লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Wednesday, January 20, 2021

অমিত পাটোয়ারী, ১৪

অমিত পাটোয়ারীর কবিতা


স্থানীয় সংবাদ

 

আকাশবাণী কলকাতা

উড়ে বেড়াচ্ছিকুসুমকুমারী দাশ।

 

খুঁড়ে নেওয়া বেআইনী বালির ওপর ভালোবাসা

স্থাপন করছে দুটো নেড়ি,

প্রোমোটারের বর্ষাতি থেকে টুপটুপ করে ঝরে পড়ছে

মারীচ সংবাদ,

তুলসীতলায় হিসু করে গ্যাছে

ছায়াছবির পেলব ডাইনি।

মগরাহাটের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে দুইজন দাঁড়া-কবির

অপমৃত্যু। একজন গুরুতর জখম

রাজ্যের সংস্কৃতি মন্ত্রী রাতারাতি কুমির হয়ে গ্যাছেন।

 

গত দশ বছরে দেশে তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি

অনুমান, আগামী দশ বছরও

জয়সলমীর পদ্মশ্রী পাবে।

মাঝ-সমুদ্রের মাঝিদের গান গাওয়ার ব্যাপারে

সাবধান করা হচ্ছে

 

নকল ডানার পরিষেবা এখন এ পর্যন্তই

পরবর্তী ট্রাম চলবে একটু পরেই

 

দুস্মন্ত আসলে

 

দুস্মন্ত আসলে একজন পার্ভার্ট

 

তুমি ভেড়ির পাশে এসে বসলে

অঙ্ক কষে প্রমাণ করে দিলাম

সরস্বতী

হাত তুলেছিলেন কবির মাথা থেকে

 

সামান্য পুঁটিমাছ নিয়ে চলে যাচ্ছো।

যে তোমাকে বিয়ে করলো না,

বছর পাঁচেক পরেও স্ত্রী-সন্তানসহ এসে

সে বলবে একই কথা

 

সরস্বতী

হাত তুলেছিলেন কবির মাথা থেকে

কারণ

দুস্মন্ত আসলে একজন পার্ভার্ট

 

৮ই মে-এর লেখা

 

রাত্রিবেলা কবিতা লিখি বলে নাহিদের কথা

আমি কিছুই লিখি না

ভোরবেলা ব্রাশ করি না

লিখব!

ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠলে, সবকিছু ধুয়েটুয়ে

আমি লিখতাম,

চোখ বুজিস না নাহিদ, চোখ খুলে গা

কান থেকে সরিয়ে নে হাত

নাগাসাকির পর ভগবান মরে গিয়েছেন

আর নন্দীগ্রামের পর রবীন্দ্রনাথ।

 

নাহিদের গেঁড়ে বাচ্চাটাকে

একটা চব্বিশ-কালার অয়েল প্যাস্টেল কিনে দিয়েছি

ওর জন্মদিন আটই মে

কখনো পঁচিশে বৈশাখ পড়ে, কখনো পড়ে না।

সোনালী শর্মা, ১৪

সোনালী শর্মার কবিতা

 

কবিতা তোমাকে

 

()

এই দিনলিপির ভেতর হাঁটতে-হাঁটতে,

নিজেকে বড্ড ক্লান্ত লাগে, নাগকেশরের কাছে।

 

উঠোনে এখন রোদ পড়ছে ত্রিকোণ ভাবে।

তুমি এখন যতদূরেই যাও

 

তোমার গলার স্বর,

ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হতে থাকে...

 

ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হতে থাকে বর্ষার গান।

 

()

দিনগুলি ক্রমশ ডুবে গেলে এভাবেই

সূর্যের অনিয়মে রাত বেঁচে ওঠে

 

সমুদ্রস্নানে, তোমার পায়ের দাগে ছেয়ে গেছে

 

বালিস্তর...

তোমার আমার দূরত্ব পর্যন্ত!

 

অতএব,

অন্ধকারও গুটিয়ে নেয় নিজেকে, শুরু হয়

শামুকের দীর্ঘ চলাচল!

 

()

ভাঙছে কত দিন, পুড়ছে অজস্র কবিতা

তোমাকে দিতে পারিনি কিছুই!

 

এই অভ্যাসে জল মুছতে গিয়ে,

কখন বেলফুলও হয়ে যাচ্ছে মালা।

 

এখন কিছু শব্দ দিয়ে বিনম্র ফুল ফুটিয়ে ফুটিয়ে রাখলাম।

দেবো কোনো একদিন

 

                    কবিতা তোমাকে!

                  

 

()

একই ভাবে শুয়ে আছে ঘাসজমি

আর রাস্তাময় পাথরে ক্রমশ...

 

বাতিস্তম্ভ হয়ে যাচ্ছো তুমি!

 

কোনো এক দুপুরে,

মোম গলিয়ে বাতির সফল কায়দায়।

 

 

সাধারণ মানচিত্র বিন্যাসে মাথা রেখে,

পথে-পথে রাস্তা ভেসে যায়।

 

তারাময় তোমার চোখে শ্লোকগাথা হয়ে,

এখন ভিজে যাচ্ছি প্রায়;

 

আর দূরের কোনো গল্পে মিলিয়ে যাচ্ছে জলদক্ষয়...

 

 

()

তুমি খুব গোপনে লুকোনো

একটি বাক্স বন্দী নদী।

 

আর নদী বন্দি কয়েকটি শব্দে!

