লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Monday, April 11, 2022

পারমিতা চক্রবর্ত্তী

পারমিতা চক্রবর্ত্তীর কবিতা

একা

১)

আমাদের কোনো লিগাল অ্যাসোসিয়েশন আর নেই৷ যে ভাবে রাস্তায় বেওয়ারিস লাস পড়ে থাকে ৷ কুকুর গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে চলে যায়৷ আমাদের সম্পর্কটা ঠিক তেমনই৷ কখন যে একটা যতিচিহ্ন বসে গেল বুঝলাম না। গলা ফেটে রক্ত বেরোয়৷ রক্তাক্ত হয়েছে আমাদের ভূমিকাটা৷ এখন বেঁচে থাকাটা খুব দুরারগ্য ব্যধির মতো৷ তার থেকে মৃত্যুই শ্রেয় ৷

 

২)

জানি বহুদিন তুমি আলাদা হয়ে গেছো৷ মিথ্যে বলতে বেশ শিখে গেছ৷ কিন্তু আমি কেন এত ভাবি। তোমার গলা ব্যথা হলে তুমি চা খেতে ঘন ঘন৷ ঘুম থেকে উঠে গাছে জল দিতে দিতে এক কাপ আমার হাতের লিকার চা ছাড়া তোমার দিন শুরু হত না। কে করে দেয় এখন এসব তোমায়৷ জানি সবই অভ্যাস৷ তুমি এখন একা থাকতে শিখে গেছো৷ একা থাকার মধ্যে একটা শৌখিনতা আছে৷ তা বেশ বুঝতে পারি৷ তবে আমি কেন এত ভাবি... কে তোমায় ভাত বেড়ে দেয়, মাথার কাছে জল গড়িয়ে দেয়, চশমাটা ঠিক জায়গায় রেখে দেয়৷ জামা ইস্ত্রি করে দেয়৷ আসলে আমি এখনও সত্যিটা বুঝতে বড় দেরি করে ফেলি৷

 

৩)

আলমারি খুললেই চোখে পড়ে লাল কালো চাদরের কথা। আমরা জয়পুর থেকে কিনেছিলাম৷ গোটা চাদরটাতেই উটের কারুকাজ। আমাদের তখন একটা ইতিহাস কিংবা ভূগোল ছিল৷ দূর থেকে দেখা যেত৷ স্বচ্ছ ছিল সবটাই৷ একটা সময়  মনে হত তারাদের দেশে পৌছতে এক আলোকবর্ষ পথ আমরা হেঁটে যেতে পারব৷ আজ ৬/৬ পথটাকে অচেনা মনে হয়। কিছু ভাবতে গেলে গলার কাছে কী যেন একটা আটকে থাকে৷ খুব অস্বস্তি হয়৷ নিজেকে রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের আবর্জনা মনে হয়৷ কেমন যেন শেষ হয়ে যাচ্ছি। প্রদীপের তেল ফুরিয়ে এল৷

 

8)

খোলা আকাশ দেখলেই তাতে তোমার নাম লিখতে ইচ্ছে করে। মনে হয় উড়ে চলে যাবো হাওযার মতো শক্তিশালী হয়ে৷ ঘরের পিছনে লাউ ডগা গাছটা বেশ বড় হয়েছে৷ ও বাড়ির খুকি গর্ভবতী৷ সে লাউ শাকের ঘন্ট খায়৷ পিছনের তেঁতুল গাছটাও বেশ বড় হয়েছে। মা তেঁতুল দিয়ে বাসন মাজার সময় তোমার কথা খুব বলেন৷ মা' হাতের তেঁতুল মাখা তোমার খুব পছন্দের৷ ভুলে যাওয়াটা খুব সহজ৷ তাই না...

ছাপোষা জীবনে তোমার মতো ভুল করতে আর পারলাম না ৷

No comments:

Post a Comment