় থেকে থেকে

বেখেয়ালে আপন মনে হেসে ওঠে,

আমি তুমি পাতলা বাঁকা চাঁদ হতে চেয়ে

মায়াজন্মের লনে দাঁড়িয়ে থাকি

 

উদাসীন হাসি নিয়ে

অসুন্দর অলসদুপুর বিচারের কাছে বসে থাকি

 

চাঁদ কতটা জল টানে, মাপব বলে!

 

৮.

রাষ্ট্রীয় ডাকে অযথা প্রেম ঢেউ খেলে যায়

আর ঠোঁট আওড়ে মিউমিউ করে উঠি

 

একটা গভীর ঘুম যেমন

পড়শি রাত্রিকে ঢেকে দিতে পারে না,

ঠিক একই শূন্যতায় দীর্ঘ আলাপও বোঝা যায় না,

 

আমরা সে লিপিবদ্ধ জীবনকে

দৃষ্টান্তের রহস্যের স্তরে স্তরে

ভাবী মহাকালের আয়না দেখিয়ে চলি...

 

অতল সুরের কাছে ভাগ্যলিপিরা দৃশ্যতই দিশেহারা!

 

৯.

আত্মদ্রোহ আসলে ধূর্ত শিয়ালের মতোই

বুদ্ধির তারিফে তাকে মানতেই হয়

গ্রন্থি গ্রন্থি জুড়ে যে রশ্মি মহাশূন্য গড়ে

সে মায়াবী জলসা পুরোপুরিই রহস্যময়।

 

হতে পারে এ ইশকের আগুন ভুল

তবুও ভুলে গেলে চলে না

অন্ধকারের ব্যথা কিন্তু অন্ধজনই জানে।

 

১০.

কৃষ্ণকলিকে গভীর রাতে দেখতে চেয়ে

সময়ে অসময়ে অতীতকাতর মন কেঁদে ওঠে,

নিবিড় অন্ধকারের ভিতর থেকে যে

প্রতিবার একাক্ষরে বেঁচে ফেরা যায় না,

হাজার হলেও তা মন মানতে চায় না।

 

আলোর ভিতর যে অন্ধকার জীবন বন্দি হয়

তাকে কিন্তু মৃত্যু স্পর্শ করে না,

 

তাতে শুধু আকাঙ্ক্ষার বিষ ঢেলে দেয়।

 

১১.

ধমনীর নীচে শুয়ে থাকে ইচ্ছেসুখেরা

তাদের দুটো মুখ

একটা গোপন এবং নিশ্চল

অন্যটা খোলামেলা কিন্তু পরিস্থিতি বিচক্ষণ

 

কলবের খাঁচা থেকে পাখি উড়ে গেলে

হাজার হোক বা অযুত হোক

সে কিন্তু আর ঘরে ফিরে আসে না!

শ্যামাশ্রী মুখার্জী, দশম সংখ্যা

শ্যামাশ্রী মুখার্জী-এর কবিতা


বিলাপ

 

ক্যাথিড্রাল প্রাচীর ভেঙে সন্ধ্যা নামে

নিশ্চুপ মন খারাপ ঠেস দেয় ওম

 

মন্দাক্রান্তা স্রোতে সঙ্গীহীন রাত

ডুকরে ডুকরে ফেরে রোহিণীজাতক

 

নেশাতুর মোহিনী-বৈভব

 

 

ফল্গু

 

তোমাকে বলা হয়নি

প্রতিরাতে...

দূরভাষ মাপা তোমার এই বিচ্ছেদ বিলাপ

কতটা রক্তাক্ত করে আমাকে

 

আউল-বাউল আমি

ম্যামোগ্রাম করি রক্ত-মাংস-মজ্জা

কনসোল ফিউনের নিয়নবাতি

 

ফিরে যাই পাঁচ-পাঁচ বছর আগের

রাতচোরা ডানার খোঁজে

 

বোধের আঁচলা বেয়ে চুঁইয়ে-চুঁইয়ে পড়ে

বেআব্রু ক্ষত

দহনে দহনে যা চির-আবহমান

তীব্র ফল্গুধারা

 

 

ইমনমেঘ

 

খোলা রেওয়াজের মতো অপেক্ষারা জমা হয়

অহর্নিশ হেমন্ত জুড়ে ইমনমেঘ

দক্ষিণী বারান্দা ডাকে

অপ্রত্যাশিত কাটা-কুটি

অভিমান দাগ ছুঁয়ে ফেরে অলিপথ

 

পথ খুঁজেছে পথের ক্রান্তরেখা

রুদ্রাক্ষ আহেল বীজমন্ত্র সেতু তার

 

তরঙ্গ প্রবাহে পারাপার মহাকাল

স্বস্তিকা ভট্টাচার্য, দশম সংখ্যা

স্বস্তিকা ভট্টাচার্য-এর কবিতা


যাওয়া-আসা

 

ঘর ভেঙে যাচ্ছে,

খেয়াল করেননি মহিলা।

মাথার ওপর একটা তিন ব্লেডের সিলিং ফ্যান

তার প্রতিটা পাকে যত আওয়াজ,

লোকের যাওয়া আসা'তেও হয়নি।

 

দেওয়ালে টিকটিকি আনাগোনা করে

আরো অনেক কিছু আসে বসে, চলে যায়।

চাকচিক্যহীন ঘরে ঘোরাফেরা করে মানুষ'

থাকার জন্য ফার্নিশড ঘর দরকার।

 


বদল

 

চিৎকার করা, নিজের কথা বলতে চাওয়া মুখ

পুরস্কার পায়, হাততালি কুড়ায়,

দিন শেষে ছায়ার সাথে ছায়াবাজি করে।

গল্পে চরিত্রের নাম বাঁচিয়ে দেয়,

শিরোনামের আকাল পড়লে।

আঙুল নামের ওপর নামতে নামতে

পেরিয়ে চলে যায় মূল্যবান লেখা।

স্রেফ একটা জবরদস্ত নামের অভাবে!

 

অথচ একবার প্রচার করে দাও,

লোকটার বলার ক্ষমতা নেই

তার কথাগুলো লোকে গোগ্রাসে গিলে নেবে।

 


সে

 

একজন মানুষ,

তাকে কিসের সাথে তুলনা করব?

পৃথিবী?

 

ধরা যাক,

পৃথিবী মানে ধর্ম, রাজনীতি, তর্ক

মিছিল, প্রেম যেমন পাশাপাশি হাঁটে

তেমন তার গোপনীয়তা-উন্মুক্ততা।

পৃথিবীর সংজ্ঞা যাই বানাই

তার চোখে ঢুকে আছে,

আস্ত একটা নীল গ্রহ।

 

একটা শরীরে দুটো মন বসে আছে।

যদি তাকে পৃথিবী ভাবি,

তার এক চোখ ভোরের আজান পড়লে,

আরেক চোখ গীতায় ডুবতে ভালোবাসে।