লেখা পাঠান আমাদের chayarodpatrika@gmail.com

Saturday, December 14, 2024

আফজল আলির কবিতা, ছায়ারোদ নতুন সংখ্যা

আফজল আলির কবিতা

 

মেধার সূচকে

 

ঘুম বিষয়ক কোনো স্বপ্ন লেখার পর নিশ্চয় আপনি ভাববেন

হাতির পায়ের আকার এত মোটা হল কেন

এ বিষয়ে একটাও সদুত্তর পাবেন না অ্যারিস্টটল বা সক্রেটিসের কাছে

বরং নীৎসে কিছুটা আভাস দিতে পারেন

যখন আপনার লেখা দেশ এ  ছাপা হচ্ছে তখন নিশ্চিত

আপনি নতুন কিছু ভাবতে পারছেন না

অথবা যখন কবিতার অনুষ্ঠানে সরকার উপস্থিত

এই মর্মে ভেবে নিতে হবে

আপনি একটি  সহায়ক ছায়া চাইছেন যা আত্ম বিষয়ক

কিন্তু মেধার সূচকে আপনি রয়ে যাচ্ছেন সেই অধীনস্থ

অধীনস্থ মানেই  বাঁধন-যুক্ত

ফলে

আপনি হাতি বিষয়ক কবিতা লিখতে পারবেন না

আপনি শূন্য ধারণের কবিতা লিখতে পারবেন না

আপনি পারবেন না

নতুন স্বপ্ন দেখার বিজ্ঞাপন দিতে

তাই আপনি সিংহ দেখে চমৎকৃত হবেন

এবং একটি ভেড়া দেখে আজীবন সুন্দর থাকার চেষ্টা করবেন

 

স্মরণযোগ্য অতীত থেকে

 

স্মরণযোগ্য একটি অতীত থেকে তিনটি ফুটবল ছোঁড়া হল

এখন আপনি কোন দলে থাকবেন

সেমিফাইনাল নাকি কোয়ার্টার

অমরত্বের হাতছানির পাল্লায় পড়লে সুখ উড়ে যাবে

এ কথা জেনে নিন

তাহলে একটি সিগারেট ধরাবার পূর্বে কিঞ্চিত দার্শনিক হবার ভান বন্ধ রাখুন

স্পষ্ট করে বলতে পারি আর্থ্রাইটিসে আপনি ভুগছেন না

আপনার জন্য একটি প্রেমের ডাকবাক্স খোলা হয়েছে

এবং নিশ্চিত করেই এটি চাঁদে

চাঁদ এখন আমাদের নিজের মামা, একদম কাছের

সেই স্বর্গ থেকে পল পল অনুভব করেছি

কীভাবে ধান ভানতে শিবের গীত গাইতে হয়

হৃদপিণ্ডে ঝুম ঝুম আওয়াজ হচ্ছে

ও কোকিলা তোকে সুধাই রে, শিরার কোনখানে তুই

মায়াময় অন্ধকারে বসে কপালে ভিক্স লাগানো যাবে কি

এরকম তো চাইনি পরিকল্পনা

তুমি তো মগজে আন্দাজ হাঁকছিলে চাঙ্গা হবার, আর আমি তখন

 

দেহের স্বপ্নে প্রেমজ

 

মুরগির ডিমের কি কলঙ্ক থাকে, এ কথা ভাবতে গিয়ে

 একটু হেসে ফেললাম

তবে সত্যি যে, খাসির মাংসে ফাইবার থাকে

কতদিন দেখতে চেয়ে দুপুর হয়ে গেছো তুমি

অভয় দিয়ে গেছো রোদ থেকে সানসাইন আর ভিটামিন নিতে

গণিতের মাস্টারমশাই ঢুলছিলেন তখন

ভয়েস কল রেকর্ড করতে বয়স কমিয়ে আনা কোনো ব্যাধি নয়

বুঝেছি, এরপর নিশ্চয় বলবে, আমি তো অবলা সখি—

আরে ধ্যাৎ

সেই ধানাই পানাই

আমাদের কোষের ভিতর ক্রোমোজোম লুকিয়ে থাকে

তা কি জানো

রক্তের টান বড়ো প্রলুব্ধকর হে,  সে ছাড়ে না

ভীষণ কষ্টে বিলিরুবিন অন্বেষণ দেয়, কী বলবে দেহের স্বপ্নে প্রেমজ

 

নিঃসঙ্গতার ক্ষরণ

 

কী যেন লিখতে চাইছিলাম,  একটি দশমিক নাকি

 পাতাঝরার গান

'একা' শব্দের পাশে দশমিক বিন্দু যোগ করলাম

জানি ভিতরে এই যে নিঃসঙ্গতার ক্ষরণ

এর পিছনের জানালাগুলো  চলে গেছে দূরে

বিকেল গড়ালে কীভাবে দখল নেয় হেরে যাওয়া জীবন

যখন অন্যমনস্ক সহজ হয়ে ওঠে

তখনই বুকের ভিতর  গুঁড়ো হয় পুরনো স্মৃতির রেণু

এমনটাই কি চেয়েছিলাম যা ঘটে চলেছে

শূন্যস্থানের কয়েকটা আজগুবি বাজনা

আর পৃথিবীর উপর ধসে পড়া চাঁদের আওয়াজ

ছায়াগুলো ঠান্ডা হয়ে আসে

পাখিরা মেঘ ধরার কাজে ব্যস্ত

এখন মোবাইল কেনার স্বপ্ন দেখে কী করব আমি

 

আগামীকালের হিস্যা

 

খুব বেশি ভালোবাসলে আঘাত পেতে হবে

কথাটায় একটু ফোড়ন দিয়ে দেখি সহজপাচ্য হচ্ছে কিনা

মানে ব্যাপারটা হলো গিয়ে বেশি ভালোবাসা ভালো না

পিরিত যদিও কাঁঠালের আঠা, লাগলে ছাড়ে না

 হয়তো আপনি ভাববেন

গুঁড়ো গুঁড়ো হচ্ছে পরমায়ু কোন সমতল কেটে

 কী হল? এত সিরিয়াস কেন হও

হালকা হালকা থাকো

শুনানির পর যা হবে সে তো আগামীকালের হিস্যা

বুকের ভিতর

বুকের ভিতর

তীব্র ক্ষত চিহ্নের দাগ এখনও মিলিয়ে যায়নি

একটু সুখ খুঁজছিলাম জানো, যেন মালিকানার পূর্বে  ছিলাম

 কেমিস্ট্রি বলতে

সেই ফেলে আসা দিনগুলো যখন রান্না করে খাওয়াতে

যেন এক বৃহত্তর মিলনের পথ চেয়ে