লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Sunday, July 26, 2020

সংযুক্তা পাল

সংযুক্তা পালের কবিতা

সাম্প্রতিক আমেরিকায় ঘটে যাওয়া জর্জ ফ্লয়েড এর মৃত্যু! মৃত্যুর ধরণ যে স্নায়বিক চাপ সৃষ্টি করে এবং স্বভাবতই কোনো ঘটনা মস্তিষ্কের শিকড়ে টান মারতে বাধ্য করে।
ইতিহাস ঘাঁটার বদ-অভ্যেস মাথাচারা দিয়ে ওঠে, সেরকমই এক ইতিহাস ক্ষত আরও বাড়িয়ে তোলে যেখানে ১৯৩০ এর ৭ই অগাষ্ট ইন্ডিয়ানাতে দুজনকে পিটিয়ে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় গাছ থেকে-ঐ দুই ব্যক্তি হলেন টমাস শিপ এবং এব্রাম স্মিথ।কালো মানুষের ওপর অত্যাচার ও হত্যার প্রতিবাদে রচিত হয় 'স্ট্রেঞ্জ ফ্রুট', 'বিটার ফ্রুট' এর মতো বহু গান ও কবিতা।
 সমসাময়িক জর্জ ফ্লয়েড এর 'I can't breathe' উচ্চারণ প্রবলভাবে বাধ্য করে লিখতে এবং ভাবতে সৃষ্টির আদিমতম দিনে পৃথিবীতে মানুষ বলতে ঠিক কী বোঝাতো?

'রং' এর নীচে...

কি আশ্চর্য!
 ঝুলন্ত মানুষের পায়ের নীচে
আঠার মতো রক্ত শুঁকে যায়
                      মনুষ্যেতর...

মানুষ ছবি তোলে।
কালো চুলে ঢাকা মাথার নীচে
সাদা ফেভিকল ঘিলু চাই

রক্তের রং হঠাৎ বদলে সাদা হলে
আরও ভালো তাই

গাঢ় লাল অন্ধকারে বড় বেশি
                     কালো মনে হয়।

বুলেটে নাভির ক্ষত
স্টেনগান এ চোখ

জ্ঞানবৃক্ষ কিভাবে যেন হাঁটুর নীচে বন্দি করে
                     নিশ্বাসের শোক;

কঠিন ভীষণ হৃদয় মেরামত...

পচা-গলা শষ্যের নীচে আদিম মানুষের আখ্যান ফসিলে হাত দিলে, সৃষ্টির কূপে নিজেদের
                      ব্যাঙ মনে হয়।

জানতেই পারিনিজীবন্ত মানুষের... ঝুলন্ত মানুষের রক্ত মৃত্যুর পরেও কি করে
              এত লাল দেখায়!


Sunday, July 19, 2020

সম্পাদকীয় ২

                                  সম্পাদকীয়

 

চাঁদপাগল এক উন্মাদের শপথ ঘনত্বের অস্তিত্ব পেরিয়ে কনফেস দেয় একটি হত্যার দৃশ্য। চশমা চিরন্তন নয়, সময় অরাজনৈতিক! তো হাসির কথাই হচ্ছিল! ভাঙনের পর প্রতীক্ষা দীর্ঘতর হলে...সাংসারিক এলিজি অনন্য স্বর্ণবেলচা প্রার্থনা করে! কৃষক ও সরস্বতী খাণ্ডবপ্রস্থে নিষিদ্ধ সামুদ্রিক পানের পর ফিরে আসে কাঁটাতারের জ্যোৎস্নায়...

 

                              শিল্পী : প্রতাপ মণ্ডল

 

বিঃদ্রঃ শনি-মঙ্গলের বার-ব্রত নেই, কবিতা হয়ে ওঠাতেই প্রকাশ আর আমাদের কাজের সময়টুকু।

                                                             শুভেচ্ছান্তে

                                                                   ছায়ারোদ


আফজল আলি

আফজল আলি’র কবিতা

একটি হত্যার দৃশ্য


যেমনটা ভাবা হয়েছিল

একটি হত্যার দৃশ্য

এবং একটি বিড়ালের চোখ

এটা ছিল সেই স্বপ্ন

কথা বলতে বলতে একজন

সিংহের রূপ ধারণ করল

না, এগুলো কবিতা বলে ভ্রম করো না

দক্ষিণ দিক আচ্ছন্ন

পুরানো বিস্কুট বিক্রেতা এখন

এত পড়াশোনা করে কীভাবে

এত পরাধীন থাকো

জীবন এমনটাই

তোমাকে বেঁধে রাখতে চায়

ধ্বংস করতে চায়

অনেক দিনের বিকেল

ঝুলে আছে কাঁধে

এখন মনকেমন- বিশ্বস্ত সৈনিক

 

