সোনালী শর্মার কবিতা
কবিতা তোমাকে
(১)
এই দিনলিপির ভেতর হাঁটতে-হাঁটতে,
নিজেকে বড্ড ক্লান্ত লাগে, নাগকেশরের কাছে।
উঠোনে এখন রোদ পড়ছে ত্রিকোণ ভাবে।
তুমি এখন যতদূরেই যাও―
তোমার গলার স্বর,
ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হতে থাকে...
ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হতে থাকে এ বর্ষার গান।
(২)
দিনগুলি ক্রমশ ডুবে গেলে এভাবেই
সূর্যের অনিয়মে রাত বেঁচে ওঠে―
সমুদ্রস্নানে, তোমার পায়ের দাগে ছেয়ে গেছে
বালিস্তর...
তোমার আমার দূরত্ব পর্যন্ত!
অতএব,
অন্ধকারও গুটিয়ে নেয় নিজেকে, শুরু হয়
শামুকের দীর্ঘ চলাচল!
(৩)
ভাঙছে কত দিন, পুড়ছে অজস্র কবিতা।
তোমাকে দিতে পারিনি কিছুই!
এই অভ্যাসে জল মুছতে গিয়ে,
কখন বেলফুলও হয়ে যাচ্ছে মালা।
এখন কিছু শব্দ দিয়ে বিনম্র ফুল ফুটিয়ে ফুটিয়ে রাখলাম।
দেবো কোনো একদিন―
কবিতা তোমাকে!
(৪)
একই ভাবে শুয়ে আছে ঘাসজমি
আর রাস্তাময় পাথরে ক্রমশ...
বাতিস্তম্ভ হয়ে যাচ্ছো তুমি!
কোনো এক দুপুরে,
মোম গলিয়ে বাতির সফল কায়দায়।
সাধারণ মানচিত্র বিন্যাসে মাথা রেখে,
পথে-পথে রাস্তা ভেসে যায়।
তারাময় তোমার চোখে শ্লোকগাথা হয়ে,
এখন ভিজে যাচ্ছি প্রায়;
আর দূরের কোনো গল্পে মিলিয়ে যাচ্ছে জলদক্ষয়...
(৫)
তুমি খুব গোপনে লুকোনো
একটি বাক্স বন্দী নদী।
আর নদী বন্দি কয়েকটি শব্দে!
তবুও কয়েকটি ব্যবধানে আমরা সমুদ্রের
খুব কাছাকাছি ছিলাম।
(৬)
সূক্ষ্ম নম্রতায় এই বাষ্প ভরা মেঘ পাঠালাম
তোমার নামে।
কিঞ্চিৎ, ফুটোফাটা হলুদ রঙের খামে।
সেই মেঘের জল কি বৃষ্টি হয়ে ঝরেছিল কোনোদিন?
সিক্ত হয়েছিল কি ওই হৃদয়ের ডালপালা?
অ-কাব্যিক সেতু ঘুরে,
দীর্ঘ স্তব্ধতার পরেও পেলাম না কোনো মন্তব্য...
(৭)
তোমাকে যতই ছুঁতে যাচ্ছি
ততই দূরত্ব বাড়ছে!
ভুলে যাচ্ছি,
আমার সামনে তোমার প্রতিবিম্ব।
স্বচ্ছ অথচ বিপরীতধর্মী অক্ষাংশের মতো।
(৮)
সরলরৈখিক আবর্তনে ভেসে যাচ্ছে কয়েক টুকরো রাত।
তুমি দাঁড়িয়ে আছো এলোমেলো চুলে,
ফেলে গেছ শেষ প্রহরে অবাঞ্ছিত
যোগাযোগ।
এখন ফাটলে শ্যাওলা হয়ে বেঁচে, ভেসে থাকায় ভালো।
ভেসে থাকায় ভালো, অজস্র জলের ভেতরে
বাষ্পীভূত জল হয়ে...
(৯)
আমি বলছি না তুমি প্রেমের প্রতীক!
এমনই মূর্খতা আসে
ঋতুর সমাহারে, বারে বারে
ভেঙ্গে পড়ে দুরন্ত স্ফটিক।
(১০)
বার্ষিক গতির কোনো অপূর্ণতার দিনে বারবার রাতের এই বালিশ জুড়ে,
একবার তোমাকে ভাবতে গিয়ে দেখি,
কালপুরুষের দিকে তাকিয়ে আছি আমি।
আলুথালু স্বভাবে স্বভাবসিদ্ধ তোমাকে
জেনেছি,
তুমি দ্বিতীয় পুরুষ!
(১১)
এ সময়ের পতন ঘটে না কিছুতেই!
যা ঘটার ঘটে পতনের সময়...
No comments:
Post a Comment