 

তবুও কয়েকটি ব্যবধানে আমরা সমুদ্রের

খুব কাছাকাছি ছিলাম।

 

()

সূক্ষ্ম নম্রতায় এই বাষ্প ভরা মেঘ পাঠালাম

তোমার নামে।

 

কিঞ্চিৎ, ফুটোফাটা হলুদ রঙের খামে।

সেই মেঘের জল কি বৃষ্টি হয়ে ঝরেছিল কোনোদিন?

 

সিক্ত হয়েছিল কি ওই হৃদয়ের ডালপালা?

 

-কাব্যিক সেতু ঘুরে,

দীর্ঘ স্তব্ধতার পরেও পেলাম না কোনো মন্তব্য...

 

()

তোমাকে যতই ছুঁতে যাচ্ছি

ততই দূরত্ব বাড়ছে!

 

ভুলে যাচ্ছি,

আমার সামনে তোমার প্রতিবিম্ব।

 

স্বচ্ছ অথচ বিপরীতধর্মী অক্ষাংশের মতো।

 

()

সরলরৈখিক আবর্তনে ভেসে যাচ্ছে কয়েক টুকরো রাত।

তুমি দাঁড়িয়ে আছো এলোমেলো চুলে,

 

ফেলে গেছ শেষ প্রহরে অবাঞ্ছিত

যোগাযোগ।

 

এখন ফাটলে শ্যাওলা হয়ে বেঁচে, ভেসে থাকায় ভালো।

 

 ভেসে থাকায় ভালো, অজস্র জলের ভেতরে

 বাষ্পীভূত জল হয়ে...

 

()

আমি বলছি না তুমি প্রেমের প্রতীক!

এমনই মূর্খতা আসে

 

 ঋতুর সমাহারে, বারে বারে

 ভেঙ্গে পড়ে দুরন্ত স্ফটিক।

 

(১০)

বার্ষিক গতির কোনো অপূর্ণতার দিনে বারবার রাতের এই বালিশ জুড়ে,

 

একবার তোমাকে ভাবতে গিয়ে দেখি,

কালপুরুষের দিকে তাকিয়ে আছি আমি।

 

আলুথালু স্বভাবে স্বভাবসিদ্ধ তোমাকে

জেনেছি,

 

তুমি দ্বিতীয় পুরুষ!

 

(১১)

সময়ের পতন ঘটে না কিছুতেই!

যা ঘটার ঘটে পতনের সময়...

Sunday, November 29, 2020

অমিত পাটোয়ারী, ১৩

অমিত পাটোয়ারী’র কবিতা

কৃত্তিস্খলন

 

শো-কেসে একটা বাঘ

মুঠিতে একটা বাঘ

                        ঝাল মিটিয়ে নিস্তেজ

                        রিটেল ছেলের রাগ

রাগের বাবা-মা বুঁদ

আঠায় আঠায় বুঁদ

                        রাগের খোসা পালিয়েছে

                        তাই প্রয়োজন নিজ খুঁদ

কুড়ায় মেয়ের বর

নতুন নতুন বর

                        রিটেল চাইছে অন্য ছেলে

                        ছড়িয়ে পড়ছে ঘর

 

ছড়াচ্ছে ঘর, ছড়াচ্ছে ঘর

ছড়াচ্ছে ঘর, ছড়াচ্ছে

                         এক কোণে শোয়া চারপেয়েটার

                         কাম-ক্রোধ বেড়ে যাচ্ছে

অর্পিতা আদক, ১৩

অর্পিতা আদকে’র কবিতা

রোধক

 

শুধু একটা সত্যের ভেজা নিঃশ্বাস,

বুকের বালুতে হাতড়ে খুঁজি।

চোরাবালির দগদগে ক্ষত মলমের মতো গায়ে লেগে থাকে।

আর মরুভূমি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে খাঁ খাঁ রোদে।

কথা বলা নিঃশ্বাসগুলোর মোক্ষম মোচড়ে পেঁচিয়ে যায় বুকের হাপরগুলো।

তবু হাঁটি।

এক পা, দু পা।

সত্যের জীবাশ্মে পা পিছলে যায়,

মেরুদণ্ডে গভীর চিড় ধরে যায়।

মিথ্যার জিহ্বা লকলক করে হামলা চালায়।

আর গলার আল জিভে আটকে থাকে সত্য।

তবু বেঁচে থাকে সত্য শেষ অবলোকনে,

রক্তের অণুতে, জীবাশ্মের মজ্জায়।

হৃদপিন্ডের দেয়ালে আঠার মতো লেপ্টে থাকে মিথ্যে।

রক্তে সর পড়তে থাকে ঠিক যেমন দুধে হয়।

মিথ্যার শিরশিরানি আর উস্কানিতে যেন সারা শরীরে মাদকতা।

বেঁচে থাকি, দম নিই, এগোই।

একদিন দেখি,

নেশাতুর এক ঘুম ঘুম ভোরে জানলার গরাদে আটকে আছে সাদা চাঁদ, চুঁইয়ে পড়ছে সাদা রক্ত।

টেনে ঢুকিয়ে আনি চাঁদটাকে ঘরের সিলিং-এ,

মশারির চালে ছড়িয়ে দিই গুঁড়ো গুঁড়ো করে।

দিনযাপন করি অমোঘ সত্যের টুকরো টুকরো ইশারায়।

আর মিথ্যা হারায় মিথ্যার অবমাননায়।