ঘনত্বের অস্তিত্ব


পকেটে প্রত্যাঘাত রেখো না

ঘুম প্রচন্ড তাৎক্ষণিক

কে যেন ডাকে হিসেব বরাবর

যুক্তিতে মিশে আছে কিছুটা ফাটল

মনের প্রান্তে মন খুঁজে নেয় ঠিক

এত অসাধারণ তুমি

যেন নিমিত্ত এসে দাঁড়িয়েছে সমতলের উপর

কয়েকটা লাইন এভাবে বেঁকে যাওয়ার পর

শোক হল পরিপূর্ণ

আঁধার রাতে বড়ো বেশি গান গেয়েছিলে

ঘনত্বের অস্তিত্ব প্রমাণ দিয়েছ কি

একটা সাধারণ বাক্যের ভিতর একটা পান্থশালা

একটা ইমারত গড়ে ওঠে মনের উপর

সেই আমি স্বাধীন হয়েছি

তোমরাও পরাধীন থেকো না

খুলে বলো মনের কথা, ভয়ে থেকো না

 

চশমা চিরন্তন নয়

 

নীরবতা ভেঙে বাদাম খাচ্ছো

দেখছে পাখিরা নয়, দরজার চোখ

যে তোমাকে মারতে চাইছে

তার হাতেই কোদালের কোপ

ঘনত্ব কমিয়েছে ফ্রিজের জল

না জানি অনুমান এসে নিদ্রা যাচ্ছে

কাচ কাটে নিশাচর ফল

রাত্রি তোমাকে বলে - ঘুরে কি দেখেছো

জখম দিয়েছে যারা

তাদেরও ঘিরেছে তীব্র শোক

শুধু ছিল সময়ের অপেক্ষা

কথা জানতেও পারেনি ওরা

সহজ স্বপ্নে অস্তিত্ব কেড়েছে

এমনই স্থাপত্য ছিল বিশ্বাস

চশমা চিরন্তন নয়

জেনো শব্দে জেগে ওঠে তাপ


প্রসূন কুমার মণ্ডল

প্রসূন কুমার মণ্ডলে’র কবিতা 

কৃষক 

 

ছেড়ে যাওয়া বাড়ির শোক নিয়ে 

নিজেকে জাগিয়ে রাখি গোটা রাত্রি 

 

তারপর, তোমার কিশোরী মুখের মতো ক্ষণস্থায়ী ভোর

যেন বৃক্ষের প্রথম ফল

আমি হাঁফছেড়ে হেসে উঠি, কৃষকের মতো। 

 

  খাণ্ডবপ্রস্থ

 

আর যতটুকু বাকি বখে যেতে, যতটুকু বাকি সর্বনাশ 

যেটুকু পথ সে তো তোমারই ছদ্মবেশ 

 

জেনেও, নিজের সাথেই করি পক্ষপাত

ফিরিয়ে দিই সমস্ত সমর্থের আহ্বান 

 

শুনে রাখো, বিষাদ 

 তোমাকে আলাদা করে রাখলেই

                   এ শরীর খাণ্ডবপ্রস্থ।  

 

 

  সময় 

 

যাওয়া ও আসার মাঝে যে সাঁকো

সেখানে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রিয় অঙ্কের মাস্টারমশাই 

 

চলে যাওয়া যতটা সহজ 

         তার থেকে বেশি কঠিন ফিরে আসা

 

তবুও, তোয়াক্কা না করে চলে যায় যে অবাধ্য ছাত্র 

তার নাম সময়। 

 


তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়

তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়ে'র কবিতা

সামুদ্রিক


তুমি এখন যুবতীর গলায়

শঙ্খের অমূল্য মালা!

সঙ্গমকালে নড়েচড়ে ওঠার অপেক্ষায় থাকো।

 

তোমার দু'হাতে আশ্চর্য বিচ্ছেদ খেলা করে!

যে বিচ্ছেদের লোভেই,

সমুদ্রে নেমে গিয়েছিলে একদিন!

 

নিষিদ্ধ পানের পর


ঘর তো কালির দোয়াত।

সে দোয়াতে ডুবে যায় জীবন কলম।

উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা সুগন্ধে ভেসে থাকে,

তাকে ঘিরে সুরার কারুকাজ...

 

কালির দোয়াত হল ঘর!

যে ঘরের মাটি শুঁকে

 বেদে বলেছিল-

'বাস্তুসাপ আছে বাবু,

এই শেকড় রেখে দিন পশ্চিম দিকে...' 

 

যাচনা


হে বৃক্ষ,

খানিক দুঃখ ভাগ করে নিতে চাই বলে

এই দেখো, ফেলেছি কুঠার!

কোটর দাও,

দাও পাখি...

সন্তান দাও

কিংবা

শ্যামল অভিশাপ...

সন্তান ঘুমানো পাড়ায়

অভিশাপ বয়ে নিয়ে যেতে দাও...

 

বৃক্ষ,

দুঃখ দাও,

দাও ছায়া...

আমার

চাওয়ার ভেতর

পুঁতে দাও আরও একটি চাওয়া।