লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Monday, April 11, 2022

মধুমিতা রায়

মধুমিতা রায়-এর কবিতা


নিমখুন

গ্রীষ্মের প্রখর তাপে প্রিয় ছাতা প্রশ্ন করে ফেরে

কিছুটা ভিতর থেকে রংচটা মন আবছা আলো

ঠাণ্ডা জলস্রোতে ভাসে দেহের শীতল স্পর্শটুকু

ভিজে রুমালের গ্লানিপ নিংড়িয়ে ফেলেছি বেদনায়

 

জং ধরা শিক দেখে প্রাণ আনচান করতে থাকে

ভাঙনের আগে তাই পুনরায় গুছিয়েছে মন

কাপড়ের নীচে জমা বৃত্তকার সরলরেখায়

সময় এখন স্থির, লক্ষ‍্যে যতক্ষণ যায় থাকা!

 

ঘাড় ঘুরে থাকা জেনে আকাশে তাকিয়ে মনে হয়

তেলহীন মাথা জুড়ে ঘিরে আছে দীর্ঘ শামিয়ানা

 

                    ..........

 

দাবানল

 

বিবাদের মাঝে দেখো এখনো উজ্জ্বল টানাপড়া

ফুলের ঘ্রাণের মতো আমাদের প্রতিটি ফাটল

সহজে পুষিয়ে নিতে না পারা যাঁতার চলাচল

 

পিষতে পিষতে সব হারিয়েছি না বলা চাওয়াকে

জমা ছিল সাময়িক বসন্তের পাতাঝরা নিয়ে

এখন লুকানো থাক পরিচিত সব ভালোবাসা

 

বিষদাঁত ভেঙে গেলে ছুটে আসে বিষবাহকেরা

চুপচাপ ঝুলে থাকি পাখির ঠিকানা মনে করে

 

একা থেমে যেতে দেখি, ছায়াবাড়ি এগিয়ে এসেছে

                ............

 

 

গাফিলতি


ডানা গজানোর আগে হাওয়াতে ভাসিয়ে চলা ছিল

অলৌকিক খবরের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো খুঁটিতে

কলম কামড়িয়ে ধরি, কাগজ হারিয়ে দেউলিয়া

মাথার ভিতরে জমা দিনের ঘুমিয়ে থাকা বালি

বৃষ্টির ফোঁটা পেয়ে দলা পাকিয়েছে মণ্ড কাদা

 

ঘুমের অভাব থেকে কপালের একপাশে ব‍্যথা

পেইনকিলার নেই, হাতদুটো এখন অবশ

দোয়াতের রেখাগুলি কখনো আমাকে ধরে চেপে

আর টেনে নিয়ে যায় নামহীন এক সীমানায়

 

এইসব লেখাকে তবু কাঠামো দেওয়ার আগে থেকে

খোলস মোচন করে এক একটি ছাঁচের বিষাদ

 

                    ..........

 

ক্ষণমাত্র

মশারির চারটি দিক বসে থাকে রাতের আলোয়

ভয়হীন চাহনিতে ভাঁজ খুলে ঝুলিয়ে দিয়েছি

ঘুমের চৌকাঠ-পার ভগ্নাংশ অঙ্কের কাছাকাছি

ছেড়ে দেব ভেবে নিয়ে ক্রমশ ডুবিয়ে গভীরতা

 

মাপকাঠি দৃষ্টি জানে কতোটা সত‍্যের অন্ধকার

বালিশের তুলোটুকু পিটিয়ে পিটিয়ে ভরে দেব

তোয়ালের জানা থাকে আশ্রয়ের শেষ প্রয়োজন

কতোটা নিংড়ে নিলে গড়ে উঠবে সোনার গয়না

 

আমাদের চারটি হাত শেষ ভুল নিয়ে জড়োসড়ো

আলোরা বেরিয়ে এলে জায়গা করে নেবে শতফাঁক

                 ..........



খিলান

রামধনু রঙ নিয়ে কনকনে দক্ষিণা বাতাস

আবডালে চুরি করে পাতা ঝরানোর মরশুম

এইসব গতিপথে নেই কোনো থেকে-থাকা, ভুল

 

সুতো গুটিয়েছে যত নিজেকে গোটাই ততটাই

পেঁয়াজের খোলা কেটে হাতের তালুকে ধুয়ে, ভাবি

কতগুলি খোলসের পর থেকে জাগিয়ে তুলবে

চোখের জলের টোপে কপালে জমানো শেষ রেখা

 

ঘরের দেয়ালে চুন এখনো কি অন্ধকারে জেগে?

ঘুমঘোর নিশানায় কত কিমি দূরে আমাদের?

 

পালটানোর ইচ্ছা থেকে জড়োসড়ো আমাদের বাঁচা

দিন বদলের টানে খসে পড়া রঙে সাথী হয়ে

                ..........

No comments:

Post a Comment